(টমটম চালক-ছিনতাইকারী যোগসাজস)
এম.বেদারুল আলম; কক্সভিউ :
কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহে বেড়েছে অভিনব কায়দায় ছিনতাই। এবার টমটম চালক ও ছিনতাইকারী দল পরিকল্পিতভাবে করছে ছিনতাই। ছিনতাই করতে গিয়ে প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটছে। ছিনতাই থেকে রেহাই যাচ্ছে না পর্যটক থেকে শুরু করে স্থানীয়রাও। শহর ও শহরতলীর অন্তত ১২টি পয়েন্টে হরহামেশায় ঘটছে ছিনতাই। প্রশাসন ছিনতাই ও পর্যটকদের নিরাপত্তা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
জানা যায়, শহর ও শহরতলীর গুরুত্ব পয়েন্টে সম্প্রতি বেড়েছে ছিনতাইকারী ও বখাটেদের দৌরাত্ম্য। গেল ১ সপ্তাহে শহরের ৫/৬টি পয়েন্টে ১০টির মত ছিনতাই এর ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে অপহরণের মত ঘটনাও রয়েছে। উঠতি বয়সী অনেক যুবক ইয়াবার টাকা যোগাড় করতে জড়িয়ে পড়ছে ছিনতাই কাছে।
সবচেয়ে বেশি ছিনতাই এর ঘটনা বেড়েছে শহরের গোল চক্করের মাঠ থেকে কলাতলী পয়েন্টের মধ্যে। এছাড়া বাস টার্মিনাল থেকে বিএডিসির কার্যালয়ের সামনের এলাকায়। ছিনতাই এর ঘটনা বেড়েছে কলাতলীর কটেজ জোন এলাকা, লাইট হাউজ সড়ক, আইবিপি রোড, বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, টেকপাড়া, চৌধুরী ভবনের সামনের খুরুশকুল রাস্তার মাথা সড়কের মাঝের ঘাট ব্রীজ এলাকা, সাহিত্যিকা পল্লী, বৈদ্যঘোনা এলাকা আলীর জাঁহাল, বাস টার্মিনাল এলাকা। কলাতলী ও লাইট হাউজ এলাকায় সক্রিয় রয়েছে একাধিক সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী সক্রিয় গ্রুপ।
কটেজ জোনে পর্যটকদের কাছ থেকে স্বর্বস্ব হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২৯ মার্চ কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকার শিক্ষক জহির উদ্দিন দম্পতির কাছ থেকে সাংস্কৃতিক এলাকা সংলগ্ন কটেজ জোনে চিহ্নিত কয়েকজন ছিনতাইকারী মোবাইল সেট, টাকা হাতিয়ে নেয়। ২ এপ্রিল খুরুশকুল রাস্তার মাথা থেকে পি.এম খালীর ব্যবসায়ী মোস্তাকের ৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। ৬ এপ্রিল খুরুশকুল তেতৈয়া এলাকার টমটম চালক কলিমুল্লাহকে ভাড়া যাওয়ার নাম করে মুখ বেঁধে রামুর ঈদগড়ে নিয়ে মারধর ও মুখ বেঁধে ব্রীজের পাশে ফেলে টমটম নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
এদিকে ছিনতাই এর ধরণ ও পাল্টিয়েছে ছিনতাইকারীরা। টমটম চালক ও ছিনতাইকারীরা কৌশলে যাত্রী বেশে সামনে পিছে বসে অপর যাত্রীদের মাঝখানে বসিয়ে স্বর্বস্ব ছিনিয়ে মারধর করে সটকে পড়ছে। গত বছর শহরের গোলচত্বর মাঠে ভোরে ছিনতাইকালে পুলিশ বাধা প্রদান করলে ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাতে পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর ঘটনার পর পুলিশ তৎপর হলে ছিনতাই কিছুটা কমে আসে।
সম্প্রতি পুলিশের একটু নমনীয় ভূমিকা থাকার কারণে পুনরায় ছিনতাইকারীরা মাথাচড়া দিয়ে উঠছে।
এদিকে গেল কয়েক দিনে দেখা গেছে রাতের শহর বখাটে ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য। বিশেষ করে রাত ১২টার পর উঠতি বয়সী অনেক কিশোর-যুবক বিভিন্ন পয়েন্টে জোট বেঁধে পথচারী ও লোকজনের কাছ থেকে মোবাইল, টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের যুবকরাও ছিনতাইকারীদের সাথে অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে বাড়ছে কিশোর অপরাধ। রাতে যে সময় বাড়িতে অবস্থানের কথা সে সময় শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ছিনতাই করে যাচ্ছে একটি চক্র। ফলে বেড়ে গেছে চুরি-ছিনতাই।
রাত ১২টার পর শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ও কলাতলীর হোটেল মোটেল জোন, কটেজ জোন এলাকায় পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি ছিনতাই প্রবণ এলাকাকে চিহ্নিত করে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন সচেতন মহল। তবে ছিনতাই বিষয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপশি অভিভাবকদের সচেতন হওয়া অতীব জরুরী।
You must be logged in to post a comment.