সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের পাসওয়ার্ড আর গোপন থাকছে না। ফেসবুকের পাসওয়ার্ড সরকারের হাতে অথাত্ সরকার চাইলে সন্দেহভাজন যে কারও ফেসবুকে লগইন করতে পারবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সরকার এখন ইচ্ছা করলেই যে কারও ফেসবুকে প্রবেশ করতে পারবে। আশার কথা হচ্ছে, এখন এ ধরনের প্রযুক্তি আমাদের হাতে এসেছে। তবে আমাদের টার্গেট তারাই যারা অপরাধ করবে।’
জানা গেছে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তথ্যপ্রুযুক্তির ঝুঁকি মোকাবেলায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন হামলা ও নাশকতার ঘটনায় গোয়েন্দারা সাইবার সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। গোয়েন্দাদের সুপারিশের পর সরকার তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সংস্থাগুলোকে আরও নজরদারি করতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান, অবকাঠামো নির্মাণ, মনিটরিং সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার ২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার বরাদ্দও দেয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আধুনিক বিশ্ব যেভাবে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সন্ত্রাস দমন করে, তেমনটি বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে। আধুনিক ডাটা সেন্টার স্থাপন, নানা ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার, তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তৈরি করাসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্যই ঢেলে সাজানো হচ্ছে ‘ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং নতুন প্রজন্মের বিভিন্ন সাইবার সন্ত্রাস মোকাবেলায় সরকার প্রযুক্তির সক্ষমতা বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেয়। এরই অংশ হিসেবে ফেসবুক নজরদারি করতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি সংগ্রহ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে মনিটরিং সুবিধা প্রদান, টেলিযোগাযোগ খাতের উদীয়মান ঝুঁকি মোকাবেলা, টেলিযোগাযোগ অ্যাপ্লিকেশন/সফটওয়্যারের অপব্যবহার এবং সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ২০১৪ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) গঠন করা হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের সাইবার নিরাপত্তা প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, ইদানীং সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও ব্লগভিত্তিক সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের নজরদারি করতে গিয়ে কিছু বিষয় পরিষ্কার হয়েছে।
সাইবার অপরাধীরা মনে করছে যেহেতু মোবাইলে কথা বললে বা পরামর্শ করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নাশকতার তথ্য সহজেই জানতে পায়। তাই এরা ফেসবুক বা ইন্টারনেট বিভিন্ন সাইট খুলে নিজেদের মধ্যে ক্লোজ গ্রুপে শলাপরামর্শ করে। এ ধরনের সাইবার অপরাধীদের দমনে সরকার শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এখন তারা ফেসবুকে নিষ্ক্রিয় করে দিলেও তথ্য উদ্ধার করা যাবে। আগেও কিছু তথ্য উদ্ধার করা যেত, এখন পুরোপুরি তথ্যই উদ্ধার করা সম্ভব। তিনি জানান, প্রযুক্তি ব্যবহারের সঙ্গে মনিটরিং ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। এখন যে কারও ফেসবুকে প্রবেশ করার মতো সক্ষমতা রয়েছে সরকারের।
সূত্র: গ্লোবটুডেডটকম,ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.