নিজস্ব প্রতিনিধি; লামা :
বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পুকুরিয়া খোলা এলাকায় ৫০ বছরের পুরাতন চলাচলের রাস্তা সংষ্কারে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় ৭নং ওয়ার্ডের পুকুরিয়া খোলা গ্রামের আবুল হোসেন এর বাড়ি থেকে মসজিদের পুকুর পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কার করতে গেলে বাঁধা দেয় পুকুরিয়া খোলা এলাকার জনৈক নুরুল হক। রোববার সকাল ১০টায় এই ঘটনা ঘটে।
সরজমিনে গেলে জানা যায়, লামা উপজেলার বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় পুকুরিয়া খোলা গ্রামের আবুল হোসেন এর বাড়ি থেকে মসজিদের পুকুর পর্যন্ত ৫০ বছরের পুরাতন রাস্তাটি সংষ্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়।
রোববার সকালে কর্মসৃজন কর্মসূচির ১৪ জন শ্রমিক রাস্তা সংস্কারে যায়। এসময় পুকুরিয়া খোলা গ্রামের মৃত কবির আহমদ এর ছেলে নুরুল হক তার জমির পাশ দিয়ে রাস্তা দিবেনা বলে বাঁধা দেয়। এসময় স্থানীয় লোকজন ও শ্রমিকদের সাথে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতি হয়।
পুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দা আহমদ কবির বানু (৬০) বলেন, এই রাস্তাটি আমাদের গ্রামের মূল রাস্তা। পরিষদের উদ্যোগে শ্রমিকরা রাস্তাটি মেরামত করতে আসলে নুরুল হক বাঁধা দেয়। আমরা কারণ জানতে চাইলে নুরুল হক আমাকে ধাক্কা দিয়ে তামাক ক্ষেতে ফেলে দেয় ও মারধর করে। চিৎকার শুনে নুরুল হকের বোন রোজিনা বেগম লুলু ও ২০/৩০ জন আত্মীয় স্বজন লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। রোজিনা বেগম ভাইয়ের হয়ে আমার মাথায় বারি দিতে গেলে আমি সরে গেলে লাঠির বারি নুরুল হকের মাথায় পড়ে। রোজিনার লাঠির বারিতে তার ভাই নুরুল হক আহত হয়।
কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক আবুল ফজল বানু (৫৫), মোঃ জোবায়ের (৪৫) ও রাশেদা বেগম (৪০) বলেন, আমরা চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে পুরাতন রাস্তাটি মেরামত করতে আসি। এসময় নুরুল হক বাঁধা দেয়। রাস্তার দক্ষিণ পাশে নুরুল হকের জমি আর উত্তর পাশে ডাঃ নুর মোহাম্মদ এর জমি। বিষয়টি ডাঃ নুর মোহাম্মদ জানতে পেরে তার জমির উপর দিয়ে রাস্তা করতে অনুমতি দেয়। নুরুল হক বাঁধা দিলে রাস্তার উত্তর পাশে ডাঃ নুর মোহাম্মদ এর জমির উপর দিয়ে আমরা রাস্তা নির্মাণ করতে থাকি। তারপরেও নুরুল হক বাঁধা দেয় এবং বলে তার জমির পাশ দিয়ে রাস্তা দিবেনা। পরে স্থানীয় লোকজনের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। নুরুল হক ২০/৩০ জন আত্মীয় স্বজন এনে বাঁধা দেয় ও রাস্তা বন্ধ করে দেয়। রোজিনা বেগম আহমদ কবির বানুকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে গিয়ে সেই বারি নুরুল হকের মাথায় লাগে। এসময় তাদের হামলায় কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক আহমদ হোচন আহত হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ইকবাল হোসেন ও মোঃ জোবায়ের সহ অনেকে বলেন, মূলত সদ্য শেষ হওয়া ইউপি নির্বাচনে নুরুল হকের ভাই নজরুল ইসলাম ভোটে হেরে যায়। নির্বাচনে হেরে যাওয়ায়, সেই ক্ষোভে তারা রাস্তা বন্ধ করে দিতে চায়। ঘটনার পরপরই নুরুল হকের স্বজনরা রাস্তা কুপিয়ে নষ্ট করে ও জালের নেট দিয়ে বন্ধ করে দেয়। দুপুরে বমু বিলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল কাদের এসে বেঁড়া তুলে রাস্তা খুলে দেয়।
এই বিষয়ে নুরুল হক বলেন, আমার জমি কেটে রাস্তা করতে চাইলে আমি বাঁধা দিই। তারা আমাকে মেরে আহত করেছে। আমি আইনীভাবে বিচার দাবি করছি।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোঃ রফিক আহমদ বলেন, আমি আমার জমিতে কাজ করতে ছিলাম। চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে আসি। ততক্ষণে নুরুল হককে তার স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। গ্রামের মূল রাস্তাটি সংষ্কারে বাঁধা দেয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। কয়েক হাজার জনসাধারণের চলাচলের রাস্তাটি সংষ্কারে বাঁধা দেয়ায় এলাকার লোকজনের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেব ভেঙ্গে দিবে বলেছে।
You must be logged in to post a comment.