উখিয়ায় চলমান হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থার কর্মসূচির আওতায় হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ৪০ দিনে ২৮ লক্ষ টাকা লুটপাটের আশংকা করা হচ্ছে। এ ইউনিয়নে ৯টি প্রকল্পের পূর্ব নির্ধারিত সংস্কার কাজ বাস্তবায়নের কথা থাকলেও সরেজমিন এলাকা ঘুরে অধিকাংশ প্রকল্পে শ্রমিকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। একটি প্রকল্পে নামমাত্র কয়েকজন শ্রমিক থাকলেও তারা অলসাবস্থায় সময় কাটাতে দেখা গেছে।
স্থানীয় গ্রামবাসীর অভিযোগ, এ ইউনিয়নে কর্মসৃজনের নামে হরিলুট চলছে। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছে বলেও সাংবাদিকদের ব্যক্ত করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সাড়ে ৩ শত শ্রমিক নিয়োগের কথা খাতা কলমে লিখা থাকলেও বাস্তবে তা নেই। প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বরত সভাপতি শ্রমিকদের কাজে না দিয়ে ওই টাকা অভিনব কৌশলে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ছায়াখোলা ব্রিজ হইতে চেহের আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার প্রকল্প ঘুরে কোন শ্রমিক দেখা যায়নি। এ প্রকল্পে ৪০ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও গ্রামবাসী বলছে কর্মসৃজনের নামে হরিলুট চলছে। একই ইউনিয়নের ৬৩ জন শ্রমিকের কর্মস্থল হলুদবনিয়া আব্দুল নবির বাড়ি হইতে করাচিপাড়া ও পশ্চিম হলদিয়া কবরস্থান হইতে ডাকুয়া পাড়া বক্কর বলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজে কোন শ্রমিকের দেখা মেলেনি।
মুঠোফোনে প্রকল্প সভাপতি আবুল কালাম মেম্বারের সাথে আলাপ করে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, খালের ভাঙ্গন সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। তার কথামতো উল্লেখিত স্থানে গিয়েও কোন শ্রমিককে কর্মরত অবস্থায় পাওয়া যায়নি। পরে তার সাথে আবারো মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
একইভাবে হলদিয়া পশ্চিম বড়ুয়াপাড়া সমির বড়ুয়ার বাড়ি হইতে বিভীষন শর্মার বাড়ী হইয়া শশ্মান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ ঘুরে দেখা যায়, ১৩ জন মহিলা পুরুষ অলসভাবে বসে আছে। জানতে চাওয়া হলে প্রকল্প সভাপতি স্বপন শর্মা রনি জানান, অন্য একটি প্রকল্পে বাদ-বাকী শ্রমিকেরা কাজ করছে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হলদিয়াপালং ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন জানান, হলদিয়াপালং ইউনিয়নে বাস্তবায়নাধীন কর্মসৃজনে নিয়োগকৃত শ্রমিকের টাকা লুটপাটের মহোৎসব চলছে। স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আমিনুল হক আমিন জানান, হলদিয়াপালং ইউনিয়নে বাস্তবায়নাধীন কর্মসৃজন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবিহিত করা হয়েছে।
হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, তার ইউনিয়নে কর্মসৃজন প্রকল্পের শতভাগ কাজ চলছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সম্প্রতি এ উপজেলার কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, যেসব প্রকল্পে শ্রমিকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি বা নির্ধারিত শ্রমিকের চাইতে নগন্য সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে টাকা লুটপাটের পায়তারা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
You must be logged in to post a comment.