সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / ধর্মীয় / পবিত্র ঈদুল আযহার তাৎপৎর্য

পবিত্র ঈদুল আযহার তাৎপৎর্য

অনলাইন ডেস্ক :

আজ পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা মূলত আরবি বাক্যাংশ। এর অর্থ হলো ‘ত্যাগের উৎসব’। এই উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল ত্যাগ করা। যা কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত। মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে ঈদুল আযহা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, আনন্দ ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা।

এ দিনটিতে মুসলমানেরা ফযরের নামাযের পর ঈদুল আযহার নামাজ মসজিদে বা ঈদগাহ মাঠে আদায় করে থাকেন। ঈদের নামাজ জ্বিলহজ্জের ১০ তারিখে, সূর্য উদয়ের পর থেকে যোহর নামাজের সময় হবার আগ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে যে কোনো সময় দুই রাক্বাত নামাজ আদায় করে থাকেন। এসময় ঈদের নামাজের আগে মুসল্লিরা জোরে জোরে “তাকবীর” উচ্চারণ করেন।

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার,
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু,
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার,
ওয়ালিল্লাহিল হামদ।

ঈদের নামাজ দুই রাক্বাত। এটি ওয়াজিব নামাজ। তা জামায়াতের সঙ্গে ছয় অতিরিক্ত তাক্ববিরের সঙ্গে পড়তে হয়। ঈদের নামাজ শেষে ইমামের জন্য খুৎবা পড়া সুন্নত ও মুছল্লিদের জন্য খুৎবা শোনা ওয়াজিব।

নামাজ শেষে স্ব-স্ব আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ ও উট আল্লাহর নামে কোরবানি করে থাকেন। কোরবানির পশুর গোশত তিন ভাগ করে একভাগ আত্মীয়-স্বজনকে, আরেক ভাগ গরিবদের মধ্যে বণ্টন এবং বাকি এক ভাগ নিজেরা খাওয়া সুন্নত।

আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও আকুন্ঠ আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ঈদের নামাজের পর আল্লাহর অনুগ্রহ পাওয়ার আশায় মুসলমানরা পশু কোরবানি করেন।

হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্ন দেখলেন, মহান আল্লাহপাক তাঁকে স্বপ্নে আদেশ দিচ্ছেন বারবার যেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয়বস্তুটি আল্লাহর নামে উৎসর্গ করা হয়। এই আদেশে বিচলিত হজরত ইব্রাহিম তাঁর নানা প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করে গেলেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন থেকে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। এ অবস্থায় বিদ্যুচ্চমকের মতো তাঁর মনে হলো, তাঁর পুত্র ইসমাইলই (আ.) তো তাঁর সবচেয়ে প্রিয়! পুত্রকে এ-ঘটনা অবহিত করা হলে তিনিও পিতার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিলেন এবং উৎসর্গের স্থানে পিতা-পুত্র একত্র হলেন।

ইসমাইলের গলায় ছুরি চালাতে গেলে সেখানে এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে। ইসমাইলের স্থলে একটি দুম্বা সেখানে কোরবানি হয়ে যায়। এখানে প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করার পরীক্ষায় হযরত ইব্রাহীম (আ.) উত্তীর্ণ হন। এর প্রতীকী সত্যটি হলো, মানুষে-মানুষে হানাহানি বা হত্যাযজ্ঞ নয়, বরং ভেতরের পশুত্বকে হত্যা করা। আজ সেই পবিত্র দিন।

প্রতি বছর ঈদুল আযহা মুসলিম জাহানে এসে মুসলিম জাতির ঈমানি দুর্বলতা, চারিত্রিক কলুষতা দূর করে ত্যাগের উজ্জ্বল মহিমায় ঈমানি শক্তিকে বলীয়ান, নিখুঁত ও মজবুত করে।

অতএব; লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে বড় বড় গরু ক্রয় করে প্রদর্শন করা, বাহাদুরী জাহির করা অথবা গোশত খাওয়ার নিয়তে কোরবানি হবে না, বরং হালাল উপার্জন, ইখলাছ ও একনিষ্ঠতাই হলো কোরবানি কবুল হওয়ার আবশ্যকীয় শর্ত, কে কত টাকা দিয়ে পশু ক্রয় করলো, কার পশুটি কত মোটাতাজা বা সুন্দর, আল্লাহ তা দেখেন না। তিনি দেখেন সহীহ নিয়ত ও তাকওয়া। হাদীসের ভাষায়-ইন্নাল্লাহা লা ইয়ানযুরু ইলা ছুরাতেকুম অলাকিন ইয়ানযুরু ইলাকুলুবেকুম ও আমালেকুম।

আসুন, আমরা লোভ-লালসা, দুর্নীতি-দুঃশাসন, মানবতা-দলন এসব পাশবিকতাকে হত্যা করে সত্যের মুখোমুখি হই। কেননা পবিত্র ঈদুল আজহা বা মহান কোরবানির এই হলো প্রকৃত তাৎপর্য।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

চট্টগ্রামের পরিবেশ রক্ষায় শক্তিশালী কমিশন গঠন করার প্রস্তাব -এমএএফ’র সেমিনারে

  প্রেস বিজ্ঞপ্তি : প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আন্দোলন সংগ্রাম ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির চারণভূমি চট্টগ্রাম। নানা কারণে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/