সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / লামা পৌরসভার মিথ্যা সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে মেয়রের সাংবাদিক সম্মেলন

লামা পৌরসভার মিথ্যা সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে মেয়রের সাংবাদিক সম্মেলন

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :

লামা পৌরসভার মালিকানাধীন ১নং ওয়ার্ডের চাম্পাতলীস্থ কিছু জায়গা জবরদখল, বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার ও মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় লামা প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷

এসময় লামা পৌরসভার সকল নারী ও পুরুষ কাউন্সিলর, স্থানীয় সাংবাদিক ও পৌরসভার সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, লামা পৌরসভার মালিকানাধীন জায়গাটি দখল করে রাখা এবং এখানে মুরুং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হোষ্টেল নির্মাণের মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে পাহাড়ী-বাঙালীর সম্প্রীতি নষ্ট করার হীন অপচেষ্টা করার প্রয়াসের বিরুদ্ধে আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ উদ্দিন এর সন্তান আকতার উদ্দিন তপন লামা পৌরসভার মালিকানাধীন (গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ হতে হস্তান্তরিত) পুরাতন ভবন অবৈধভাবে দখল করে রাখা বিষয়ে লামা পৌরসভা কার্যালয়ের নথিতে রক্ষিত কয়েকটি প্রমাণক সমুহ তুলে ধরছি।

১। লামা পৌরসভা কার্যালয়ে সংরক্ষিত তথ্যসমূহ যাচায়ে দেখা যায়-ভবন বরাদ্দ পাওয়ার জন্য কোন আবেদন নেই। এমনকি ছায়াকপিও নেই। শুধুমাত্র ১ম পৌর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মেয়র তাজুল ইসলামের স্বাক্ষরিত মাসিক ভাড়া নামা চুক্তিপত্রের ছায়াকপি রয়েছে। চুক্তিপত্রের তারিখঃ ০১/১১/২০০৯ ইং। লামা পৌরসভা কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট জানতে চাওয়া হলে জানা যায়- চুক্তিপত্রটি দাপ্তরিকভাবে সম্পাদন করা হয়নি। বরং আকতার উদ্দিন তপন ও তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মেয়রের সাথে ব্যক্তিগতভাবে সম্পাদিত হয়েছে বিধায় চুক্তিপত্রের মূল কপি অত্র কার্যালয়ে নেই এবং পরবর্তীতে চুক্তিপত্রের ছায়াকপি কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। ফলে চুক্তিপত্রে উল্লেখিত সেলামীর ২ লক্ষ টাকা লামা পৌরসভার কোন হিসাবে জমা করা হয়নি এবং মেয়রের মৌখিক নির্দেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঝে মাঝে মাসিক ভাড়া নিতে বাধ্য হয়েছেন।

২। ২য় পৌর পরিষদ ক্ষমতা গ্রহণের পর ২৪/১২/২০১২ খ্রিঃ অনুষ্ঠিত ১৭ তম মাসিক সাধারণ সভায় তৎকালীন ০১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আবু তাহের কর্তৃক এতদবিষয়ে আপত্তি উত্থাপিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন যে, ভবন বরাদ্দ ও সংস্কার বিষয়ে কোন দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়নি। বিধিমতে ভবন সংস্কারের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী কর্তৃক নকশা ও প্রাক্কলন প্রণয়ন পূর্বক মাসিক সাধারণ সভায় অনুমোদিত হতে হয়। কিন্তু আকতার উদ্দিন তপন অবৈধভাবে কর্তৃপক্ষে এড়িয়ে ব্যক্তিগতভাবে ভবনটি সংস্কার করে পরবর্তীতে কয়েক লক্ষ টাকা জামানত দাবি করেছেন। ফলশ্রুতিতে বেদখল হয়ে যাওয়া ভবনটি উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উক্ত মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। উক্ত সিদ্ধান্তে প্রেক্ষিতে ২৯/০৭/২০১৩ খ্রিঃ পৌরসভার মালিকানাধীন পুরাতন ভবনের অবৈধ দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য চূড়ান্ত পত্র দেওয়ার হয়েছিল। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষকে অবমূল্যান করে ভবনের দখল ছেড়ে দেননি। এমনকি এতদবিষয়ে পৌরসভায় কোন লিখিত জবাব দাখিল করেননি।

