শীতের সকালে কাঁথা কম্বলের আদুরে পরশ থেকে বের হতে একদমই ইচ্ছা করে না। তবু বিছানা ত্যাগ করতে হয় কাজের তাগিদে। আড়মোড়া ছাড়তে ছাড়তে বিছানা থেকে মেঝেতে পা ফেলা। আর তখনই গোড়ালিতে কিঞ্চিত্ ব্যথার অনুভূতি। কেউ এটাকে পাত্তা দেন, কেউ হুড়মুড়িয়ে উঠতে গিয়ে টেরই পান না। শীতে ত্বকের শুষ্কতা পায়ের গোড়ালি ফাটা বা ব্যথা হওয়ার অন্যতম কারণ। দেহের অন্যান্য অংশের চেয়ে পায়ের গোড়ালির ত্বক অত্যান্ত পুরু ও শক্ত হয়। তাই গোড়ালি ফাটার প্রবণতা বেশি থাকে। পায়ের গোড়ালির যত্নে দরকার সচেতনতা। নইলে খুব সুন্দর সাজের সঙ্গে অসামঞ্জস্য পা দুখানা আপনার সম্পূর্ণ ইমেজটিই নষ্ট করে দেবে। জেনে নিতে পারেন পায়ের গোড়ালি ফাটা রোধ এবং নরম ও কোমল রাখার কার্যকরী উপায়।
– প্রথমত পা সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। ধুলাবালি পায়ের সবচেয়ে বড় শত্রু। তাই কাজ শেষে ঘরে ফিরে সামান্য স্ক্রাব বা ঘষে পা ধুয়ে নিন। পায়ে ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার থেকেও বিরত থাকতে হবে। পা ধোয়ার পর পা ভেজা থাকা অবস্থায় মুছে ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভোলা যাবে না।
– সকালে বিছানা থেকে নামার আগেই পায়ের গোড়ালিতে একটু পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে ম্যাসাজ করে নিতে পারেন। নিয়মিত করতে পারলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন। কারণ পা ফাটার শুরু হয় এসময় থেকেই। তাই ব্যবস্থা শুরুতেই নিলে খুব বেশি ভয় থাকে না।
– গোসলের আগে পায়ে তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে ত্বক নরম থাকবে। তিল তেল বা যেকোনো ভেজিটেবল অয়েল পায়ের জন্য খুবই উপকারী। সারা বছর পায়ের ত্বক নরম রাখতে তিল তেল ভালো। ম্যাসাজের আগে সম্ভব হলে তেল অল্প গরম করে নিন।
– সপ্তাহে এক দিন পায়ের বিশেষ যত্ন নিতে পারেন। সেজন্য রাতে শোবার আগে উষ্ণ গরম পানিতে লবণ, শ্যাম্পু মিশিয়ে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখতে হবে। গরম পানির স্পর্শে গোড়লির মরা ত্বক নরম হলে স্ক্রাবার বা পা ঘষার পাথর দিয়ে গোড়ালি ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। এতে মরা ত্বক ঝরে পড়বে, ফাটাও দূর হবে।
– পায়ের যেকোনো পরিচর্যায় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন। এতে ত্বক কোমল হয়। অপরদিকে ঠাণ্ডা পানি ত্বককে আরও শক্ত করে ফেলে। বাইরে থেকে ফিরে সামান্য গরম পানিতে পা ধুয়ে নিয়ে আলতো করে ময়েশ্চারাইজার ও গ্লিসারিন মালিশ করে নিলেও উপকার পাবেন।
– পায়ের ত্বকের কোমলতার জন্য ময়দা, হলুদের গুঁড়া, লেবুর রস ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক হিসেবে লাগালে উপকার পাবেন।
– পায়ে মুলতানি মাটি, শসার রস, কমলার রস ও টকদই একসঙ্গে মিশিয়ে পায়ে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে।
– নিয়মিত পরার জুতাটি শক্ত হলেও পা ফাটতে পারে। এ জন্য সব সময় পায়ের পক্ষে আরামদায়ক জুতা পরার চেষ্টা করুন। শীতে পায়ের গোড়ালি ঢাকা জুতা পরাই ভালো।
– যারা বাইরে নিয়মিত বের হন ও বেশি হাঁটাহাঁটি করেন তারা মোজাসহ পা-বন্ধ জুতা পরতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, পা যেন না ঘামে। প্রতিদিন পরিষ্কার মোজা পরুন।
– পায়ে ঘাম ও ধুলোময়লা জমে অনেকেরই ছত্রাক সংক্রমণের সমস্যা দেখা যায়। এতে অতিরিক্ত পা ফাটার প্রবণতাও থাকে। সে ক্ষেত্রে জটিলতা বেশি হলে বা সংক্রমণ হয়েছে মনে হলে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে পারেন।
সূত্র: বাংলামেইল২৪ডটকম,ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.