অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা যেন আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করতে না পারেন সে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করেছেন এক আইনজীবী।
সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ এই রিট আবেদন করেন।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃঞ্চাদেব নাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আগামী রবিবার এই রিটের শুনানি হতে পারে বলে জানান এই আইনজীবী। তিনি বলেন, অবসরে যাওয়ার পরে কোনো বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করতে পারবেন না মর্মে রিটে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সংবিধানের ৩৩ ধারাও বাতিলে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী অবসরে যাওয়ার পরে কোনো বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে বা হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করার কোনো নিয়ম ছিল না। জিয়াউর রহমানের সময় সামরিক ফরমানের মাধ্যমে এই নীতি আবার প্রচলন করা হয়। পরে বর্তমান সরকার পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আবার তা ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু সরকার দাবি করছে তারা আবার ১৯৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু মনে হয় তারা জনগণের সঙ্গে ভাওতা বাজি করছেন।
সম্প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আপিল শুনানিতে অংশ নেন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে এভাবে সরকারের বিপক্ষে আইনি লড়াইকে অনৈতিক বলে দাবি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নেয়া অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান বিচারপতিদের আদালতের প্রথা ও নিয়মকানুন মেনে চলা উচিত। তবে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী দাবি করেন, এটা তার সাংবিধানিক অধিকার। তিনি ছয় মাস সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। এরপর আর তা ভোগ করবেন না। এই বিতর্কের মধ্যেই আজ বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলেন এক আইনজীবী।
এদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর মামলায় আর লড়বেন না বলে জানিয়েছেন হাইকোর্টের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল মামলাটির তৃতীয় দিনের শুনানি শুরু হলে এ ঘোষণা দেন বিচারপতি নজরুল।
সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে মীর কাসেমের মামলার শুনানি শুরু হলে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি ওকালতনামা প্রত্যাহার করে নেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, এই মামলায় আইনজীবী হিসেবে লড়তে সাংবিধানিকভাবে কোনো বাধা নেই। এটা অনৈতিকও নয়। তবে প্রচণ্ড বৈরি পরিবেশের কারণে তিনি সরে দাঁড়ান বলে দাবি করেন এই বিচারপতি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, ‘আমি দুঃখিত। এ মামলাটি দু’জন সিনিয়র আইনজীবী পরিচালনা করবেন। আমি নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলাম’।
সূত্র: প্রতিক্ষণডটকম,ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.