সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / যৌথবাহিনীর অভিযান জরুরী : উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প অস্ত্রধারীদের নিরাপদ আস্তানা

যৌথবাহিনীর অভিযান জরুরী : উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প অস্ত্রধারীদের নিরাপদ আস্তানা

Rohinga camp- Rafiq - Kutbazar 8-04-16 news 1pic f-1

রফিক মাহামুদ; কোটবাজার :

কক্সবাজারের উখিয়ার ক্রাইমজোন খ্যাত কুতুপালং শরনার্থী শিবিরে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারী ক্যাড়ারদের আনা গোনা আশংকাজনকভাবে বেড়েছে। ক্যাম্পের চার পার্শ্বে সীমানা প্রাচীর না থাকায় বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ সংঘটিত করে সন্ত্রাসীরা নির্ভিগ্নে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সাথে মিশে যাচ্ছে।

এ ছাড়াও ক্যাম্পে অবস্থানরত লক্ষধিক রোহিঙ্গা বিনা বাধায় ক্যাম্প থেকে বের হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করছে। তারা সুযোগ বুঝে দেশের গোপন তথ্য মিয়ানমারের আইন শৃংখলা বাহিনী সহ বহিঃ বিশ্বে পাচার করছে। অনেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার নাম ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরব, দুবাই, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, লন্ডন সহ ইউরোপ আমেরিকায় চলে গিয়ে অপরাধ সংঘঠিত করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। আবার অনেকেই মাদক, জাল টাকা, অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে কক্সবাজার জেলার আইন শৃংখলার চরম অবনতি সৃষ্টি করছে।

৩ এপ্রিল সন্ধায় কুতুপালং শরনার্থী কেম্পে একদল বন্দুকধারী সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে শরণার্থী ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নুরুল ইসলাম নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ক্যাম্পের অভ্যন্তরে উত্তেজনা ও আতংক বিরাজ করছে। ইতিপূর্বে ২০১৫ সালের ২৫ জুলাই সন্ধ্যায় বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা উক্ত নুরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছিল। এছাড়াও প্রতিনিয়ত শরণার্থী ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটলেও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের তেমন একটা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। যার কারণে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে। সচেতন মহল জরুরী ভিত্তিতে কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবী জানান।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ৭ বর্গ কিলোমিটার পাহাড় বেষ্টিত এলাকা নিয়ে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের অবস্থান। উক্ত ক্যাম্পের উত্তর পাশে জনবসতী, দক্ষিণে উখিয়া টিভি রিলে- উপকেন্দ্র, পূর্ব পার্শ্বে আরাকান সড়ক এবং কিছু দূরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এবং পশ্চিম পাশে সরকারী বনভূমি। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং পাহাড়ী এলাকায় এ ক্যাম্পের অবস্থান হওয়ায় এখানে নির্বিঘ্নে চলে মাদক ব্যবসা, নারী ব্যবসা, চোরাচালান, অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, দেশের গোপন তথ্য আদান প্রদান, নারী শিশু পাচার, হত্যা ও ডাকাতির পরিকল্পনা সহ নানা নাশকতামূলক কর্মকান্ডের মিশন ও নীল নকশা প্রনয়ন ক্যাম্পের অভ্যন্তর থেকে হয়ে থাকে। এলাকায় স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা তত্ত্বাবধানে কথিত চেয়ারম্যান সিন্ডিকেট এ সমস্ত অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাদের সাথে যুক্ত আছে এ দেশীয় একাধিক ডাকাত,অস্ত্রধারী ও সন্ত্রাসী গ্রুপ। তাদের হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্র।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, এসব সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহার করে থাকে দেশের বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ সহ ল্যাপটপ কম্পিউটার, শক্তিশালী ওয়াকিটকি। গত ২ বছর পূর্বে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যম্পে মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অভিযান পরিচালনা করেছিল। প্রাথমিক ভাবে কিছু কিছু মোবাইল ফোন আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকজন আটক করলেও পরবর্তীতে ইউএনএইচসিআর ও আইএমওর সহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্দনে অভিযান বন্ধ হয়ে যায়।

কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ১০,২৩০ জন রেজিষ্টার্ড ও প্রায় ৮০ হাজার আন-রেজিষ্টার্ড শরণার্থী বসবাস করে কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে। ক্যাম্পের চার পার্শ্বে সীমানা প্রচীর না থাকায় এসব রোহিঙ্গারা বিনা বাধায় তাদের ইচ্ছামত ক্যাম্প থেকে বের হয়ে মাত্র ২০ গজ দূরে আরাকান সড়কে চলাচলকৃত বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। নিয়ম রয়েছে, কোন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বের হলে ক্যাম্প ইনচার্জের লিখিত অনুমতি নিয়ে বের হতে হয়। কিন্তু এ ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা কেউ এ নিয়ম মানছে না।

অভিযোগ উঠেছে, ক্যাম্পের পাশে ১০০/১৫০ দোকান ও ৫/৬ টি ভিসিআর হল নিয়ে একটি বাজার থাকায় রোহিঙ্গারা বাজার করার নাম দিয়ে ক্যাম্পে অবস্থানরত নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজনকে ম্যানেজ করে এবং কৌশলে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বের হয়। এছাড়াও রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে সরকারি বনায়ন ও সামাজিক বনায়নের শত শত একর বনভূমি উজাড় করে লাকড়ি সংগ্রহ করে থাকে। এসব লাকড়ি ক্যাম্পে অবস্থানরত নিরাপত্তা বাহিনীর সামনে দিয়ে প্রবেশ করালেও তাদের ভূমিকা রহস্যজনক। যার কারণে কোটি কোটি টাকার বনজ সম্পদ উজাড় হয়ে যাচ্ছে।

সচেতন মহলের মতে, ক্যাম্পের চারপার্শ্বে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করলেও রোহিঙ্গারা বিনা বাঁধায় যত্রতত্র যাতায়াত করতে পারবে না।

এ ব্যাপারে উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মাহমুদুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। তবুও বিপুল পরিমান রোহিঙ্গা থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। ক্যাম্পের চেয়ে বস্তিতে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের বেপরোয়া জীবনযাপন করছে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ; কক্সভিউ ডট কম; https://coxview.com/water-distribution-lama-mayor-rafiq-30-4-24-1/

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ

লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম এর পক্ষ থেকে লামা বাজারে জনসাধারণের মাঝে নিরাপদ পানি ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/