সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / সমুদ্র সৈকতে মহাবারুনীতে স্নাত হলো হাজারো পূর্ণ্যার্থী

সমুদ্র সৈকতে মহাবারুনীতে স্নাত হলো হাজারো পূর্ণ্যার্থী

Baruni- Himu 5-4-16 news 1pic - F1

অজিত কুমার দাশ হিমু; কক্সভিউ :

বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মহাবারুনী স্নাত হলো হাজারো পূণ্যার্থী। হিন্দু ধর্মের পঞ্জিকামতে সেই পৌরানিক আমল থেকেই চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশি তিথিতে এ পূণ্য স্নান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুষ্ঠিত হয়। এ লক্ষ্যে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের তীরে মহা বারুণী স্নান ও মেলায় মিলিত হন দেশের হাজার হাজার পূণ্যার্থী হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী পুরুষেরা। তারা পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তির জন্য তর্পন করে এখানে। সমুদ্র তীরে ধর্মীয় পৌরহিতরা সকালেই বসেন পূজা অর্চণার জন্য। হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী ও পুরুষেরা পূর্ব পুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা ছাড়াও নিজেদের পুণ্যলাভ এবং সকল প্রকার পাপ, পংকিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে বারুণী স্ন্যানে ছুটে আসেন।

এখানে প্রতিবছর সমুদ্র স্নান ও মেলার পাশাপাশি বাংলাদেশ অদ্বৈত-অচ্যুত মিশন, কক্সবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে পূর্ণ্যার্থীদের মাঝে মহাপ্রসাদ বিতরণ করেন। চলে গঙ্গা পূজাসহ ধর্মী আচার অনুষ্ঠান।

জানা যায়, বিগত বছরের ন্যায় এবারও ৫ এপ্রিল মঙ্গলবার ভোর থেকে মধুকৃষ্ণা ত্রয়দশী তিথিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ডায়াবেটিস পয়েন্টে এ পূণ্য স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বসেছে হরেক রকমের পন্যসামগ্রী নিয়ে গ্রামীন মেলা। চলেছে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগীত থেকে শুরু নানা আচার অনুষ্ঠান। এ তীথিতে প্রতিবছর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হাজার হাজার পুন্যার্থীদের অংশগ্রহনে চলে ঐতিহ্যবাহী বারুনীর স্ন্যান।

পৌরানিক মতে, শিবের স্ত্রী সতী পার্বতীর মৃত্যুর পর শিব তার দেহ নিয়ে তান্ডব নৃত্য করেন। তখন বিষ্ণু চক্র দ্বারা সতির দেহ খন্ডিত করেন, এসময়ে সতী পার্বতীর দেহের একটি অংশ সমুদ্রে (গঙ্গা)য় পতিত হয়। সে কারনে এটা ৫১ পীঠের একটি পীঠ। কত বছর পুর্ব থেকে এ স্ন্যান ও মেলা শুরু হয়েছে তা সঠিক করে কেউ বলতে না পারলেও ধারনা করা হচ্ছে পৌরানিক আমল থেকেই মধু কৃষ্ণ ত্রয়োদশীর তীথির স্ন্যান করতে কক্সবাজার জেলা ও দেশের অন্যান্য জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার পুর্ণ্যার্থীরা পুণ্য লাভের আশায় বঙ্গোপসাগরের তীরে হাজির হয়ে পূণ্যস্নান করেন এবং গঙ্গাপুজায় অংশ নেয়। এই পুজারীদের মিলন মেলা থেকেই শুরু হয় স্ন্যান ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।

এখানে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও মেলা উপভোগ করতে পরিবার পরিজন নিয়ে ভীড় জমায়। এ স্নান এখন কক্সবাজারের ঐতিহ্য হয়ে দাড়িয়েছে। পূণ্যস্নান এর কার্য সম্পাদন ও মেলার শান্তি শৃঙ্খলার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন।

এব্যাপারে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশ বলেন, প্রতিবছরের মতো এ বছরও ব্যাপক উত্সাহ উদ্দিপনার মাধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এ মহাস্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থাও গ্রহন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে বারুনী স্নান পর্ব সকাল থেকে অনুষ্ঠিত হলেও মঙ্গবার ভোর ৪টা ১৩মিনিট গতে আরম্ভ হয়ে সকাল ৯টা ১৩মিনিট পর্যন্ত ধর্মীয়ভাবে মূল স্নান পর্ব চলেছে বলে জানান কক্সবাজারস্থ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের প্রধান পৌরহিত বিজয় কৃষ্ণ চক্রবর্তী।

এদিকে কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানীস্থ মংগ্যাইয়ার টেক সমুদ্র সৈকতে মুধুকৃঞ্চ ত্রয়োদশী উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়ন শাখা এ অনুষ্ঠানের উদ্যোগে বারুণী স্নান, গঙ্গা পূজা, শ্রীমত ভাগবত গীতা পাঠ এবং আনন্দ বাজারে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। ৫ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুুপুর আড়াইটা পর্যন্ত একটানা চলে।

অপরদিকে এ বছর থেকে নতুন করে এই অনষ্ঠানের আয়োজন করায় উপজেলার সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে ব্যাপক উত্সাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁও উপজেলা নিবার্চন থেকে ২ চেয়ারম্যান ও ১ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন

নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : নানান কল্পনা ঝল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঈদগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/