অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি হওয়ায় জিম্বাবুয়ের রিজার্ভ ব্যাংককে অবশেষে এক’শ ট্রিলিয়ন জিম্বাবুয়েন ডলারের নোট বের করতে হয়েছে। তবে বর্তমানে নোটটির কোন বাজার মূল্য নেই বললেই চলে। ২০০৯ সালেও দেশটি নিজেদের মুদ্রার পরিবর্তে অন্য দেশের মুদ্রাকে মূল্যমান হিসেবে ব্যবহার করতো। কারণ অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতির কারণে তাদের পাঁচহাজার শতাংশ মুদ্রা মূল্যহীন হয়ে পরলে দেশটিতে নিজেদের মুদ্রা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়।
জিম্বাবুয়ের রিজার্ভ ব্যাংক গভর্ণর জন মাগুদার মতে বিভিন্নধরনের মুদ্রা ব্যবহারের ফলে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে -২.৩ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরণের মুদ্রা ব্যবহার ফলে আমরা দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি অনেকাংশে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি এবং এটা যাদুর মতো কাজ করেছে।’ তবে এদিকে মুদ্রাস্ফীতির কারণে যে পরিমাণ এক’শ ট্রিলিয়ন ডলারের নোট ব্যবহার করা হতো তা এবছরেরই এপ্রিল মাস পর্যন্ত মার্কিন ডলারের সঙ্গে বিনিময় করা যাবে। তখন মার্কিন ডলারের তার মূল্য দাড়াবে মাত্র ০.৪০ মার্কিন ডলার।
এর আগে ২০০৯ সালে দেশটিতে যখন মুদ্রাস্ফীতি হার দাড়ায় ২৩ কোটি শতাংশ তখন জিম্বাবুয়ের রিসার্ভ ব্যাংক থেকে কোন রকম বিবেচনা ছাড়াই মার্কিন ডলারকে নিজেদের সরকারি মুদ্রা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দেয়। সেই কথা বলতে গিয়ে মাগুদা বলেন, ‘আমি অর্থনীতির এমন ধস আগে কখনোই দেখিনি, ওই সালটি সত্যিই ছিল আমাদের জন্য একটি বিরাট ক্ষত। আমরা আর এরকম অর্থনীতি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে চাই না।’
‘দেশে আগে থেকেই মুদ্রা ছাপিয়ে রাখতে হবে। কারণ বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম যেকোন সময় পরিবর্তন হতে পারে যার ফলে মানসিক চাপ বাড়ে আর পরিনামে দেখা দেয় মুদ্রাস্ফীতি। এ ব্যাপারে জিম্বাবুয়ের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘এটা সত্যিই ভয়ানক যখন আপনাকে এক কাপ কফি পান করার আগেই টাকা দিতে হয়। কারণ আপনি যদি অপেক্ষা করেন তাহলে মুহুর্তের মধ্যেই সেই কফির দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’
বর্তমানে জিম্বাবুয়ের মুদ্রা বিনিময়ের জন্য মার্কিন ডলারকে প্রাধান্য দেয়া হলেও অন্যরাও চাইলে তা পারবেন এমনটি বললেন, গভর্ণর মাগুদা। তিনি আরো বললেন, ‘আমদানি রপ্তানির জন্য চাইলে যে কেউ দক্ষিণ আফ্রিকার র্যান্ড এমনকি চীনের ইয়েনও ব্যবহার করতে পারবেন। মার্কিন ডলার হলো আমাদের রিজার্ভ মুদ্রা।’ এদিকে এবছরই জিম্বাবুয়ে তাদের নতুন মুদ্রার সঙ্গে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেবে যা শুধুমাত্র মার্কিন ডলারের সঙ্গে বিনিময় করা যাবে। এদিকে সম্প্রতি তাদের এক’শ ট্রিলিয়ন নোটকে তারা বণ্ড নোট হিসেবে ব্যবহার করবে যার পরিমান হবে ২০ মার্কিন ডলার।
সূত্র:banglamail24.com
You must be logged in to post a comment.