সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / আলীকদমে পাথর উত্তোলন ও বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল উজাড়ের প্রস্তুতি

আলীকদমে পাথর উত্তোলন ও বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল উজাড়ের প্রস্তুতি

Pathor - Rafiq - Lama 22.01.16 (news 3pic) f1 (1)মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :

বান্দরবানে আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের রেপারপাড়ি বাজারের পশ্চিমপাশে ডপ্রু পাড়ার আশপাশ থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও বনাঞ্চল উজাড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। কতিপয় সরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পাথর পাচার ও বনাঞ্চল উজাড়ে জড়িত বলে জানায় স্থানীয়রা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলীকদমের চৈক্ষ্যং রেপারপাড়া বাজার থেকে মসজিদের পাশ দিয়ে আধা কিলোমিটার পর থেকে পশ্চিমদিকে ডপ্রু পাড়া, হরিণঝিরির আগা ও পাইকঝিরি পর্যন্ত অবৈধ পাথর উত্তোলন ও বনাঞ্চল উজাড়ে শতাধিক পাহাড় কেটে প্রায় ৩কিলোমিটার রাস্তা করেছে ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন ১০/১৫টি ট্রাক, ৮/১০টি পিকআপ এই পথদিয়ে শতাধিকবার পাথর, লাকড়ি ও গাছ বহন করে নিয়ে আসছে। অতিমাত্রায় পরিবহনের কারণে সরকারী ব্যায়ে নির্মিত রাস্তা ও কালভাট গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

Pathor - Rafiq - Lama 22.01.16 (news 3pic) f1 (2)Pathor - Rafiq - Lama 22.01.16 (news 3pic) f1 (3)ডপ্রু পাড়ার কারবারী হ্লাথোয়াই ম্রো ও স্থানীয় ছাচিং ম্রো জানান, ডপ্রু পাড়া, হরিণঝিরি ও পাইকঝিরির সহজসরল ম্রো জনগোষ্ঠীকে উপেক্ষা করে তাদের নিজস্ব ও দখলীয় জায়গা থেকে গাছ, বাঁশ ও পাথর আহরণ করছে মাংথাই হেডম্যান পাড়া সরকারী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিন রুকন মাষ্টার ও বনফুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশীষ কুমার দত্ত। কোন প্রকার মূল্য পরিশোধ না করে আমাদের দখলীয় ও রক্ষণাবেক্ষণ করা বাগান কেটে নিয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহায়তায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিমাত্রায় পাহাড় কেটে ও মাটি খুঁড়ে পাথর আহরণ করায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি অত্র অঞ্চলে মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ঝিরি ও পাহাড় খূঁড়ে পাথর উত্তোলনের ফলে এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম পানির অভাব। শুষ্ক মৌসুম আসতেই নলকুপ ও রিংওয়েলে পানি উঠা বন্ধ হয়ে যায়।

পাথর আহরণ ও গাছ, লাকড়ি পাচারের সত্যতা স্বীকার করে স্কুল শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিন রুকন মাষ্টার বলেন, আমরা উক্ত জায়গা সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান থংপ্রে ম্রো থেকে চুক্তি ভিত্তিক লিজ নিয়েছি। জায়গা ও বাগান মালিককে টাকা দিয়ে গাছ, লাকড়ি ও পাথর আহরণ করছি।

সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান থংপ্রে ম্রো বলেন, আমি হরিণঝিরি ও পাইকঝিরির কোন জায়গা কাউকে গাছ ও পাথর আহরণের জন্য লিজ দেয়নি। রুকন মাষ্টার আমাকে বলেছে ডপ্রু পাড়ার লোকজন থেকে লিজ নিয়েছে আর ডপ্রু পাড়াবাসিকে আমার কথা বলছে। মূলত তারা মিথ্যাচার করছে। তাছাড়া ডপ্রু পাড়ার আশপাশের জায়গা বন বিভাগের রিজার্ভ এলাকা। বন বিভাগের জায়গা থেকে গাছ, লাকড়ি ও পাথর আহরণ করলেও তারা কেন কিছু বলছে না।

লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পাথরের পারমিট অনুমতি দেন জেলা প্রশাসক। আমাদের কোন অনুলিপি দেয়া হয়না। যার কারনে কোথায় পারমিট ইস্যু হল তা আমি জানিনা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাহাড় খূঁড়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ না হলে অচিরেই এ এলাকা পরিবেশ বিপর্যয়ের মূখে পড়বে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কোন প্রকার গাছের গাড়ি যেতে পারবেনা।

আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল আমিন বলেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসন থেকে বর্তমানে কোন পাথরের পারমিট দেয়া হয়নি। যে সব পারমিট ব্যবসায়ীদের কাছে আছে তার কোনটারী মেয়াদ নেই। কেউ যদি পাথর আহরণ ও পরিবহন করে থাকে তা হলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। তাছাড়া পাহাড় খুঁড়ে পাথর আহরণের কোন অনুমতি কখনও দেয়া হয়নি। কেউ যদি তা করে থাকে তাদের কে আইনের আওতায় আনার জন্য আমি নির্দেশ দিয়েছি।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/