মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরতলা গ্রামের কাজল দত্তের সহধর্মিনী শাপলা দত্ত। শাপলা দত্ত সন্তানসম্ভাবা ছিলেন। শনিবার ৯ মার্চ গভীর রাতে শাপলা দত্তের প্রসববেদনা শুরু হয়। গ্রামের স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মী ও দাইমাদের ডেকে এনে শাপলা দত্তকে দেখানো হলে তারা বিষয়টি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে জানিয়ে দেন। নিরূপায় হয়ে কাজল দত্ত ও তার স্বজনেরা শাপলা দত্তকে অনেক কষ্ট করে কোনরকমে গোরকঘাটা জেটিঘাট পর্যন্ত শেষ রাতের দিকে নিয়ে আসে। কিন্তু জেটিঘাটে কক্সবাজার সদরে আসার কোন নৌযান না থাকায় সেখানেও শাপলা দত্তকে স্বজনদের নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণারত অবস্থায় ঘন্টা দেড়েক অপেক্ষা করতে হয়। রোববার ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে গোরকঘাটা জেটিঘাটে একটি স্পীডবোট পাওয়া গেলে সেটি নিয়ে কোনরকমে সকাল ৭ টার পর পর কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নতুনবহারছরা ৬ নম্বর জেটিঘাটে শাপলা দত্ত সহ সবাই পৌঁছেন। এখানে এসে শাপলা দত্তের প্রসববেদনা এতই তীব্র হয় যে, সেখানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আফসেলের মালিকানাধীন আবদুল মালেক সওদাগরের ভাড়া দোকান কুলিং কর্ণারে শাপলা দত্তকে নিয়ে স্বজনেরা ঢুকে পড়েন। সেখানেই সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে কিছুক্ষণের মধ্যেই বুক জুড়ানো ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জম্ম দেন শাপলা দত্ত।
শাপলা দত্ত মাতৃত্ব অর্জনের গৌরব প্রমাণ করেছে- “প্রসববেদনা স্থান-কাল-পাত্র কিছুই মানেনা” বিষয়টি বিস্তারিত এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও নতুন বাহারছরার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন আফসেল। আফসেল জানিয়েছেন-সন্তান প্রসবের পর মা শাপলা দত্ত ও নবজাতক সুস্থ ছিল। পরে মা ও নবজাতকে স্থানীয় একজন চিকিৎসককে দেখিয়ে কিছু ওষুধপত্র নেয়া হয়। কাজল ও শাপলা দম্পতি তাদের বুকজুড়ানো শিশু সন্তান নিয়ে স্বজনেরাসহ সকাল ৯ টার দিকে নৌযান যোগে ছোট মহেশখালীর ঠাকুরতলা গ্রামের বাড়ি রওয়ানা দেন। আবদুল মালেক সওদাগর ও গিয়াস উদ্দিন আফসেল শাপলা দত্তকে সন্তান প্রসবের জন্য তাৎক্ষণিক দোকানে জায়গার ব্যবস্থা করে দিয়ে, যে মহৎ কাজ করেছেন তা সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
You must be logged in to post a comment.