মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা :
প্রযুক্তির অগ্রগতির ছোঁয়া লেগেছে পুরো বিশ্বে। বাংলাদেশও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর দিকে। তারই অংশ হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশের সেবাকে আরো জনমুখি করতে ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর চালু হয় জাতীয় জরুরী সেবা নম্বর ‘৯৯৯’ এর।
একজন নাগরিক যেকোনো দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলে জরুরী সেবা পেতে দেশের যেকোনো স্থান থেকে যে কেউ এই নম্বরে ফোন করতে পারেন। পুলিশের অধীনে এই কল সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। এই নম্বরে ফোন করে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা কিংবা এই সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এ কল সেন্টার চালু থাকে। যে কোনো ফোন থেকে বিনা মূল্যে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা যায়। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে লক্ষ্য করা যায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর যথেষ্ট অপব্যবহার হচ্ছে। অনেককে অতিতুচ্ছ বিষয় ও দুষ্টুমি করে এই সার্ভিসের অপব্যবহার করছে। এত তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ফোন করে, যা পরবর্তীতে মানুষের কাছে হাসির খোরাক হয়। তেমনি একটি ঘটনা সোমবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় লামা বাজারে ঘটে।
প্রত্যেক্ষদর্শী মোঃ আলমগীর, পিয়ারু, মোঃ লিটন কাজী বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা বাজারে পৌর মার্কেটে সোমবার সকাল ১০টায় শাহ মজিদিয়া কম্পিউটার দোকান খোলার সময় দোকান মালিক খেয়াল করেন দরজার লোহার গ্রিলের ফাঁকে একটি বিড়াল আটকে আছে। দোকানদার চাইলে নিজেরাই বিড়ালটি অবমুক্ত করতে পারতো। কিন্তু উৎসুক এক প্রত্যেক্ষদর্শী বমু বিলছড়ির মোঃ আলমগীর হুট করে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে। পরে ৯৯৯ এর তথ্য পেয়ে লামা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এসে বিড়ালটি উদ্ধার করে। কাজটি মানবিক কিন্তু এত তুচ্ছ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের আসার বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন নানাভাবে ট্রোল করতে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে “মশা মারতে কামান” এমন পোস্ট করে হাসাহাসি করতে দেখা যায়।
এই বিষয়ে ৯৯৯ এর তথ্যদাতা মোঃ আলমগীর বলেন, আমি ফোন করে তথ্যটা ৯৯৯-এ দিই। বিষয়টি বাড়াবাড়ি হলো কিনা ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘সরকারি লোকের কাজ কি তাহলে’।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, লামা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুদ্দিন।
তিনি বলেন, বিষয়টা ঠিক হয়নি। এত সামান্য বিষয়ে ৯৯৯-এ ফোন করে ফায়ার সার্ভিসকে আনা অযুক্তিক। মানুষ সব কিছু নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ৯৯৯ জাতীয় জরুরী সেবা হিসাবে ইতিমধ্যে দেশের মানুষের কাছে বিশ্বাসের একটি জায়গা করে নিয়েছে। মানুষ যে কোন সমস্যায় ৯৯৯-এ ফোন করে। আমরাও ২৪ ঘন্টা সেবা দিতে সচেষ্ট রয়েছি। কিন্তু মাঝেমধ্যে এমন কিছু ভুল ও বাজে তথ্য দিয়ে জাতীয় জরুরী সেবার অপব্যবহার ও সরকারি লোকজনকে হয়রাণী করা হয়। অনেকে বাড়ির বাজার করতেও ৯৯৯-এ ফোন দেয়। যা দুঃখজনক। নাগরিক হিসাবে প্রতিটি মানুষের দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
You must be logged in to post a comment.