কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার অন্যতম বাণিজ্যিক জনবহুল ষ্টেশন কোটবাজারে অব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা হোটেল গুলোতে চলছে পঁচাবাসি খাবার ও গলাকাঁটা ব্যবসা। উক্ত ষ্টেশনে গড়ে ওঠা ওইসব হোটেল গুলোতে নেই কোন বাথরুম, পানি নিষ্কাশনের কোন সু-ব্যবস্থা। আর ওইসব হোটেলের ময়লাযুক্ত পানি জনচলাচলের রাস্তায় আসায় সাধারণ মানুষদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোটবাজার ষ্টেশনে প্রায় ২৭টির মত বেকারী, কুলিং কর্ণার সহ ছোট বড় খাবারের হোটেল রয়েছে। ওইসব হোটেল গুলোতে নেই কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা। হোটেল মালিকরা কোন প্রকার জনদূর্ভোগের কথা চিন্তা না করে সড়ক ও বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে উক্ত হোটেলগুলোর ময়লাযুক্ত পানি ও আবর্জনা রাস্তায় ফেলে জনগণের সীমাহীন দূর্ভোগ ও ক্ষতিসাধন করে আসলেও যেন দেখার কেউ নেই।
এছাড়াও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রশাসন রয়েছে খামখেয়ালীপনায়। যেন এক অদৃষ্ট হাতের ইশারায় তারা সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করে চলেছে। বিগত এক বছর পূর্বে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উখিয়ার বিভিন্ন ষ্টেশনের হোটেল গুলোতে অভিযান পরিচালনা করলেও এরপর থেকে আর কোন অভিযান পরিচালিত হয়নি। যার ফলে হোটেল মালিকগুলো তাদের অবহেলার সুযোগ নিয়ে বেপরোয়া থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কোটবাজার ষ্টেশনে অবস্থিত হোটেল মালিকরা গড়ে তুলেছে এক শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আর উক্ত সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কোটবাজার ষ্টেশনের প্রভাবশালী হোটেল ব্যবসায়ীরা। এ সিন্ডিকেটকে পূঁজি করে চলছে গলাকাটা বাণিজ্য। তারা কাষ্টমারদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত মূল্য হাকিয়ে নিচ্ছে। যখন দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতি ছিল তখন যে মূল্যে তারা হোটেল খাবার সামগ্রী বিক্রি করত, বর্তমানে দ্রব্যমূল্য কমার পরেও তারা পূর্বের ন্যায় গ্রাহকদের কাছ থেকে চড়া মূল্য হাতিয়ে নিচ্ছে। গ্রাহকেরা অনেক সময় প্রতিবাদ করতে গেলে উক্ত সিন্ডিকেট কর্তৃক নাজেহালের শিকার হতে হয়। কোটবাজারের হোটেলের যে বিষয়টি মানুষকে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে তা হচ্ছে হোটেলের ময়লাযুক্ত পানি। তারা উক্ত পানিগুলো জন চলাচলের রাস্তায় ফেলার ফলে রাস্তা গর্ত হয়ে ড্রেনে পরিণত হচ্ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ প্রধান সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে।
এছাড়াও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উক্ত সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। এ সময় গাড়িগুলো চলাচলের সময় হোটেলগুলোর ফেলা কাদাযুক্ত ময়লা পানিগুলো জনসাধারণের গায়ে ছিটকে পড়ায় অনেককে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। কিন্তু হোটেলের ময়লাযুক্ত পানিগুলো রাস্তায় এসে অপূরনীয় ক্ষতিসাধন করে গেলেও কর্তৃপক্ষ রয়েছে যেন বেখেয়ালী।
প্রশাসনের উদ্যোগে দ্রুত অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে হোটেল মালিকদের গড়ে তুলা সিন্ডিকেট কর্তৃক গলাকাটা বাণিজ্য, পঁচা-বাসি খাবার বিক্রি, যতযত্র ময়লা আবর্জনা ও পানি ফেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান কোটবাজারের সচেতন ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ।
উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছৈয়দ মোহাম্মদ নোমান বলেন, সচেতনতার অভাবে কোটবাজারের হোটেল মালিকগণ দিন দিন পঁচা-বাসি ও ফ্রিজাপকৃত দীর্ঘদিনের মুরগী, গরু ও খাসির মাংস সহ নানা জাতের উৎকৃষ্ট খাদ্যদ্রব্য রান্না করে পরিবেশন করে যাচ্ছে। স্যানিটারী ইন্সপেক্টর এর অবহেলার কারণে ব্যবসায়ীরা অবাধে এ অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নজরদারির অভাবে হোটেল গুলোতে পঁচা-বাসি খাবার খেয়ে সাধারণ জনগণ অসুস্থ্য হয়ে স্বাস্থ্যহানীর মত ঝুঁকি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
You must be logged in to post a comment.