Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / লামায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১২ ইউপি সদস্যদের অনাস্থা

লামায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১২ ইউপি সদস্যদের অনাস্থা

লামায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১২ ইউপি সদস্যদের অনাস্থা https://coxview.com/nurul-hossain-rafiq-17-04-20244/
লামার ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাং নুরুল হোছাইন চৌধুরী।

 

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :
বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাং নুরুল হোছাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে একইসঙ্গে ১২ ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাছে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেছেন। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ইউএনও কার্যালয়ে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন ইউনিয়নের পরিষদের সদস্যরা।


অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন ফাঁসিয়াখালী ইউপি সদস্য মংমেগ্য মার্মা (ইউপি সদস্য ১ ওয়ার্ড), কুতুব উদ্দিন মিয়া (ইউপি সদস্য ২ ওয়ার্ড), মোঃ হোছাইন মামুন (ইউপি সদস্য ৩ ওয়ার্ড), মোঃ আবু ওমর (ইউপি সদস্য ৪ ওয়ার্ড), আব্দু রহিম (ইউপি সদস্য ৫ ওয়ার্ড), মোঃ হেলাল উদ্দিন (ইউপি সদস্য ১ ওয়ার্ড), মোঃ জিয়াবুল (ইউপি সদস্য ৭ ওয়ার্ড), মোঃ ইসমাইল (ইউপি সদস্য ৮ ওয়ার্ড), আপ্রুসিং মার্মা (ইউপি সদস্য ৯ ওয়ার্ড), জোসনা আক্তার লিলি (ইউপি সদস্য ১, ২ ও ৩নং সংরক্ষিত মহিলা আসন), শাহানা আক্তার (ইউপি সদস্য ৪, ৫ ও ৬নং সংরক্ষিত মহিলা আসন) এবং আনাই মার্মা (ইউপি সদস্য ৭, ৮ ও ৯নং সংরক্ষিত মহিলা আসন)।


ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, বিগত ২০২১ সনের অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আবেদনকারীগণের নিজ নিজ এলাকার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাং নুরুল হোছাইন চৌধুরী নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বিগত ২৫/১০/২০২১ তারিখে আমাদের গেজেট প্রকাশিত হয়। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাং নুরুল হোছাইন চৌধুরী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে সংশ্লিষ্ট ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে সরকারীভাবে বরাদ্ধকৃত বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সরকারী বরাদ্ধের বিষয়ে কোন প্রকার তথ্য না দিয়ে সম্পূর্ণ গোপনীয়ভাবে ও প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে একক কর্তৃত্বে কোন প্রকার কাজ বাস্তাবায়ন ব্যতিরেখে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ ও অর্থ আত্মসাতে লিপ্ত হন। চেয়ারম্যান দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে বিভিন্ন ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী প্রকল্প সমূহ অর্থাৎ টিআর, কাবিটা, এল.জি.এস.পি-১, এল.জি.এস.পি-২, এল.জি.এস.পি-৩ প্রকল্প সমূহসহ ইউপি টোল-ট্যাক্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, জাতীয়তা সনদপত্র হতে আয়, জন্ম নিবন্ধন, প্রত্যায়ন পত্র ও রোহিঙ্গা নয় মর্মে প্রদত্ত সনদসহ বিভিন্ন খাত হইতে আয়ের টাকা কোন প্রকার অবগত বা অবহিত না করে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।


এছাড়া সরকারী বিভিন্ন প্রকল্পের কোন কাজ না করে আমাদের (ইউপি সদস্য) অজ্ঞাতে আমাদের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে উক্ত প্রকল্প সমূহের লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করেছেন। ইতিপূর্বে একাধিকবার সরকারী বরাদ্দকৃত বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে এবং উপরোল্লিখিত বিভিন্ন খাত হতে প্রাপ্ত আয় ও ব্যয়ের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনরূপ কর্ণপাত না করে আমাদের (আবেদনকারীগণকে) হুমকি ধমকি প্রদানে বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। ইতিপূর্বে চেয়ারম্যান ২০২১-২২ অর্থবছরে বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচীর আওতায় বরাদ্দকৃত ৮০ মেঃ টন চাউল, ২০ মেঃ টন গম (যাহার জিও নাম্বার- ২৯,০০,০০০০.২২৩, ০২,০০৫,২০২১-২২, তারিখ-২৩/০১/২০২২ইং) এর বিপরীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে উক্ত প্রকল্প সমূহের যাবতীয় বরাদ্দ সম্পূর্ণরূপে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া ইউনিয়নে বিভিন্ন সময়ে সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত আরো আনুমানিক ১৫০ মেঃ টন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন।


৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মুজিব শতবর্ষের উপহারস্বরূপ গৃহহীন মানুষের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত প্রতি ঘরের বিপরীতে বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট হতে ৩০ হতে ৫০ হাজার টাকা করে আদায় করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বর্তমানে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের সর্বজনসাধারণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ায় আমরা আবেদনকারীগণ একান্ত বাধ্য হয়ে সকলের মতামতের আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৩৯ ধারার বিধান মোতাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ পূর্বক যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ায় চেয়ারম্যান পদ হতে অপরাসণপূর্বক অব্যহতি প্রদানের নিমিত্তে আবেদন করেছি।


ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাং নুরুল হোছাইন চৌধুরী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগ করে দিতে রাজি না হওয়ায় সদস্যরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।’


এ ব্যাপারে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১২ জন ইউপি সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান মোহাং নুরুল হোছাইন চৌধুরী এর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেছেন। এই বিষয়টি বান্দরবান জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2018/10/Tharmameter.jpg

দেশে আরও ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

  অনলাইন ডেস্ক :দেশজুড়ে বইছে তাপপ্রবাহ। গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা। এ অবস্থায় দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ অব্যাহত ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/