বাংলাদেশের মানুষ অন্য কোন সাপের নাম যা জানলেও কালনাগিনী সাপের নাম খুব ভালভাবেই জানে। এই কালনাগিনীর পরিচিত গ্রামের আনাচে কানাচে থেকে শুরু করে শহরের অলি গলি সব জাগাতে।
এর বড় কারণ হল কালনাগিনী বাংলাদেশের সাপের সিনেমা বা ছবি গুলির সবচেয়ে বড় চরিত্র। কালনাগিনীর প্রেম, নাগ নাগিনী ইত্যাদি অনেক ছবি বানানো হয়েছে কালনাগিনীর নামে। বেহুলা লখিন্দর এর কাহিনীতেও আছে কালনাগিনীর বড় চরিত্র।
কালনাগিনীর তীব্র বিষ ও মানুষ মৃত্যু নিয়ে নানান আজগুবি কল্প-কাহিনী সমাজে থাকলেও এরা আসলে নির্বিষ সাপ। এদের কামরে মানুষ মারা যাওয়াতো দূরের কথা সামান্য ব্যথাও হয়না। প্রকৃতপক্ষে কালনাগিনী বলে যেসব সাপকে দেখানো হয় সেগুলি কোনটাই কালনাগিনী নয়। সেগুলি হল গোখরা বা কোবরা। কালনাগিনী বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর সাপগুলির মধ্যে একটি। কালো-লাল-হলুদ মোজাইকের সাপটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি নিরহী ও শান্ত।
যারা রাস্তার ধারে সাপের খেলা দেখেছেন তারা প্রায় সময় এই সাপ দেখে থাকবেন। সাপুড়ে সবাইকে বলে হাতে টাকা নিয়ে সামনে ধরতে এবং এই সাপ যার হাতে নামবে (টাকার নোট যত বেশী) সে ভাগ্যবান ও তার টাকা নিয়ে নিবে। এরপর একটি ছোট সুন্দর সাপ হাতে নিয়ে মানুষের হাতে নামাতে থাকেন। যেই সাপ সবার হাতে হাতে নামিয়ে তিনি এই টাকা নেন এটা হল সেই কালনাগিনী সাপ।
ঢাকা শহরে আমি বেঁধে মেয়েদের হাতে এই সাপ অনেকবার দেখেছি তারা হঠাত্ পথচারী মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে এই সাপ দেখিয়ে টাকা নেয়।
বাংলায় কালনাগিনী বললেও ইংরেজিতে এই সাপের নাম Golden tree snake or ornate flying snake এবং বৈজ্ঞানিক নাম Chrysopelea ornata। যার বাংলা হয় উড়ন্ত সাপ। এদের নাম flying snake হলেও এরা আসলে উড়তে পারে না। তবে এক গাছ থেকে লাফিয়ে বা গ্লাইডিং করে অন্য গাছে যেতে পারে। টিকটিকি, ইঁদুর, গিরিগিটি এদের প্রধান খাবার ও পোকামাকড় ও খেয়ে থাকে। মার্চ মাসে এরা ৬-১২ টি ডিম পাড়ে যা থেকে দুইমাস পর বাচ্চা ফুটে।
সূত্র:allanimalshere.blogspot.com
You must be logged in to post a comment.