৩। আকতার উদ্দিন তপন পরবর্তীতে পরিত্যক্ত বাসা পুনরায় স্বীয় বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। আবেদন পত্রটি’র অত্র কার্যালয়ের গ্রহণ নং: ১৯৯, তরিখঃ ১০/০৮/২০১৪ খ্রিঃ। পৌরসভা কার্যালয়ে এতদবিষয়ে অবগত কর্মচারীরা জানান- আবেদনটি তৎকালীন মেয়র মোঃ আমির হোসেন কর্তৃক সভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়ে স্বাক্ষরের পর তৎক্ষণাৎ মেয়রের মৌখিক নির্দেশে আবেদনটি আকতার উদ্দিন তপন ফেরত নিয়ে যান। ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ার ফলে জানমালের ঝুকি থাকায় এবং আবেদনকারী কর্তৃক আবেদন ফেরত নেওয়ায় এতদবিষয়ে সভায় কোন আলোচনা হয়নি।

৪। ৩য় পৌর পরিষদ ক্ষমতা গ্রহণের পর আকতার উদ্দিন তপন কর্তৃক পৌরসভার মালিকানাধীন পরিত্যক্ত ভবন অবৈধভাবে দখল করে রাখার বিষয়টি অবগত হলে জনস্বার্থে লামা পৌরসভার মালিকানাধীন জায়গা ও ভবনের অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য পূর্ববর্তী মেয়রের পত্র সমূহ অনুস্মরণ পূর্বক এবং বিধি মোতাবেক লামা পৌরসভার মালিকানাধীন জায়গা ও ভবনের অবৈধ দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য আকতার উদ্দিন তপনকে ৩য় পৌর পরিষদ কর্তৃক চূড়ান্ত পত্র দেওয়া হয়েছিল। পত্র প্রাপ্তির পর তিনি ২য় পৌর পরিষদের মেয়রের সাথে সম্পাদিত চুক্তি পত্রের ছায়াকপি এবং পূর্বে ফেরত নেওয়া আবেদনের ছায়াকপি দাখিল করেন।

৫। আলোচ্য জায়গাটি লামা পৌরসভা স্থাপিত হওয়ার পর “দি ডিক্লারেশন এন্ড অল্টারেশন অব মিউনিসিপ্যালিটিস রুলস্” এর ৬ ধারা মতে তৎকালীন ১নং গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু বাথোয়াইচিং মার্মা ও পৌরসভার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল-এর মধ্যে ১নং গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মালিকানাধীন ১ টি ভবন, ১ টি দোকান, ১ টি গোডাউন, ১ টি বাসা ও ০.৯৪ একর জমি সহ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার মাধ্যমে লামা পৌরসভার মালিকানায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল।

৬। আকতার উদ্দিন তপন কর্তৃক অবৈধভাবে দখলকৃত জায়গায় ম্রো ছাত্রবাস নির্মাণ করা হচ্ছে মর্মে বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষের আলোচনা সমূহ আমার কর্ণগোচর হয়েছে এবং কয়েকটি পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোছর হয়েছে। বাস্তবতা হলো- পরিকল্পনাধীন ম্রো ছাত্রাবাস নির্মাণের জন্য নির্ধারিত জায়গাটি জনাব আকতার উদ্দিন তপনের অবৈধভাবে দখলকৃত ভবন থেকে আনুমানিক ১০০ ফুট দূরে। আকতার উদ্দিন তপন কর্তৃক অবৈধভাবে দখলকৃত জায়গায় ম্রো ছাত্রবাস নির্মাণ করার খবরটি ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনাকে নষ্ট করা, অবৈধভাবে লামা পৌরসভার জনগণের সম্পদ আত্মসাতের কাজে সহযোগিতা করা ও পাহাড়ী-বাঙালী সম্প্রীতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে একটি কুচক্রি মহল কর্তৃক ছড়ানো হচ্ছে।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

লামায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত, কক্সভিউ ডট কম, https://coxview.com/legal-aid-day-rafiq-27-4-2024-2/

লামায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত

  মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম :‘স্মার্ট লিগ্যাল এইড, স্মার্ট দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/