নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও :
কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও বাজারের মা-মনি হাসপাতাল সংলগ্ন একটি গ্যারেজ থেকে ইয়াছিন (২৫) নামের এক টমটম চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মারা যাওয়া যুবক ঈদগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজপাড়ার আবদু জলিলের পুত্র।
রোববার (৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০টার দিকে বাজারের মা-মনি হাসপাতাল সংলগ্ন আমির হোছাইনের (প্রকাশ-মাস্টার) গ্যারেজে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
সংবাদ পেয়ে সকাল ১১ টার দিকে ঈদগাঁও থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী শেষে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ময়না তদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরনের প্রস্ততি নিচ্ছিল। এদিকে ঘটনার পরপরই গ্যারেজ মালিক আমির হোছাইন এবং কর্মচারী আনু গা ঢাকা দেয়।
পুলিশের ধারনা বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ইয়াছিন মারা গেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইয়াছিনের স্ত্রী তাজমিন আক্তার জানায়, তার স্বামী ইয়াছিন ঈদগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজাপাড়ার বাসিন্দা হলেও স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করেন ইসলামপুর ইউনিয়নের ফকিরা বাজারের অদুরে ভিলেজার পাড়ায়। মিনহা মনি নামে দুবছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে তাদের সংসারে। ঘটনার দিন খাওয়া দাওয়া সেরে সকাল ৯ টার দিকে ইজিবাইক নিতে গ্যারেজের উদ্দেশ্যে বের হন তার স্বামী ইয়াছিন। বাসা থেকে বের হওয়ার দেড় ঘন্টা পর জানতে পারেন স্বামী ইয়াছিন মারা গেছে।
নুরুল আবছার জানান, ইয়াছিনকে গ্যারেজের ভেতর পড়ে থাকতে দেখে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ড্রাইভার তাকে নিয়ে পাশ্ববর্তী মা-মনি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। এরপর ওই ড্রাইভারেরা ইয়াছিনকে নিয়ে ইজিবাইকযোগে ফকিরাবাজারের দিকে নিয়ে যায়। কিন্ত বাসা চিনতে না পেরে আবারও ইয়াছিনকে একই স্থানে এনে রেখে দেয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইজিবাইক চালকদের দাবী, গ্যারেজের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করলে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
ঈদগাঁও উপজেলা শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর বাংলা জানান, গ্যারেজ মালিক একই ইউনিয়নের দঃ মাইজপাড়া গ্রামের জেবর মুল্লুকের ছেলে আমির হোছাইন দীর্ঘদিন ধরে কারনে অকারনে শ্রমিকদের উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। শ্রমিক নির্যাতনের কারনে তার বিরুদ্ধে থানায় অনেকবার শালিস বৈঠকও হয়েছে। তার গ্যারেজের বৈদ্যুতিক সংযোগগুলো সুরক্ষিত নয় এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এ কারনেই এধরনের হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে।
শ্রমিক ছৈয়দ আলমের দাবী, বিগত বছর বর্ষাকালে আয় কম হওয়াতে একদিন দৈনিক জমা ২০ টাকা কম দেওয়াতে আমির হোছেন তার গোপনাঙ্গে ব্যাটারীর বিষাক্ত পানি ঢেলে দিয়েছিল।
এ ব্যাপারে গ্যারেজ মালিক আমির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, কর্মচারী আনুর ভূলের কারনে পুরো গাড়ীটিই বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এরপরই তিনি মুঠোফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে এ বিষয়ে তার আর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবদুল হালিম বলেন, ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে ঘটনার প্রকৃত কারন জানা যাবে। এছাড়া দোষীদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
You must be logged in to post a comment.