শহীদুল্লাহ কায়সার; কক্সভিউ :
অপূর্ব নির্মাণশৈলী আর মনোরম পরিবেশের অনিন্দ্য সুন্দর রূপ এখন কক্সবাজার শহরের বদর মোকাম জামে মসজিদ। শহরের সুপ্রাচীন এ মসজিদকে গড়ে তোলা হচ্ছে অতি আধুনিক রূপে। প্রাচ্যের ঐতিহ্য আর পাশ্চাত্যের আধুনিকতাকে স্থান দেয়া হচ্ছে নির্মাণ কৌশলে। দেশের প্রখ্যাত স্থপতিরা তাঁদের মেধা, আর মনন দিয়ে তৈরি করেছেন মসজিদটির নকশা। নকশার প্রত্যেক স্তরে তাঁরা গুরুত্ব দিয়েছেন শৈল্পিক সৌন্দর্য্যকে। এনেছেন বৈচিত্র্যতা। ইতোমধ্যে মসজিদটির ভেতরের অংশের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সম্পূর্ণ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ভেতরের কক্ষে মুসল্লিরা অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে নিজেকে বিলীন করে দিতে পারবেন মহান আল্লাহর ধ্যানে। আর যাঁরা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে চান তাঁদের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। মসজিদটির মূল কক্ষে স্থাপন করা হয়েছে শৈল্পিক কারুকার্য সংবলিত কয়েকটি তাক। যেখানে স্থান দেয়া হয়েছে মহাগ্রন্থ আল কোরআনসহ পবিত্র হাদিস, মুসলিম শরীফ, বুখারী শরীফ, তিরমিজি শরীফ। ইসলামি বিশ্বের ইতিহাস ঐতিহ্য জানতে রাখা হয়েছে বিশাল ইসলামি বিশ্বকোষ। যাঁরা আরবিতে পান্ডিত্যপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে চান তাঁদের জন্য রাখা হয়েছে ফিকহ শাস্ত্রের একাধিক মূল্যবান গ্রন্থ। পরিবেশ আর মূল্যবান গ্রন্থের সংমিশ্রণ মসজিদটির মূল কক্ষটিকে পরিণত করেছে ইসলামি জ্ঞান পিপাসুদের তীর্থকেন্দ্রে। এছাড়া ওই কক্ষেই খতিবের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে মনোমুগ্ধকর মিম্বার। স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক শব্দ যন্ত্র।
যার সাহায্যে খতিব প্রত্যেক শুক্রবারসহ গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন। এছাড়া অভ্যন্তরের উপরিভাগে স্থাপিত ঝাড় বাতি মূল কক্ষটিকে এনে দিয়েছে বিশেষ সৌন্দর্য্য। মূল কক্ষের সৌন্দর্য্য ছাড়া মসজিদটির মূল ফটকের কাজ সম্পন্ন হলে সৌন্দর্যপিপাসু যে কোন মানুষ মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না। প্রবেশ পথের চারটি ফটকে দেখানো হয়েছে মহান আল্লাহর ধ্যানে নামাজরত চার ব্যক্তিকে। স্থপতিরা ইসলামি পন্ডিতদের সঙ্গে আলাপ করেই এর পরিকল্পনা করেছেন। এছাড়া নির্মাণ করা হচ্ছে ৯০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট সুদৃশ্য মিনার।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও আনা হয়েছে আধুনিকতা। সিসিটিভির সহায়তায় নজরদারি করা হচ্ছে মসজিদে যাতায়াতকারীদের উপর। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী বদর মোকাম জামে মসজিদে এক সঙ্গে তিন হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে সাড়ে তিন হাজার মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে জানা গেছে।
মসজিদ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ছৈয়দ মোহাম্মদ আলী এবং পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান সাউদ এর নেতৃত্বে জেলার ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদকে দেশের অন্যতম দর্শণীয় স্থান হিসেবে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এখন যার বাস্তবায়ন কাজ চলছে।
You must be logged in to post a comment.