অনলাইন ডেস্ক :
আখেরী চাহার শোম্বা একটি আরবী ও ফার্সি শব্দ-যুগল; এর আরবী অংশ আখেরী, যার অর্থ “শেষ” এবং ফার্সি অংশ চাহার শোম্বা, যার অর্থ “বুধবার”। আখেরী চাহার শোম্বা ইসলামী দিবস। হিজরি বছরের সফর মাসের শেষ বুধবার এ দিবস পালিত হয়। আরবি ও ফারসি উভয় ভাষায়ই ‘আখের’ শব্দের অর্থ ‘শেষ’, আর ফারসিতে বুধবারকে বলা হয় ‘চাহার শোম্বা’।
১১ হিজরির শুরুতে নবী করিম রসূলুল্লাহ (সঃ) গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এদিন কিছুটা কিছুটা উপশম বোধ করেছিলেন এবং গোসল করেছিলেন। এইদিনের পর আর তিনি গোসল করতে পারেননি। ২৮ সফর বুধবার মহানবী (সঃ) সুস্থ হয়ে ওঠেন। দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার। এ কারণে এ দিনকে একটি শুভদিন হিসেবে গণ্য করা হয় এবং মুসলমানরা এ দিবস উদযাপন করেন।
এই দিন কিছুটা সুস্থবোধ করায় রসূলুল্লাহ (সঃ) গোসল করেন এবং শেষবারের মত নামাজে ইমামতি করেন। মদীনাবাসী এই খবরে আনন্দ-খুশিতে আত্মহারা হয়ে দলে দলে এসে নবীজি (সঃ)কে একনজর দেখে গেলেন। সকলে তাদের সাধ্যমতো দান-সাদকা করলেন, শুকরিয়া নামাজ আদায় ও দোয়া করলেন। নবীর রোগমুক্তিতে তার অনুসারীরা এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে, তাদের কেউ দাস মুক্ত করে দিলেন, কেউবা অর্থ বা উট দান করলেন।
উল্লেখ্য যে, ২৯ সফর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার মাত্র কয়েক দিন পর ১২ই রবিউল আউয়াল ইহকাল ত্যাগ করেন মানবতার মুক্তিদূত হযরত মোহাম্মদ (সঃ)।
‘আখেরি চাহার শোম্বা’ দিবসটি মূলতঃ ‘শুকরিয়া দিবস’ হিসাবে পালিত হয়। যাতে সাধারণতঃ গোসল করে দু’রাকাত শোকরানা-নফল নামাজ আদায় শেষে রোগ থেকে মুক্তির দোয়া ও দান-খয়রাত করা হয়। বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, দরবার, খানকায় ওয়াজ-নসিহত, জিকির-আজকার, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় এই দিনটি পালন উপলক্ষে। এদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিভাবে বন্ধ রাখার পাশাপাশি অফিস-আদালতে ঐচ্ছিকভাবে ছুটির দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
পরিশেষে…আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে নেক আমলের প্রতি মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি অন্যায় কাজ থেকে ফিরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমীন।
You must be logged in to post a comment.