সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / সাড়ে ৪ বছর ধরে শাহপরীর দ্বীপের দেড় হাজার একর জমিন পানির নিচে

সাড়ে ৪ বছর ধরে শাহপরীর দ্বীপের দেড় হাজার একর জমিন পানির নিচে

গিয়াস উদ্দিন ভুলু; টেকনাফ :

সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে লবণ উৎপাদন থেকে বঞ্চিত শাহপরীর দ্বীপের দেড় হাজার একর জমিনের লবণ চাষিরা। দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর ধরে এই সমস্ত জমিনের লবণ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে বছরের পর বছর হতাশার প্রহর গুনছে এই এলাকার লবন চাষিরা। এখন লবণ চাষের ভরা মৌসুম তাই টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লবন উৎপাদন করার জন্য চাষিরা পুরোদমে মাঠে নেমেছে। দিনে রাতে চলছে চাষিদের লবণ উৎপাদনের কাজ। অথচ দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর এই লবন উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হত ভাগ্য শাহপরীর দ্বীপের লবণ চাষিরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১২ সালে জুলাই মাসে বঙ্গোপসাগরের পানির তোড়ে ভেঙ্গে যায় শাহপরীরদ্বীপের বেড়ীবাঁধ। পানির জোয়ারে তলিয়ে যায় শত শত বাড়ি-ঘড়, বিভিন্ন প্রকারের ফসলি জমি। এরপর থেকে প্রায় দেড় হাজার একর লবণ চাষের জমিন তলিয়ে আছে পানির নিচে। এতে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ  টাকার লবণ চাষ থেকে বঞ্চিত রয়েছে এই দ্বীপের সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় লবণ চাষিদের কাছ থেকে খবর নিয়ে আরো জানা যায়, প্রতি বছর লবণ চাষের এই ভরা মৌসুমে পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া লবন চাষের এই জমিন গুলো থেকে উৎপাদন হত লক্ষ লক্ষ টাকার লবণ। এই জমিতে লবণ চাষ করে সংসার চালাতো প্রায় ১৫ হাজার পরিবার। কিন্তু দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর ধরে লবণ উৎপাদন বন্ধ থাকায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।

যতই দিন যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরের পানির জোয়ারে তলিয়ে যাচ্ছে শাহপরীর দ্বীপ ও সাবরাংয়ের নতুন নতুন এলাকা গুলো। এদিকে বেড়িবাঁধ পুর্ণ নির্মাণ করার জন্য সরকার ১০৬ কোটি বরাদ্ধ দিয়েছে। তবে এই কাজটি এখনো শুরু হয়নি। ২০১৭ সালের শুরুতেই এই উন্নয়নের কাজটি চালু করা হবে বলে জানা গেছে।

অপরদিকে টেকনাফ উপজেলার অন্যন্যা এলাকায় লবণ চাষের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার একর জমিতে লবণ চাষের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে লবণ উত্তোলন শুরু হয়েছে। গত বছর এই সমস্ত এলাকার লবণ চাষিরা  উৎপাদিত লবণের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আয় করেছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এই টাকা আয় করে হাসি ফুটেছে চাষীদের মুখে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এই হাসি খুশি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শাহপরীরদ্বীপের লবন চাষিরা। এতে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। বেড়িবাধঁটি ভাঙ্গা থাকার কারনে এই বছরও লবণ উৎপাদন করতে পারছে না চাষিরা।

বিসিক লবণ শিল্প  তথ্য সুত্রে জানা যায়, টেকনাফ উপজেলায় ৫ হাজার ১৮ একর লবণ চাষের জমি  রয়েছে। গতবছর ৪ হাজার ৭ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়েছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নে লবন উৎপাদন হয়েছে ১০৭৪ একর জমিনে, হ্নীলা ইউনিয়নে ১৫৪৩ একর জমিতে লবন উৎপাদন করা হয়েছে। টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার ২৪৭ একর জমিতে লবন চাষ করা হয়েছে। সাবরাং ইউনিয়নে ১০০৮ একর জমি থেকে লবণ উৎপাদন করা হয়েছে। গত বছর এই উপজেলা থেকে প্রায় ১ লাখ ৪ হাজার মেঃ টন লবণ উৎপাদন করা হয়েছিল। এই বছরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ওই সমস্ত লবণ চাষের জমিন থেকে আরো বেশি লবণ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

সুত্রে আরো জানা যায়, ভারত থেকে লবন আমদানি বন্ধ থাকলে এই এলাকার লবন চাষিরা আগের চেয়ে লবণের দাম তিন গুণ বেশি পাবে। তার পাশাপাশি চাষীদের পরিবারে বয়ে আসবে বিরাট সফলতা।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওতে উৎসবমুখর ভোটগ্রহণ : নারী ভোটারদের উপস্থিতি : অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ, ইসলামপুর ও ঈদগাঁও ইউনিয়নে ব্যাপক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/