কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের মধ্যম গজালিয়া এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা জায়গা দখলে নিতে হামলা চালিয়ে একই পরিবারের ৭জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩জনকে মুমুর্ষূ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
৩ মার্চ বেলা ১১টায় বর্ণিত এলাকার আহতদের বসতভিটায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হল ইসলামাবাদ মধ্যম গজালিয়া গ্রামের বসতভিটার মালিক আমানুল হকের পুত্র আবু তৈয়ব (২৮), তার সহোদর আবুল কাশেম (২০), তারেক (২২), চাচা শরীফ (৪৫), আত্মীয় রাশেদ (৩৫), বোন, বোন জামাই মিজান ও তার মা। আহতদেরকে প্রথমে ঈদগাঁও মেডিকেল সেন্টারে, মুমুর্ষূ অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। কর্তব্যরত ডাক্তার ৩জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
আহত সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর পূর্বে তাদের বসতভিটার জায়গাটি ক্রয় করে বসতবাস করে আসছিল। সম্প্রতি জায়গার মূল্য বেড়ে যাওয়ায় জায়গাটি দখলে নিতে বারবার চেষ্টা চালায় একই এলাকার আবদুল হামিদের পুত্র হারুনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী। ইতিপূর্বে একাধিকবার ঐ জায়গা নিয়ে হামলার ঘটনাও ঘটে। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঈদগাঁও পুলিশ ঐ সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয়পক্ষকে নিজ নিজ অবস্থানে থাকার পরামর্শ দেয় এবং দু’পক্ষই আদালতে মামলা দায়ের করলে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসির নিকট কয়েকবার শালিসী বৈঠকও হয়।
এদিকে সন্ত্রাসীরা হামলার হুমকি দেওয়ায় আহত আবু তৈয়ব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরীও করে। এছাড়া গুরুতর আহত আবুল কাশেমও জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ২য় পক্ষকে ঐ জায়গায় প্রবেশ না করতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করলে আদালত ১৪৪ ধারা জারী করেন। ১৪৪ ধারা অমান্য করে ৩ মার্চ বেলা ১১টায় আবদুল হামিদের পুত্র হারুনের নেতৃত্বে তার সহোদর আবদুল জলিল, রিদুয়ান, রমজান, আত্মীয় জুবাইর, মিজান ও একদল মহিলা সন্ত্রাসীসহ ৩৫/৪০ জনের চেনা-অচেনা সন্ত্রাসীরা কিরিচ দিয়ে আবু তৈয়বের বসতভিটায় প্রবেশ করে কিরিচ দিয়ে প্রথমে আবু তৈয়বকে মাথায় উপর্যুপরী কুপিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। পরে তার বোন জামাই মিজানের ১টি পা দ্বিখন্ডিত করে কিরিচ দিয়ে। এসময় তাদেরকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে ছোট ভাই আবুল কাশেমের হাতকে লক্ষ্য করে কিরিচ দিয়ে আঘাত করলে হাতের কব্জি পর্যন্ত আলাদা হয়ে যায়। এমনকি ২টি আঙ্গুল ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে আসলে তার মা, বোন, ভাই তারেক, চাচা শরিফ ও আত্মীয় রাশেদুল ইসলাম ও হামলার শিকার হয়। গুরুতর আহত মিজান, কাশেম ও আবু তৈয়বকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এসময় সন্ত্রাসীরা বাড়ীর প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায় বলেও জানায় গুরুতর আহত আবু তৈয়বের মা। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা রাতের আঁধারে জায়গা দখলে নিতে আবারো হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে আহতের পরিবার। ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা নদী পার হয়ে পাহাড়ের দিকে চলে যায় বলে স্থানীয়দের দাবী। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী, সন্ত্রাসীরা একেবারে মারমুখি ছিল। হত্যার উদ্দেশ্যে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তাদের অভিমত। পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসির সাথে ঘটনা সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে তিনি সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন বলে জানান। মামলা পেলেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
You must be logged in to post a comment.