সাম্প্রতিক....
Home / জাতীয় / আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট

আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট

কক্সভিউ ডেস্ক :

শোকাবহ ১৫ আগস্ট আজ। জাতীয় শোক দিবস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শত্রুদের প্ররোচনায় মানবতার দুশমন, ঘৃণ্য ঘাতকরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ কারণে আজ বিভীষিকাময় ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর দিন।

১৯৭৫ সালের এইদিনের কালরাত্রিতে ঘটেছিল ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক ঘটনা। সেদিন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা করা হয়েছিল কিন্তু তার অবিনশ্বর চেতনা ও আদর্শ মৃত্যুঞ্জয়ী। ঘাতকের সাধ্য ছিল না ইতিহাসের সেই মহানায়কের অস্তিত্বকে বিনাশ করে। সেদিনের সেই নৃশংস এ ঘটনায় বাংলার অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন আর যারা প্রাণ হারিয়েছিলেন তারা হলেন- বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, ভাই শেখ নাসের ও কর্ণেল জামিল। ইতিহাসের এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের সেদিন আরো প্রাণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, শহীদ সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খানসহ অনেকে। আগস্ট মাসটি বাংলাদেশের মানুষের কাছে শোকের মাসে পরিণত হয়েছে আজকের এই দিনটির জন্য।

ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর বাসভবনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হলেও সেদিন দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। সে সময় স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে জার্মানিতে সন্তানসহ অবস্থান করছিলেন শেখ হাসিনা। শেখ রেহানাও ছিলেন বড় বোনের সঙ্গে। রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে আজ পালিত হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩ তম শাহাদতবার্ষিকী।

বঙ্গবন্ধুর জীবন খুব একটা দীর্ঘ ছিল না। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তিনি তত্কালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শেখ লুত্ফর রহমান ছিলেন স্থানীয় দায়রা আদালতের সেরেস্তাদার। মা সায়েরা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৫৫ বছর। পৃথিবীতে খুব কম নেতাকেই পাওয়া যাবে যিনি জীবনের এই সময়কালের বেশিরভাগটাই কারাগারে কাটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কারাগারে কাটিয়েছেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারের নির্বাচন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ৬৮ এর সরকার বিরোধী আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এসবই ছাপিয়ে যায় তার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ঘটনা।

এবার অনেকটা ভিন্ন আবহে এসেছে ১৫ আগস্ট। রাজধানীসহ সারাদেশেই প্রতিটি মোড়ে মোড়ে, গ্রাম-মহল্লায়, হাটে-বাজারে হাজার হাজার শোকের তোরণ, কালো ব্যানার, পতাকা, ফেস্টুন, পোস্টারে ছেয়ে গেছে দেশের পথ প্রান্তর। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের পাশাপাশি সারাদেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষ, সংগঠন এবার বিস্তারিত কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিকে স্মরণ করবেন।

বঙ্গবন্ধুর পাঁচ আত্মস্বীকৃত ঘৃণ্য খুনিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছে। তবে এখনো বিদেশের মাটিতে পলাতক রয়েছে আরো ছয় খুনি। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে এই ছয় খুনি প্রায় একযুগ ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পিতৃ হন্তারক এ খুনিরা হলো লে. কর্ণেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্ণেল (অব) এ এম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব:) এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব:) আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেমউদ্দিন খান। পলাতক অবস্থায় মারা গেছে আরেক আসামি আজিজ পাশা।

রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে দেশব্যাপী আজ পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদতবার্ষিকী, জাতীয় শোক দিবস। আজ সরকারি ছুটির দিন। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে আজ। বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন শোক দিবসের অনুষ্ঠানসমূহ সরাসরি সমপ্রচারসহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। সচিত্র বাংলাদেশ এর বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ ও বিতরণ এবং বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্ব স্ব কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

http://coxview.com/wp-content/uploads/2022/01/Supreme-Court-.jpg

রমজানে স্কুল খোলা থাকবে

অনলাইন ডেস্ক :রমজান মাসের প্রথম ১৫ দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং প্রথম ১০ দিন প্রাথমিক বিদ্যালয় ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/