এস.এম.ছগির আহমদ আজগরী; পেকুয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ভোলা খালের রাবার ড্যামের ছিঁড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফলে, ছিদ্র হওয়া রাবার ড্যামের ফুটো দিয়ে অবাধে লবণাক্ত পানি প্রবেশের কারনে চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় চাষাবাদ চরম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়ন, বারবাকিয়া ইউনিয়ন ও টইটং ইউনিয়নে শুষ্ক মৌসুমের চাষাবাদ নিশ্চিতে খরস্রোতা মাতামুহুরী নদীর শাখা পানি পথ ভোলা খালে সরকারী অর্থ ব্যয়ে নির্মীত হয় রাবার ড্যাম। সম্প্রতি উক্ত রাবার ড্যামটি ছিদ্র হয়ে ফুঁটো হয়ে যায়। এতে গত সপ্তাহখানেক ধরে ভোলা খাল দিয়ে অবাধে প্রবেশ হতে থাকে সাগরের লবণাক্ত পানি। এ নিয়ে চলতি বোরো মৌসুমে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন ছাড়াও তৎসংলগ্ন বারবাকিয়া ও টইটং ইউনিয়নের বিপুল পরিমান চাষাবাদের বিস্তির্ণ জমিও হয়ে যায় লবণাক্ত পানিতে সয়লাব।
এনিয়ে চলতি মৌসুমের বোরো চাষাবাদ নিয়ে শত শত চাষীদের মাঝে চরম অনিশ্চতা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছে চাষীরা। সংবাদ পেয়ে এ প্রতিবেদক সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানতে চাইলে তারা জানান, ভোলাখালের পেকুয়া সদর ইউনিয়নের গোয়াখালী পয়েন্টে নির্মিত রাবার ড্যামটির একাধিক স্থানে ছিদ্র হয়েছে। এসব ছিদ্রের ফুঁটো দিয়ে গত কয়েক দিন ধরে অনবরত সাগরের লোনা পানি ঢুকে পড়ছে। ফলে, সাগরের লোনা পানির সাথে মিঠা পানির সংমিশ্রনে পানি পুরোপুরি লবণাক্ত হয়ে পড়ছে। কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, ভোলা খালের রাবার ড্যাম ছিদ্র হয়ে লোনা পানি ঢুকে পড়লেও কোন ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেনা পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে আমলে সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদের চেষ্টায় সরকারের বিপূল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে ভোলা খালে রাবার ড্যামটি স্থাপন করা হয়।
এরপর থেকে প্রতি বছর বোরো মৌসুমে রাবার ড্যামটি ফুলিয়ে সাগরের লোনা পানি প্রবেশ ঠেকিয়ে চাষাবাদ নিশ্চিত করা হয়। রাবার ড্যাম স্থাপনের পর থেকে স্থানীয় হাজার হাজার কৃষকরা দারুণভাবে উপকৃত হলেও গত কয়েক দিন ধরে রাবার ড্যাম ছিদ্র হয়ে তার ফুঁটো দিয়ে অবাধে সাগরের লোনা পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় চলতি মৌসুমে বোরের চাষাবাদ নিয়ে কৃষকরা চরম অনিশ্চয়তা আর হতাশার মধ্যে রয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবেহেলাকেই দায়ী করেছেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, ভোলা খালের রাবার ড্যামটি নির্মানের সময় কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদার সেসময়ের পানি উন্নয়নের বোর্ডের কক্সবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখা কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে নিম্নমানের রাবার এনে সেখানে স্থাপন করেন। তাই রাবার ড্যাম স্থাপনের কয়েক বছরের মধ্যেই তার রাবারের বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র হয়ে ফুঁটো দিয়ে লোনা পানি ঢুকে পড়েছে।
পেকুয়া উপজেলা কৃষক বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান, পেকুয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ও গোয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক এম. দিদারুল করিম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অবিলম্বে জরুরী ভিত্তিতে ভোলা খালের রাবার ড্যামের মেরামতসহ সাগরের লোনা পানি প্রবেশ বন্ধ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলীর সরকারী টেলিফোন নাম্বারে মঙ্গলবার ফোনে যোগাযোগ করলে বিষয়টি তাদের কেউ জানায়নি মন্তব্য করে বলেন, তবে, খোঁজ-খবর নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
You must be logged in to post a comment.