সমকামীদের প্রতীক রংধনু। সমকামীতা বোঝাতে তারা এই প্রতীকটি ব্যবহার করে। কিন্তু আপনি জানেন কি সমকামী বোঝাতে কেন রংধনু ব্যবহার করা হয়? তাহলে জেনে নিন সেই কারণ-
একদল সমকামী ১৯৭৮ সালের ২৫ জুন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে সমকামীদের স্বাধীনতা রক্ষার্থে এক সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানেই গিলবার্ট বেকার নামে এক ভদ্রলোক রংধনুকে সমকামীদের অধিকারের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলেন। বলাবাহুল্য, তিনি নিজেও একজন সমকামী ছিলেন।
অবশ্য মিস্টার বেকার প্রথমে সমকামীদের প্রতীক হিসেবে গোলাপি ত্রিভুজ রাখার চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু ইতিহাসে এই প্রতীকটা অন্যকিছু বোঝায়। গোলাপী ত্রিভুজ বলতে হিটলারের নাৎসী বাহিনীর হাতে ধরা পড়া কয়েদি বুঝাত। যেসব কয়েদিদের নানাভাবে যৌন নির্যাতন করা হতো। তাই তিনি রংধনুকে বেছে বেছে নেন। বেকারের ভাষায়-“আমি আসলে প্রতীক হিসেবে এমন কিছু চাইছিলাম যা প্রকৃতির মাঝেই আছে। কেননা যে যাই বলুক সমকামিতা তো প্রকৃতিরই অংশ।”
অবশ্য প্রতীক হিসেবে এই রংধনুতে রঙ একটু ভিন্ন- গোলাপি, বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। এর বেগুনি রঙের মানে হলো আত্মা, নীলের মানে শিল্প বা মানসিক প্রশান্তি, আসমানি মানে ম্যাজিক বা জাদু, সবুজ মানে প্রকৃতি, হলুদের মানে সূর্য, কমলার অর্থ সুস্বাস্থ্য, লাল মানে জীবন এবং গোলাপি মানে যৌনতা। অনেক সময় আবার গোলাপী ব্যবহৃত হয় না। কেননা মিস্টার বেকার মনে করেন সমকামীতা মানে শুধুই যৌনতা নয়।
সমকামীদের প্রতীক তৈরি করা নিয়ে বেকার বলেন- ‘আমার কাছে এই রংধনু প্রতীক তৈরি করাটা ছিল রীতিমত চ্যালেঞ্জের মতো। একে তো সমকামীদের নিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম সমাবেশ, তার উপরে এই প্রতীকের ব্যাপার-স্যাপার। আমি চাইছিলাম এমন কিছু তৈরি করতে যা সমাজকে মনে করিয়ে দেয় সমকামীরাও মানুষ। ওই সময়টাতে সেটার খুবই দরকার ছিল।’
সমকারীদের কাছে বেকারের প্রতীকটি গ্রহণযোগ্যতা পায় ও সান ফ্রান্সিস্কোর সেই সমাবেশে এই রংধনু পতাকাটি সর্বপ্রথম উত্তোলিত হয়। ২০১৫ সালে এই রংধনু পতাকাটি নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে সংরক্ষিত হয়।
সমকামীদের প্রতীক এ পতাকার আরেকটি নাম হলো LGBT Pride Flag, যেখানে L মানে লেসবিয়ান, G মানে গে, B মানে বাইসেক্সুয়াল এবং T মানে ট্রান্সজেন্ডার। তার মানে এই পতাকা নিছকই সমকামীদের অধিকার নিয়েই কথা বলে না, কথা বলে এলজিবিটি গোত্রের সবার জন্যেই।
সূত্র:deshebideshe.com;ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.