কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সৌভ্রাত দাশ ও অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে অতিদরিদ্রের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর চলতি মৌসুমের চলমান ২৬টি প্রকল্পে প্রদর্শনের জন্য সাইনবোর্ড ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতিসহ সরকারী বরাদ্দের অর্থ লোপাটের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, পিআইও ও অফিস সহকারী গোপনে পেকুয়া চৌমুহুনী এলাকার সুবর্ণা প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি দোকানের মালিকের সাথে আঁতাত করে তিনশত টাকা দামে সাইনবোর্ড তৈরী করে তার মূল্যে এক হাজার দুইশত টাকার ভূঁয়া বিল ভাইচার তৈরী করে সরকারী বরাদ্দের অর্থ লোপাট করেছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মাসে সরকারের ত্রান ও পূর্ণবাসন অধিদপ্তরের অধীনে পেকুয়া উপজেলায় অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় ৪০দিনের কাজ শুরু হয়। প্রত্যেক প্রকল্পের সামনে প্রকল্প পরিচিতির জন্য ডিজিটাল সাইনবোর্ড টাঙ্গানোর জন্য সরকারের নির্দেশনা রাখা হয়। কর্মসৃজন প্রকল্পে বরাদ্দের নন ওয়েজ ফান্ড থেকেই প্রকল্পের সাইনবোর্ড টাঙ্গানোর ব্যয় নির্বাহের নিয়ম রয়েছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, পেকুয়ার ২৬টি প্রকল্পের সাইনবোর্ড টাঙ্গানোর জন্য পেকুয়ার পিআইও সৌভ্রাত দাশ ও তার বিশ্বস্ত অফিস সহকারী হিসাবে পরিচিত কর্মচারী গোপনে পেকুয়া কলেজ গেইট চৌমুহুনী এলাকার সুবর্ন প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি দোকানের সাথে চুক্তি করে। ইতোমধ্যেই ২৬টি সাইনবোর্ড ওই দোকান থেকে সরবরাহও করা হয়েছে। চারশত টাকা দামের প্রতিটি সাইনবোর্ড এক হাজার দুই শত টাকার ভূঁয়া বিল ভাউচার তৈরী করা হয়। এভাবে পিআইও ও অফিস সহকারী কর্মসৃজন প্রকল্পের সাইনবোর্ড ক্রয়েও নানা অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সরকারী বরাদ্দের অর্থ লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ জনশ্রুতি দেখা দিয়েছে।
পেকুয়ার বিভিন্ন প্রকল্প সরোজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প কমিটি ও এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কর্মসংস্থান প্রকল্পের সাইনবোর্ডগুলোর প্রতিটির মূল্য সর্বোচ্চ ৪শত টাকার উপরে হবেনা। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এই সাইনবোর্ড ক্রয়েও অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহনের মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভারী করেছেন।
এ ব্যাপারে পেকুয়ার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কুতুবদিয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সৌভ্রাত দাশ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পেকুয়ার কর্মসৃজন প্রকল্পের সাইনবোর্ড ক্রয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন তার অফিস সহকারী। আমি শুধু বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেছি। এখানে কত টাকা দিয়ে সাইন বোর্ড ক্রয় করা হয়েছে সেটা তিনি অবগত নয় বলে মন্তব্য করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে পেকুয়া পিআইও অফিসের অফিস সহকারী মাহফুজ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রতিটি সাইনবোর্ড বাবদ ৭৫০টাকা খরচ হলেও ভ্যাট ও আনুসাঙ্গিক খরচাধিসহ ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার দুইশত টাকা করে। তিনি জানান, প্রকল্পের সব সাইনবোর্ড পিআইওর নির্দেশনা মতেই সম্পন্ন করা হয়েছে। এর বাইরে তিনি আর কোন কথা বলতে রাজি হননি।
You must be logged in to post a comment.