সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / ‘জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ’ বিষয়ে রচনা লিখে দেশ সেরা পেকুয়া কলেজের ছাত্রী তনিমা

‘জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ’ বিষয়ে রচনা লিখে দেশ সেরা পেকুয়া কলেজের ছাত্রী তনিমা

জাতিসংঘের ৭৩-তম অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ


মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
অভাব থাকলেও মেধার মাধ্যমে যেকোন কিছুকে জয় করা যায় তনিমা আফরোজ তার জলন্ত প্রমাণ। কক্সবাজারের পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের আন্নর আলী মাতবর পাড়ার মিজান ও সাবিনা দম্পতির মেয়ে। জন্মের পর থেকে অভাব-অনটন লেগে ছিলো সংসারে। তাই একদিকে স্বামীর অসুস্থতা অপরদিকে অভাব-অনটনের কারণে সংসারের হাল ধরতে চট্টগ্রামের একটি পোশাক প্রস্ততকারী প্রতিষ্টানে কাজ নেন মা সাবিনা। তাই তিন মাস বয়স থেকে তনিমার ঠাঁই হয় নানার বাড়িতে। বাবার বাড়িতে অভাব-অনটনের সংসার হলেও নানা আলহাজ্ব শামসুল আলম চৌধুরী সে অভাব কখনো বুঝতে দেননি।

মা-বাবার আদর ভালবাসা ছাড়াই নানা-নানির স্নেহ-ভালবাসায় বড় হতে থাকে তনিমা। এক সময় তনিমাকে স্কুল ভর্তি করে দেন নানা। দারিদ্রতা থাকে স্পর্শ করলেও মেধা দিয়ে জয় করে নিয়েছেন সেই ভাগ্য দেবতাকে।

নানা সীমাবদ্ধতা রুখতে পারেনি তার পথচলা। পেকুয়া প্রি-ক্যাডেট স্কুল থেকে পিএসসি ও পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় রেখেছেন মেধার সাক্ষর। উভয় পরীক্ষায় পেয়েছেন এ+। একই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন এসএসসি পরীক্ষায়। পরে উচ্চ মাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজে। বর্তমানে এই কলেজের ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। তার নানা আলহাজ্ব শামসুল আলম চৌধুরীর একান্ত সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পড়াশোনায় মেধার সাক্ষর রেখে যাচ্ছে তনিমা আফরোজ।

জানা যায়, সম্প্রতি কোডেক নামের একটি এনজিও সংস্থার ‘তরুণ আলো’ প্রকল্প আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় “উগ্র ও জঙ্গিবাদ” বিষয়ে দেশ সেরা হয় তনিমা। এই এনজিও সংস্থা তার এ রচনা পৌঁছে দেন জাতিসংঘের সদর দপ্তরে। সেখানে বিচার বিশ্লেষণ শেষে তনিমাকে সেরা ঘোষনা করা হয়। এতে তার ডাক পড়ে জাতিসংঘের ৭৩-তম সাধারণ অধিবেশনে।

মঙ্গলবার সকালে তার এ প্রাপ্তি নিয়ে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় তনিমা। এসময় সে বলেন, আমার ক্ষুদ্র জীবনে এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। জীবন আমার কাছ থেকে অনেককিছু কেড়ে নিয়েছে। দিয়েছে এই অসামান্য সম্মান। তাই আমি মহান সৃষ্টিকর্তা, আমার প্রিয় নানা ও শিক্ষকসহ তরুণ আলোর কাছে কৃতজ্ঞ। সকলের ভালবাসায় আমি সমাজের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। সেই সাথে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে সারাজীবন মা-বাবার পাশে থেকে তাদের সেবা করে যেতে চাই।

এব্যাপারে কোডেক ‘তরুণ আলো’ প্রকল্পের পেকুয়া শাখার মাঠ কর্মকর্তা মো.নাজমুল ইসলাম জানান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় চলতি মাসের ৮তারিখ একযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও কক্সবাজার জেলার ১০টি কলেজের বাছাইকৃত ৫০-৬০জন ছাত্রছাত্রী ‘জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ’ বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এ প্রতিযোগীতায় তনিমা দেশ সেরা নির্বাচিত হয়।

কোডেক ‘তরুণ আলোর’ প্রকল্পের কক্সবাজার জেলা শাখার ম্যানেজার কামরুল ইসলাম জানান, সুইজারল্যান্ডের একটি এনজিও সংস্থা ‘জিচারফ’ রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোগ নেন। তারা ১ হাজার শব্দের রচনা ও এর সারাংশের এক মিনিটের ভিডিও চিত্র নির্মাণ করে তাদের কাছে প্রেরণের জন্য মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন পরিচালনাধীন ইলমা, কোস্ট ট্রাস্ট, ইফসা, রূপান্তর ও কোডেক এনজিওকে দায়িত্ব দেয়।

তিনি আরো জানান, এই প্রতিযোগিতায় দেশ সেরা নির্বাচিত হওয়ায় তনিমা আফরোজকে জাতিসংঘের ৭৩-তম সাধারণ অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে সুইজারল্যান্ড দূতাবাস তনিমা আফরোজকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ; কক্সভিউ ডট কম; https://coxview.com/water-distribution-lama-mayor-rafiq-30-4-24-1/

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ

লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম এর পক্ষ থেকে লামা বাজারে জনসাধারণের মাঝে নিরাপদ পানি ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/