বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানার সাজা পরোয়ানা (দণ্ড কার্যকরের পরোয়ানা) জারি করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ ৩-এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এ-সংক্রান্ত আদেশ দেন।
এরই মধ্যে পরোয়ানাটি রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পরোয়ানাটি আদালতের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশনের বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের (ডিসি) মাধ্যমে থানায় পাঠানো হয়।
ডিসি (প্রসিকিউশন) আনিসুর রহমান জানান, ক্যান্টনমেন্ট থানায় পরোয়ানাটি ওরই মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২১ জুলাই তারেক রহমানকে অর্থপাচার মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এর আগে তারেক রহমানকে খালাস দেন ঢাকা বিশেষ জজ-৩ আদালতের তৎকালীন বিচারক মোতাহার হোসেন। সে খালাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হাইকোর্টে আপিল করে। আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট তারেক রহমানকে এসব সাজা দেন।
হাইকোর্টের রায়ে পলাতক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়। রায়ের কপি আজ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৩-এ পৌঁছালে বিচারক আবু আহমেদ জমাদার তাঁর বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
অন্যদিকে একই রায়ে তারেকের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে বিচারিক আদালতের করা জরিমানা ৪০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২০ কোটি টাকা নির্ধারণ করেন। বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আপিল আবেদনটিও খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়ে তাঁর বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অর্থপাচার মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি মামুনকে ৪০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। পাচার করা ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৬১৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেন আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর আপিল করে দুদক।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট মামলাটি করে দুদক।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য নির্মাণ কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের মালিক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন। সিঙ্গাপুরে এ টাকা লেনদেন হয়।
এরপর মামুন ওই অর্থ সিঙ্গাপুরের ক্যাপিটাল স্ট্রিটের সিটি ব্যাংক এনএতে তাঁর নামের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। এ টাকার মধ্যে তারেক রহমান তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এরপর ২০১০ সালের ৬ জুলাই তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
সূত্র:ntvbd.com,ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.