করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) মহামারিতে দেশে বেড়েছে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছে কোভিড নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলোতেও। এছাড়াও আক্রান্ত না হয়েও কোভিড আতঙ্কে গণহারে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে ভবিষ্যতে মৃত্যুহার বাড়াবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। সরকারিভাবে রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ার প্রশ্নে কিছু করার নেই বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন।
করোনা থেকে বাঁচতে আতঙ্কিত মানুষ জেনে-না জেনে সেবন করেছে বিভিন্ন পদের অ্যান্টিবায়োটিক। অন্যের কাছে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই সেবন করেছে অ্যাজিথ্রোমাইসিন, ডক্সিসাইক্লিন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনসহ নানা ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক। রোগীর অবস্থাভেদে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকরিতার কিছুটা প্রমাণ মিললেও সরকারিভাবে উপজেলা পর্যন্ত পৌছে দেয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক।
একজন জানান, আমি একজন রোগী ছিলাম। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আমাকের ছয় ধরনের ওষুধ দেয়া হয়েছে। সেখানে প্যারিসিট্যামলসহ ডক্সিসাইক্লিন দিয়েছেন। সেখানে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিকের উপর জোর দিয়েছেন।
গেল ৫ মাসে এই সব অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। ওষুধ বিক্রেতাদের দাবি, এই প্রথম এতো বেশি অ্যান্টিবায়োটিক কিনতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে।
ফার্মেসির বিক্রেতারা জানান, এই করোনার মহামারিতে অ্যাজিথ্রোমাইসিন বেশি চলেছে। এখন বর্তমানে কোম্পানি এটা সরবরাহ দিতে পারছে না।
দেশের কোভিড হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিকের সর্বোচ্চ ব্যবহার ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান খসরু বলেন, বিভিন্ন হাসপাতলে শতকরা ৭০ থেকে ১০০ ভাগ অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়েছে। এই কোভিড ম্যানেজমেন্টে যে ভয়ংকর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয়েছে। এতে পরবর্তীতে শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
তাহলে করণীয় কি? প্রশ্ন ছিল ওষুধ প্রশাসনের কাছে।
ওষুধ প্রশাসনের অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, সরকার যেভাব চলবে, সেভাবে ব্যবহার হবে। আমাদের চিকিৎসকরা সেটাই প্রেসক্রাইব করবেন। চিকিৎসকের প্রেসক্রাইবের উপর আমাদের কোন করণীয় নেই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনাকালে অতি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ব্যাকটেরিয়ার টিকে থাকার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে। যা করোনা সঙ্কট এবং সঙ্কট পরবর্তী সময়েও মৃত্যু হার বাড়াবে বলে আশঙ্কা।
সূত্র: somoynews.tv – ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.