নিজস্ব প্রতিবেদক; ঈদগাঁও :
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে খাল দখল করে গড়ে তুলছে দোকান-পাঠ, বসত বাড়ীসহ নতুন নতুন স্থাপনা। দেখার যেন কেউ নেই। এক সময়ের নৌকা চলাচলের সেই খালের স্মৃতিচিহ্ন বলতে কিছুই নেই। দখলের মহোৎসব থামছেনা কোনভাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব থাকায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। খালের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে বলেও শংকা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে বিহীন ব্যবস্থাসহ দখলের থাবা থেকে খালকে উদ্ধার করার দাবী এলাকাবাসীর।
প্রবীন ব্যক্তিরা জানান, এই খাল দিয়ে এক সময়ে পাল তোলা নৌকা চলাচল করছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রভাবশালী চক্রের কালো থাবায় খালের অধিকাংশ পয়েন্টে দখল করে দোকান পাঠ ও ঘরবাড়ী তৈরী করছে। এমনকি ঐতিহ্যময় খালের অস্তিত্ব বিলুপ্তির পথে। কালের পরিক্রমায় খালের বুকে এখন পাকা-আধা পাকাসহ দালানের মহাসমারোহ। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি একসময় খাল ছিল। একের পর এক দখলের কারণে এই খাল এখন নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে মরা খাল উপাধি লাভ করছে। মেহেরঘোনা জল নাসী যেটি উত্তর-মধ্যম-দক্ষিণ মাইজ পাড়া হয়ে চৌফলদন্ডীর বুক চিরে মহেশখালী চ্যানেল দিয়ে সাগরে গিয়ে মিলিত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমান সময়ে খাল বেদখল, পানি ও মাছ শূন্য। ক্ষীণ ধারা বয়ে যাওয়া খালে এখন গড়ছে দোকান পাঠসহ পাকা দালান। বৃহত্তর মাইজ পাড়ার খালটি সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে গেছে। কেউ করছে খালের পাশঘেঁষে দালান, কেউ করছে দোকান। ফলে খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া এখন মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া এ ভরা খালের উপরে সবজি চাষাবাদ করে টিনের বেঁড়া দিয়ে ঢেকে ফেলে খালের একটি অংশ। মূল অংশটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। যাতে, বর্ষা মৌসুমে পানি সুষ্ঠুভাবে চলাচল করতে না পারায় পানি রাস্তা বা বাড়ীঘরে চষে বেড়ায়। খালের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে প্লাবিত হয়ে হাটাচলাতো দুরের কথা, ফসলসহ ঘর বাড়ির ক্ষতি হয়ে থাকে।
জানা যায়, বিগত ৩/৪ বছর পূর্বে স্কেবেটর দিয়ে মাইজ পাড়ার খালটি খনন করা হয়েছিল। খাল খননের কয়েক বছর যেতে না যেতেই আবারো পূর্বের কায়দায় দখল মেতে উঠছে কতিপয় চক্ররা। মাত্র দুয়েকটি অংশ ছাড়া সব পয়েন্টে দখল করে গড়ে নানা স্থাপনা। নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে অনেক ফসলি জমি সেচের অভাবে অনাবাদী পড়ে থাকতে হয়।
দ্রুতসময়ে দখলের থাবা থেকে খাল দখলমুক্ত করে খনন করা না হলে অদূর অবিষ্যতে খালের স্মৃতিচিহ্নও খোঁজে পাওয়া যাবেনা বলে মনে করেন অনেকেই। স্বেচ্ছাচারিভাবে নদীর তীর ভরাট করে দোকান পাঠ, দালানসহ ঘরবাড়ী করা হয় নদীর উপরে। পানির প্রবাহ হারিয়ে বর্তমানে খালটি মুমুর্ষূ দশায় ও দখলদারিত্ব হয়ে যাচ্ছে। নানামূখী অব্যবস্থাপনার কারণে পানি প্রবাহ হারানো নদী এভাবে দখলে চলে যাচ্ছে। তদন্ত পূর্বক দখলে থাকা খাল উদ্ধারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের গনদাবী বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল।
ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলমের মুঠোফোনে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
You must be logged in to post a comment.