সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / অপরাধ ও আইন / লামায় ১০ টাকা কেজি চাল বিতরণে অনিয়ম : অভিযোগ কার্ডধারীদের

লামায় ১০ টাকা কেজি চাল বিতরণে অনিয়ম : অভিযোগ কার্ডধারীদের

https://i0.wp.com/coxview.com/wp-content/uploads/2021/11/Aniom-Rice-Rafiq-30-11-21-2.jpg?resize=540%2C269&ssl=1

ফাইতং বাজার কেন্দ্র হতে তোলা ৩০ কেজি চালের বস্তার ছবি। যেখানে চাল আছে ২৮ ও ২৯ কেজি।

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :

পার্বত্য জেলার বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার হেলাল উদ্দিন ও নুরুজ্জামান হাওলাদার এর বিরুদ্ধে ১০ টাকা কেজি মূল্যের চাল বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায়, খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত হতদরিদ্রদের জন্য স্বল্পমূল্যের ১০ টাকা কেজি চাউলের প্রতি কার্ডধারীকে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার বিধান থাকলেও সেখানে ডিলাররা দীর্ঘদিন ধরে ওজনে কম দিচ্ছেন বলে অভিযোগ কার্ডধারীদের।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের সূত্র মতে জানা যায়, ফাইতং ইউনিয়নের দুইজন ডিলারের মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউনিয়নের ১ ও ২নং ওয়ার্ডের ১৫৪ জন কার্ডধারীদের ছিয়রতলী বাজার সেন্টারে ডিলার নুরুজ্জামান হাওলাদার ও ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের ৪৫৬ জন কার্ডধারীদের ফাইতং বাজার সেন্টারে ডিলার হেলাল উদ্দিনের মাধ্যমে চাল দেয়া হয়।

সরেজমিনে সোমবার (২৯ নভেম্বর) ফাইতং ইউনিয়নের ছিয়রতলী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, লাইন ধরে কার্ডধারীরা ৩০০ টাকা দিয়ে ৩০ কেজি সূলভ মূল্যের চালের বস্তা নিয়ে যাচ্ছে। এসময় চাল বিতরণ কেন্দ্রে ডিজিটাল মিটার দেখা যায়নি। কেন্দ্রে পরিমাপকৃত সেলাই করা ৩০ কেজি ওজনের চালের বস্তা স্তুপ করে রাখা হয়েছে। চাল বিতরণ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা এটা দেখতে পাশের এক দোকান থেকে ডিজিটাল মিটার এনে কয়েকটি ৩০ কেজি বস্তা মাপতে দেখা যায় বস্তা গুলোতে ২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯ কেজি চাল রয়েছে।

https://i0.wp.com/coxview.com/wp-content/uploads/2021/11/Aniom-Rice-Rafiq-30-11-21-1.jpg?resize=540%2C352&ssl=1

অপরদিকে, গত বুধবার (২৪ নভেম্বর) ফাইতং বাজারে ডিলার হেলাল উদ্দিনের কেন্দ্রে গেলে একই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। ৩০ কেজি বস্তায় পরিমাপ করে ২৯ ও সাড়ে ২৯ কেজি চাল থাকতে দেখা গেছে। অথচ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নিয়ম অনুযায় প্রতিটি বস্তার ওজন হওয়ার কথা ৩০ কেজি ৩০০ গ্রাম (চালের ওজন ৩০ কেজি ও বস্তার ওজন ৩০০ গ্রাম)। ডিলাররা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে প্রতিটি কার্ড থেকে প্রায় তিন থেকে দুই কেজি চাউল কম দেওয়া হচ্ছে।

ফাইতং কেন্দ্রে চাল নিতে আসা কার্ডধারী মিনুয়ারা বেগম বলেন, ৩০ কেজি চালের বস্তা বাড়িতে নিয়ে মাপলে ২৭ বা ২৮ কেজি চাল পাওয়া যায়। এছাড়া মোঃ ইদ্রিস, আবুল হোসেন, আবুল হাসেম ও সিরাজ খাতুন সহ অনেকে চাল কম দেয়ার বিষয়টি অবহিত করেন। এদিকে ছিয়রতলী বাজার কেন্দ্রে সরজমিনে গিয়ে কার্ডধারী কয়েকজনের সাথে আলাপকালে আবুল কাসেম (৬৫), মোঃ খোকন (৪৫), কাউছার (৩০), আরশাদ মোড়ল (৫৫) ও শেহনাজ বলেন, বিতরণকৃত চাল নিম্নমানের ও ওজন কম রয়েছে। প্রতিবস্তায় ৩/৪ কেজি করে চাল কম রয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বকা দিয়ে বলে, নিলে নাও না নিলে চলে যাও। এদিকে চাল বিতরণের সময় দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসারদের কেন্দ্রে দেখা যায়নি।

স্থানীয়রা বলেন, গত প্রায় চার বছর যাবৎ এই ভাবে ডিলাররা চাল কম দিয়ে আসছে। দুর্নীতিবাজ ডিলারদের পরিবর্তন করে নতুর ডিলার নিয়োগ করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে তারা। মুঠোফোনে কথা হয় ফাইতং কেন্দ্রের ট্যাগ অফিসার আনিচুল মোস্তফার সাথে।

তিনি বলেন, বস্তায় চাল কম আছে কিনা আমি জানিনা। কখনো বস্তা মেপে দেখিনি। আমার চাল বিতরণের সময় প্রায় থাকা হয়না। এই বিষয়ে ফাইতং বাজারের ডিলার হেলাল উদ্দিন বলেন, বস্তায় চাল কম আসে। যা আসে আমরা তা দিই। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে লামা-আলীকদম উপজেলার পুষ্টি মিশ্রণ চাল কল লুমাজ এগ্রো ফুডস এর মালিক মোঃ কদর আলী বলেন, আমরা ওজন করে ডিলারদের চাল দিই। চাল কম দেয়ার বিষয়টি ডিলাররা বলতে পারবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিলন চাকমা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে খুব শীঘ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়ম দুর্নীতি করা হলে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওতে উৎসবমুখর ভোটগ্রহণ : নারী ভোটারদের উপস্থিতি : অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ, ইসলামপুর ও ঈদগাঁও ইউনিয়নে ব্যাপক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/