সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / ধর্মীয় / বদলি হজ কী ও কেন?

বদলি হজ কী ও কেন?

https://i0.wp.com/coxview.com/wp-content/uploads/2022/07/Makka.jpg?resize=540%2C320&ssl=1

অনলাইন ডেস্ক :

হজ আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ হলো, সংকল্প করা। আর সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের জন্য জীবনে একবার হজ ফরজ। বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সেতুবন্ধনের উপায় হলো হজ পালন করা। হজ আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ বিধান, হজ ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের একটি।

যদি কোন ব্যক্তির ওপর হজ ফরয ও উমরা ওয়াজিব হয়; কিন্তু সে সশরীরে তা আদায় করতে সক্ষম না হয়, তাহলে তার পক্ষ থেকে দায়িত্ব নিয়ে অন্য কোন ব্যক্তির হজ পালনকে বদলী হজ এবং উমরা আদায়কে বদলী উমরা বলা হয়।

কোনো বক্তির ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর সে যদি হজের সময় পায়, কিন্তু কোনো কারণবশত হজ করতে পারেনি; এরপর এমন ওজর বা প্রতিবন্ধকতা এসে গেল যে তার নিজে গিয়ে হজ করার ক্ষমতা আর রইল না অথবা এমন অসুস্থ হয়ে পড়ল, যা থেকে আর সুস্থ হওয়ার আশা নেই অথবা অন্ধ বা প্রতিবন্ধী হয়ে গেল বা বার্ধক্যের দরুন এমন দুর্বল হয়ে গেল যে এখন তার পক্ষে সফর করা সম্ভব নয়, তখন তার জন্য নিজের পক্ষ থেকে কাউকে পাঠিয়ে বদলি হজ করানো, অথবা মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে তার নামে বদলি হজ করানোর অসিয়ত করা ফরজ।

মনে রাখতে হবে, যে ব্যক্তি বদলি হজ আদায় করবেন, তিনি ইহরামের সময় অবশ্যই যার বদলি হজ আদায় করছেন তার নামেই নিয়ত করতে হবে।

বদলি হজের বিষয়ে ব্যাখ্যা হলো, যে সমস্যার কারণে বদলি হজ করানো হলো, ওই ওজর বা সমস্যা বদলি হজ করানোর পর দূর হয়ে গেলে আবার স্বয়ং তার হজ আদায় করা ফরজ হয়ে যাবে। আর আগের বদলি হজটি তার নফল হয়ে যাবে। (আহকামে হজ : ১১৮)

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত জুহায়না গোত্রের এক নারী প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, আমার মা হজের মানত করেছিলেন, কিন্তু তা আদায় করার আগেই তিনি মারা গেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করবো?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হ্যাঁ’, তার পক্ষ থেকে তুমি হজ করবে। যদি তার কোনো ঋণ থাকে তবে কি তুমি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর ঋণ পরিশোধ কর। কেননা আল্লাহ তাআলাই পাওনা পাওয়ার সর্বাধিক হকদার।’ (বুখারি)

ইবাদত তিন ধরনের— ১) শারীরিক বা কায়িক ইবাদত; যেমন—নামাজ, রোজা ইত্যাদি। এগুলোর উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাঁর আনুগত্যের মধ্যে থাকা। এই ইবাদতে সম্পদ ব্যবহৃত হয় না। ২) আর্থিক ইবাদত; যেমন—জাকাত, সদকা ইত্যাদি। এর উদ্দেশ্য হলো অভাবগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করা। ৩) ওই ইবাদতদ্বয়ের সমষ্টি হলো হজ।

প্রথম ধরনের ইবাদতের মধ্যে (নামাজ, রোজা) অন্যকে ইবাদতের স্থলাভিষিক্ত বানানোর সুযোগ নেই; বরং প্রত্যেকে নিজেরটা পালন করতে হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ধরনের ইবাদতে (আর্থিক ইবাদত) অন্যকে স্থলাভিষিক্ত বানানোর সুযোগ আছে। তাই সম্পদশালীদের জন্য তাদের জাকাত বা সদকা আদায় করার জন্য অন্য কাউকে স্থলাভিষিক্ত বানানো জায়েজ। তৃতীয় ধরনের ইবাদত হজ। এ ইবাদতেও স্থলাভিষিক্ত বানানোর সুযোগ আছে। তাই কেউ যদি হজ করতে অক্ষম হয়, তখন তার জন্য হজ পালনে কাউকে তার স্থলাভিষিক্ত বানানো ওয়াজিব। (কিতাবুল ফিকহ : ১/১১৬৪, মুয়াল্লিমুল হুজ্জাজ : ২৮১)

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের কোরআন-হাদিসের আলোকে বদলি হজের গুরুত্ব ও বিধিবিধান জানার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

চট্টগ্রামের পরিবেশ রক্ষায় শক্তিশালী কমিশন গঠন করার প্রস্তাব -এমএএফ’র সেমিনারে

  প্রেস বিজ্ঞপ্তি : প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আন্দোলন সংগ্রাম ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির চারণভূমি চট্টগ্রাম। নানা কারণে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/