সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / ফিরে দেখা ২০১৬

ফিরে দেখা ২০১৬

এক বছর পার হলেও ৬ কোটি টাকার মাদক চুরির রহস্য উদঘাটন হয়নি : টেকনাফে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অফিসের কার্যক্রম নেই

গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :

কক্সবাজার জেলার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অফিসটির কার্যক্রম নেই বললে চলে। এতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাদক ব্যবসায়ী, মাদক পাচার ও মাদক সেবনকারীর সংখ্যা।

এদিকে প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার আটক করা বিভিন্ন প্রকার মাদক গুলো উক্ত অফিসে হস্তান্তর করার পর তাও আবার চুরি হয়ে যায়। এইভাবে দিনের পর দিন নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে এই মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসটি।

গত বিদায়ী ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে অফিসের তালা ভেঙ্গে প্রায় ৬ কোটি টাকার মাদক চুরি করে নিয়ে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনাফ  উপজেলার মাদক দ্রব্য অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার তোলপাড় সৃষ্টি হয়। চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনাফ থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েক জনকে আসামী করে মামলা রুজু করা হয়। এইভাবে দেখতে দেখতে পার হয়ে গেল একটি বছর। অথচ ৬ কোটি টাকা মাদক চুরির সাথে কারা জড়িত, কাদের ইশারায় টেকনাফ উপজেলার একটি গুরুত্বপুর্ণ অফিস থেকে এত বড় একটি ঘটনা ঘটে গেল। সেই তথ্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে একটি কথা উচ্চারণ হচ্ছে টেকনাফে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিস আছে কিন্তু  কোন কার্যক্রম নেই।

এই উপজেলার মাদক পাচার ও মাদক সেবনকারী হার দিন দিন বেড়েই যাওয়ায় সরকার মাদক দ্রব্য প্রতিরোধ করার জন্য এই উপজেলায় উক্ত অফিসটি চালু করেছিল। এই অফিসটি চালু হওয়ার পর থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মাদক দ্রব্য প্রতিরোধ করার জন্য শুরুতেই লোক দেখানো কিছু কাজ করে। তাদের এই অভিযান গুলোর মধ্যেও মাদক প্রতিরোধে বড় ধরনের কোন ভূমিকা দেখা যায়নি। সীমান্ত প্রহরী কোষ্টগার্ড সদস্যরা মাদক দ্রব্য প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য গুলো উক্ত অফিসে হস্তান্তর করে।

বিদায়ী বছর ২০১৬ সালে ৫ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার বিপুল পরিমান ইয়াবা ও বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য উক্ত অফিসে জমা রাখা হয়। কিন্তু এই অফিসের কর্মকর্তাদের অবহেলার কারনে সেই কোটি কোটি টাকার মাদক গুলোও চুরি হয়ে য্য়া। কিন্তু সেই চুরির ঘটনার দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত উক্ত ঘটনার সাথে কারা জড়িত সেই সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। এইভাবে চলছে টেকনাফ উপজেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অফিসের কার্যক্রম।

টেকনাফ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে আরো জানা যায়, টেকনাফ মাদক দ্রব্য অফিস থেকে ৬ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকার মাদক চুরি হওয়ার পর থেকে টেকনাফ মাদক দ্রব্য অফিসের কর্মরত কর্মকর্তাদের মাদক দ্রব্য প্রতিরোধে কোন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ীরা ও মাদক সেবনকারীরা টেকনাফ উপজেলা ও পৌর শহরের অলিতে গলিতে পাড়া, মহল্লায় তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাদক সেবনকারীর সংখ্যা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এলাকার যুব সমাজ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারের অভিভাবকরা।

উল্লেখ্য, বিদায়ী ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে টেকনাফ উপজেলা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আদলে ঘেরা টেকনাফ উপজেলা আওয়াতাধীন মাদক দ্রব্য অফিস থেকে প্রায় ২ লক্ষ ইয়াবাসহ প্রায় ৬ কোটি  টাকার বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য চুরি হয়ে যায়। এই ঘটনার সাথে কারা জড়িত, সেই সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনাফ থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

এব্যাপারে উখিয়া-টেকনাফের দায়িত্বে থাকা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের ইনচার্জ তপন কান্তি শর্মা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, এই উপজেলায় মাদক পাচার, মাদক ব্যবসা, মাদক সেবনকারী মাত্রা অনেক বেশি। কিন্তু যারা মাদক প্রতিরোধ করবে তাদের সংখ্যা খুবেই কম। উক্ত মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অফিসের জনবল আরো বাড়াতে হবে এবং বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ১১ মাস আগে আমাদের অফিস থেকে বিপুল পরিমান মাদক দ্রব্য চুরি হয়েছে। সেই ঘটনার সাথে কারা জড়িত ছিল এবং কাদের ইশারাই ঘটনাটি সংঘটিত করা হয়েছিল সেই সন্ধান এখনো আমরা খুঁজে পায়নি। তাই আমাদের দাবি, মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করলে ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের খুব সহজেই আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসতে পারবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ; কক্সভিউ ডট কম; https://coxview.com/water-distribution-lama-mayor-rafiq-30-4-24-1/

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ

লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম এর পক্ষ থেকে লামা বাজারে জনসাধারণের মাঝে নিরাপদ পানি ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/