১৮৮৬ সালের পহেলা মে। আমোরিকার শিকাগো শহরে দৈনিক আটঘন্টার কাজের দাবীতে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে গুলীবর্ষণ করে শাসকবাহিনী। সেই আন্দোলনে নিহতদের স্বরণে পালিত হয়ে আসছে মহান মে দিবস অর্থ্যাৎ শ্রমিক দিবস। পর্দায় যাদের আমরা দেখি তারাও শ্রমিক। যে তারা ঝলমলে আলোয় উপস্থিত হচ্ছে সবার সামনে তার মনেও আছে অন্ধকার। সেই আটঘন্টার শ্রমের দাবি যেন এখনো শেষ হয়নি। অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো নাট্যাঙ্গনেও প্রকট হয়ে উঠেছে এ দাবি। মে দিবসের আয়োজনে কথা হলো তিন তারকার সঙ্গে…
আমি নাট্যশ্রমিক, সমস্ত শ্রমিকের প্রতিনিধি
চঞ্চল চৌধুরী
আমি একজন শ্রমিক। নাট্যশ্রমিক। সমস্ত শ্রমিকের প্রতিনিধি। মে দিবসে আমি চাইবো, যে কারণগুলোর জন্য আমরা মে দিবস পালন করি সেই চাওয়াগুলো পূরণ হোক। নাটকের ক্ষেত্রেই বলি আর গার্মেন্টেসের ক্ষেত্রেই বলি মালিকপক্ষ শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদার কথা মাথায় রাখেনা। শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদাগুলো সংরক্ষিত হয়না। আমি নিজেও এমন পরিস্থিতির শিকার। আটঘন্টার বেশি কাজ করতে হয়। আমাদের দেশে সুষ্ঠু কোন নিয়ম শৃঙ্খলা তৈরী হয়নি এখনো। প্রত্যেকটা সেক্টরের মতো নাটকের সেক্টরেও ঘাটতি আছে। আমাদের কর্মঘন্টা ঠিকঠাক না হওয়ায় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো হয়না। কাজের ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব আরও বাড়ানো উচিত।
দর্শকদের ভালোবাসাই আমাদের কাছে মজুরী
মৌসুমী হামিদ
আমরা তো মজুরীর বিনিময়ে কাজ করি। দর্শকদের ভালোবাসাই আমাদের কাছে মজুরী। তবে অভিনয়ে ক্ষেত্রে কিছুটা অনিয়ম আছে। যেমন কর্মঘন্টা নিয়ে আমাদের সিস্টেমটা খুব বাজে। সিস্টেম লস ওয়েতেই কাজ চলছে। নয়টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ঘড়ি ধরে তো আমরা কাজ করিনা। সেই সকাল সাতটা থেকে অনেক সময় রাত আটটা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। এটা শিল্পীদের উপর মেন্টাল প্রেসার ক্রিয়েট করে। অন্য দেশে রাত নয়টার পর শুটিং করলে এক্সট্রা পেমেন্টের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু আমাদের দেশে সেই নিয়ম নাই। আমাদের আরও অর্গানাইজড হওয়া দরকার। শুটিং প্যাকআপ টাইম সর্বোচ্চ দশটা পর্যন্ত রাখলে হবে। সবাইকেই বিষয়টি নিয়ে সচেতন হওয়া দরকার।
অন্তত প্রত্যেকটা লট শেষে পারিশ্রমিক দেয়া হোক
শবনম ফারিয়া
শ্রমিকের চেয়েও খারাপ অবস্থা। শ্রমিকরা তো পার ডে মজুরী পায় কিন্তু আমরা তা পাইনা। কাজ শেষ হলে পাই। আমি বলবো, প্রত্যেকদিন না হোক অন্তত প্রত্যেকটা লট শেষে পারিশ্রমিক দেয়া হোক। আর টাইমিংয়েও পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা সেই সকাল আটটা থেকে কাজ শুরু করি শেষ হয় মাঝরাতে। ঢাকার বাইরে যদি শুটিং থাকে তাহলে তো সেই ভোরে উঠতে হয়।
আমরা একমাস সবাই মিলে যদি নিয়ম করি দশটায় প্যাক আপ করতে হবে তাহলে সেটাই অভ্যাস হয়ে যাবে। কিন্তু আর্টিষ্টটরা স্ট্রং হয়না। আমি স্ট্রং হলে আরেকজন হয়না।
সূত্র:banglamail24.com
You must be logged in to post a comment.