এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :
কক্সবাজারের নবসৃষ্ট ঈদগাঁও উপজেলার উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন ইসলামাবাদ ইউনিয়নে স্থাপনের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ গত ৬ জানুয়ারী (বৃহস্পতিবার) দুপুরে এই স্থগিতাদেশ দেন।
জানা গেছে, প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার)-র সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্ট এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
ঈদগাঁও উপজেলার প্রশাসনিক ভবনের জমি ইসলামাবাদ ইউনিয়নে অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমতি দেয়ায় স্থানীয় ৬ জন ব্যক্তি অধিগ্রহণের অনুমতি/বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে গত ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।
দুইদিন যাবত এ পিটিশনটির এর উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। মহামান্য হাইকোর্ট পিটিশনটি বিবেচনায় নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে রুল জারি করে বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দেন। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোঃ খসরুজ্জামান এবং মোঃ মাহমুদ হাসান তালুকদার এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
হাইকোর্ট ডিভিশন ২০২১ সালের ২ নভেম্বর ঈদগাঁও উপজেলা পরিষদ গঠনের জন্য ইসলামাবাদ ইউনিয়নে জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি কেন বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানাতে রুল জারি করেন।
আদালত এক অন্তর্র্বতীকালীন আদেশে ২০২১ সালের ২ নভেম্বর তারিখের জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম স্থগিত করেন। শুনানিতে বাদীপক্ষের কৌশলী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত এর সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব হচ্ছে নিকার এর। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদগাঁও ইউনিয়নের ঈদগাঁও মৌজায় উপজেলার প্রশাসনিক ভবন স্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলে নিকারে তা গৃহীত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে নিকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ম্যাপ পরিবর্তন করে অন্য ইউনিয়নে উপজেলার প্রশাসনিক ভবন তৈরি করার জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বে-আইনি ও অবৈধ।
রিটকারীরা হলেন ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম, ঈদগাঁও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান চৌধুরী, সমাজ সেবক আনোয়ারুল আজিম চৌধুরী, ঈদগাঁও ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বজলুর রশিদ, ৬নং ওয়ার্ড় মেম্বার মাহমুদুল হাসান মিনার ও জালালাবাদ ইউনিয়নের মেম্বার আরমান উদ্দিন মোরশেদ।
বিবাদীরা হলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, বিভাগীয় কমিশনার (চট্টগ্রাম), কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা, কক্সবাজারস্থ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিবসহ মোট ১৫ জন।
বাদীপক্ষের শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ ও এডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল। সরকার পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) অরবিন্দ কুমার রায়।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলায় সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে নতুন “ঈদগাঁও উপজেলা” পরিষদ গঠন করতে ৫/৮/১৯ তারিখের বিভাগীয় কমিশনার (চট্টগ্রাম) এর প্রস্তাব অনুসারে ২৯/৭/২১ তারিখে নিকারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উক্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে যে স্থানে উপজেলার সদর দপ্তরে স্থাপনের কথা সে স্থানে না করে সদর দপ্তর ইসলামাবাদ ইউনিয়নে করতে ভূমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল।
You must be logged in to post a comment.