হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া :
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এবারই প্রথম নেক্কার জনক ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় অসুস্থ মাকে দেখতে এসে স্কুল ছাত্রী অপহরণ ও গণধর্ষণে ঘটনার ৫ অতিবাহিত হয়ে গেলেও কোন আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এঘটনায় আ’লীগ নেতৃবৃন্দরা পুলিশ প্রশাসনকে ৩ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষণার মাধ্যমে আ’লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ রাজপথে নেমে আন্দোলনের হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর সোনারপাড়া গ্রামের ডায়েরীয়ায় আক্রান্ত কলিমুল্লাহর স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। ওইদিন মাকে দেখার জন্য হাসপাতালে আসেন কলিমুল্লাহর মেয়ে সোনার পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী জোৎসনা আকতার। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে কয়েকজন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত হাসপাতালে অনধিকার প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জোৎসনা আকতার কে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে দুর্বৃত্তরা তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে হাসপাতালে নাইট গার্ড ও গ্রামবাসী ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীকে মুমুর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে।
এঘটনায় ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীর মা ছেনুয়ারা বেগম বাদী হয়ে এজাহার নামীয় একজন ও ৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে উখিয়া উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে গত মঙ্গলবার। এনিয়ে ৭ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টায় হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি জরুরী বৈঠক করে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে দ্রæত আসামীদের গ্রেপ্তার ও হাসপাতাল এলাকায় রাত্রিকালীন সময়ে পুলিশি টহল জোরদার করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাঈন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
সরেজমিন, ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীর বাড়ীতে দেখা যায়, পরিবারের সবাই চোখে মুখে আতংক ও হতাশার চাপ। জানতে চাওয়া হলে ধর্ষিতার মা ছেনুয়ারা বেগম জানান, সন্ত্রাসীরা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য হুমকি প্রদর্শণ করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় উখিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হানাদার মুক্ত দিবসের আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, আগামী ৩ দিনের মধ্যে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে আ’লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী দেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মিজবাহ উদ্দিন আহমদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। হাসপাতালে বাউন্ডারী লাইটিং সহ নানাবিধ সমস্যা বিদ্ধমান থাকায় এধরনের ঘটনা যেন পুণরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছে। ঘটনার পর ডাক্তার রবিউর রহমান রবি, ডাক্তার আরেফা মেহেরুন রুমি ও সিনিয়র স্টাফ নার্স বালিশীসহ ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়িত্বরত নার্স নিহারু চাকমা জানান, ঘটনার পর থেকে ডিউটি শেষে বাড়ী ফিরতে আমাদের ভয় লাগে।
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, ধর্ষণ মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।
You must be logged in to post a comment.