সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / পুষ্টি ও স্বাস্থ্য / কোলেস্টেরলের সমস্যা ও করণীয়

কোলেস্টেরলের সমস্যা ও করণীয়

https://i0.wp.com/coxview.com/wp-content/uploads/2023/06/Health-Cholesterol.jpg?resize=540%2C330&ssl=1

অনলাইন ডেস্ক :

কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এটি আমাদের দেহের কোষের দেয়ালে থাকে। কোলেস্টেরলের সমস্যা এখন প্রায় ঘরে ঘরে। ট্রু কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, এইচডিএল, এলডিএল— এই চারটি মিলেই মূলত তৈরি হয় কোলেস্টেরলের পরিবার।


অনেকের ধারণা, চর্বি জাতীয় খাবার বেশি খেলেই কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। সবক্ষেত্রে এ ধারণা ঠিক নয়। আসলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়বে কি না, তা নির্ভর করে প্রত্যেকের শরীরের বিপাক হারের উপর। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল ধমনির দেয়ালে জমাট বেঁধে প্লাক তৈরি করে এবং রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। যেমন– উচ্চরক্তচাপ, হৃৎপিণ্ডের নানা ধরনের অসুখ, হার্টঅ্যাটাক ইত্যাদি।


কারো যদি ডায়াবেটিস থাকে, তা হলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে তা রক্তবাহের মধ্যে সঞ্চিত হয়। রক্তবাহকে সরু ও শক্ত করে ফেলে। রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে রক্তচাপ বাড়ে এবং তার সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায় কয়েক গুণ।


কোলেস্টেরল মানুষের শরীরে জৈবিকভাবেই তৈরি হয় যকৃতের মাধ্যমে। তবে খাদ্যাভ্যাসের পছন্দের উপর ভিত্তি করে শরীরে এর মাত্রা বাড়ে, আর তখনই স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের চাইতে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই সব বয়সের মানুষের উচিত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা।


রক্তের লিপিডের পাঁচটি উপাদানের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়, এইচডিএলের (উপকারী কোলেস্টেরল) পরিমাণ কমে যায়। তবে এলডিএলের (অপকারী কোলেস্টেরল) পরিমাণ প্রায় স্বাভাবিক থাকে। যাদের ডায়াবেটিস ও হূদরোগ নেই তাদের জন্য রক্তে এলডিএলের নিরাপদ মাত্রা ১৩০ মিলিগ্রাম/ডিএলের কম ও এইচডিএল ৪০ মিলিগ্রাম/ডিএলের ওপরে। আর যাদের ডায়াবেটিস আছে (অথবা কোনো রকম হূদরোগ আছে) তাদের রক্তে এলডিএল ৭০ মিলিগ্রাম/ডিএলের কম ও এইচডিএলের পরিমাণ ৪০ মিলিগ্রাম/ডিএলের বেশি।


জেনে নিন প্রতিদিনের ডায়েটে কোন ৫ পানীয় রাখলে জব্দ হবে কোলেস্টেরল—


* টমেটোর রস : টমেটোর তে উপস্থিত লাইকোপিন শরীরে লিপিডের মাত্রা বাড়াতে এবং লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এতে নিয়াসিন ও কোলেস্টেরল কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ফাইবারও থাকে। প্রতিদিন আধ কাপ করে টমেটোর রস খেতে পারলে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।


* সবজি : সব ধরনের সবজি ও ফল আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমাতে সাহায্য করে। সবজি দেহের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। এ জাতীয় খাবার যেমন: শুষ্ক সোয়া প্রোডাক্ট, মটরশুটি, টফু ইত্যাদি।


* গ্রিন টি : অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ গ্রিন টি-তে থাকা ‘ক্যাটাচিন’ শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ সপ্তাহ ধরে নিয়মিত গ্রিন টি খেলে শরীরে লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা প্রায় ১৬ শতাংশ কমে যায়।


* মাছ : গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে তিনদিন অথবা এর বেশি সময় মাছ খায়, তাদের শরীরে খারাপ কলেস্টেরল কম থাকে। যারা উচ্চ রক্তচাপ এবং বিভিন্ন হৃদরোগে ভুগছেন তাদের জন্য মাছ খুব উপকারী। এর মধ্যে হাই ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে।


* ওটসের দুধ : খাদ্যতালিকায় ওটসের দুধ থাকলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল। ওটসের দুধে রয়েছে বিটা গ্লুকোন। তা শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।


* বিটা ক্যারোটিন : গাঢ় হলুদ ফলে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। যেমন : আম, হলুদ পিচফল, কাঁঠাল ইত্যাদি। সবজির মধ্যে যেমন : কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঠবাদাম, গাজর ইত্যাদির মধ্যেও বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। এ ছাড়া গাঢ় সবুজ সবজি যেমন : ব্রকোলি, পাতাকপি ইত্যাদি খেতে হবে শরীরে বিটা ক্যারোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য।


* সয়া দুধ : এই দুধে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম। একেবারে নেই বললেই চলে। দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ কোলস্টেরলের সমস্যায় ভুগে থাকলে শরীর সুস্থ রাখতে রোজের খাদ্যতালিকায় অনায়াসে রাখতে পারেন সয়া দুধ। শুধু কোলেস্টেরল নয়, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে এই পানীয়।


* রেড ওয়াইন : কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে অন্যান্য অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে পরিমিত পরিমাণে রেড ওয়াইন খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বিপদসীমার নীচে থাকে। এতে অনেক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। নিয়ম মেনে খাওয়া গেলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষাও করে এই পানীয়।


কোলেস্টেরল মানেই যে ক্ষতিকর, তা কিন্তু নয়। বরং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ কোলেস্টেরলের প্রয়োজন। কিন্তু সমস্যাটা হয় দেহে কোলেস্টেরলের পরিমাণটা রেড়ে গেলে। তখন তা হৃদরোগজনিত অসুস্থতার কারণ হয়ে ওঠে। দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা কত, তা একমাত্র রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই জানা যায়। পরিমিত খাবার ও সময়মত সঠিক চিকিৎসা নিলেই রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2024/04/Election-Sagar-22-4-2024.jpeg

ঈদগাঁও উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৭ জনের মনোনয়ন দাখিল

  নিজস্ব প্রতিনিধি; ঈদগাঁও : নির্বাচন কমিশন ঘোষিত দ্বিতীয় ধাপের তফশিল অনুযায়ী আগামী ২১ মে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/