হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী দেশটির রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘ রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের ধর্ষণ করেছে। তাদের ওপর অন্যান্য যৌন সহিংসতা চালিয়েছে। গত বছর রাখাইনে সরকারি বাহিনীর অভিযানকালে এসব অপরাধ সংঘটিত হয়। ওআইসির মহাসচিবের কাছে এসব কথা বলেছেন রোহিঙ্গা নারীরা। বিশ্বেও নানা দেশের নানা সংস্থার প্রতিনিধিদল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পরও দুরবস্থার কোনও সুরাহা না হওয়ায় হতাশ রোহিঙ্গারা। তাদেও নিজের দেশে ফেরত পাঠানো বা মিয়ানমারে তাদেও ওপর নির্যাতনের জন্য দায়িদের বিচারের বিষয়ে কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তারা। গত বছরের ৯ অক্টোবর থেকে মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত রাখাইনদের মংডু জেলার অন্তত নয়টি গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের সদস্যরা ধর্ষণ, গণধর্ষণ, আগ্রাসীভাবে দেহ তল্লাশি ও যৌন হামলায় অংশ নেন।
বন্দুকের নলের মুখেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন নারী জানিয়েছেন, প্রথমে সেনাবাহিনী তাদের বাড়ি ঘিরে ফেলে। এরপর ছেলে ও মেয়েদের আলাদা রাখা হয় পাশাপাশি মেয়েদের কয়েকঘন্টা করে অবরুদ্ধ রাখা হয়। সেনাবাহিনী কখনো গুলি চালাতো, নারী ও তরুণীদের ধর্ষণ করত। মংডু তামিল পাড়ার ২৫ বছর বয়সী রোহিঙ্গা তরুণী তফুরা বেগম ওআইসির মহাসচিব ইউসেফ বিন আহমাদ আল অথাইমিনকে জানান, নারীদের এক জায়গায় জড়ো করে এর পর বাঁশের লাঠি দিত মারধর করত, বুট দিয়ে লাথি মারত। এর পর আমি ও আমার বয়সী ১৫ জনকে আলাদা জায়গায় নিয়ে যায়। এর পর একর পর এক আমাদের ওপর নির্যাতন চলে। বুছিদং চৌপারাং গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী উম্মে সালমা বলেন, ২০ জন সৈনিক আমাদের বাড়িতে অভিযান চালায়। এর পর আমাকে ওআমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। তারা আমাকে একটি বাড়ির আঙ্গিনায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় দুই সৈনিক আমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে রেখেছিল। এরা আমার স্বামীকে আমার চোখের সামনে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে খুন করে।
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থাসহ দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। সর্বশেষ পরিদর্শনে আসেন ওআইসির মহাসচিব। তবে গুরুত্বপূর্ণ লোকদের এসব ক্যাম্প পরিদর্শনের পরও ভাগ্য ফেরেনি মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের।
কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে সরেজমিনে গেলে এ প্রতিবেদকের কাছে এ হতাশার কথা জানান রোহিঙ্গাদের অনেকেই।
You must be logged in to post a comment.