সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / এবার ‘আনসার আল ইসলামের’টার্গেট যারা

এবার ‘আনসার আল ইসলামের’টার্গেট যারা

Ansar Al Islam Next Targetব্লগার রাজীব হায়দার থেকে থেকে নীলাদ্রী হত্যা। এখনো কোনো হত্যারই কুলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তবে এই প্রায় সবগুলো হত্যাকাণ্ডেরই দায় স্বীকার করেছে `আনসাররুল্লাহ বাংলা টিম’; যাদের আলকায়েদার আদলের ‘আদর্শিক জঙ্গি গোষ্ঠী’বলে আসছে পুলিশ। সর্বশেষ গেল শনিবারে ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যাকাণ্ডেরও দায় স্বীকার করেছে ‘আনসার আল ইসলাম’নামে এক জঙ্গি সংগঠন। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় নিজেদের আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ দাবি করে তাদের পরবর্তী ‘টার্গেট’কারা হবে তারও একটি তালিকা দিয়েছে।

বিবৃতিতে ‘কে হবে আমাদের পরবর্তী টার্গেট’এমন শিরোনামে আট ধরনের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পরবর্তী সময়ে ‘টার্গেট’হিসেবে উল্লেখ করেছে আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ। তাদের মধ্যে রয়েছে আল্লাহ, রাসুল ও ইসলামকে ‘হেয়কারী ও কটূক্তিকারী’ব্যক্তি, কটূক্তিকারীদের ‘বুদ্ধি-পরামর্শ’ও অর্থ দিয়ে ‘সাহায্যকারী ও রক্ষাকারী’ ব্যক্তি, ইসলামী শরীয়তের নিয়ম-কানুনে ‘বাধা প্রদানকারী’ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।’

কারো নাম উল্লেখ না করে বিৃবৃতিতে তারা দাবি করেছে, এরা ‘হতে পারে’বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা। বলা হয়েছে, কোনো এলাকার মেয়র, মোড়ল ও মাতব্বর; কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান; কোনো বিচারক, আইনজীবী ও চিকিত্সক। আর একই সাথে ‘আতঙ্কের’তীর ছুড়ে দেওয়া হয়েছে, কোনো গল্পকার, ঔপন্যাসিক, কবি, বুদ্ধিজীবী, কোনো পত্রিকার সাংবাদিক ও সম্পাদক; নাট্যকার, প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পীদের দিকেও।

বিবৃতিতে আনসার ইসলাম বলেছে, যারা নিজেদের বক্তৃতা বা বিবৃতির মাধ্যমে ইসলামী শরীয়তের বিরোধিতা করছে, ইসলামী শরীয়তকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে, যারা এই মুসলিম সমাজে বিভিন্ন প্রকার নগ্নতা-বেহায়াপনার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যারা এদেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি-অর্থনীতিতে থেকে ইসলামী শরীয়তের ‘অবশিষ্টাংশটুকুও’ছেটে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত এবং যারা দ্বীন ইসলামের আলোকে ‘নিভিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টায়’ লিপ্ত তাদেরও পরবর্তী টার্গেট বলে উল্লেখ করেছে আনসার আল ইসলাম।

যারাই লেখনী, কথা ও কাজের মাধ্যমে আল্লাহ, রাসুল ও দ্বীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এমন সব ‘মুরতাদ’ও ‘ইসলামের শত্রু’ই তাদের টার্গেট হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, কোনও সাধারণ মুসলমান তাদের টার্গেট নয়। কোনও সাধারণ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কিংবা আল্লাহর দ্বীনের সঙ্গে শত্রুতা করছে না তারাও তাদের টার্গেট নয়।

এদের সম্পর্কে পুলিশ বারবার বলে আসছে, ছোট ছোট লক্ষ্যবস্তু ঠিক করে নিয়মিত বিরতিতে ‘জঙ্গিদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রুপ’এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। পুলিশ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে আসছে, এরা আল কায়েদা নয়, তবে কারো কারো মধ্যে এমন আদর্শিক বিশ্বাস থাকতে পারে।

শনিবার রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে শনিবার জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর হামলা করা হয় ব্লগার অভিজিত্ রায়ের বইয়ের আরেক প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল, তারেক রহিম এবং সুদীপ কুমার বর্মন ওরফে রণদীপম বসু নামে তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।

ব্লগার খুনের যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আহমেদ রাজীব হায়দারকে খুনের মধ্যে দিয়ে। এরপর ২০১৫ সালে খুন করা হয় চারজনকে। এদের মধ্যে অভিজিত্ রায় ২৬ ফেব্রুয়ারি, ওয়াশিকুর রহমান বাবু ৩০ মার্চ, সিলেটে অনন্ত বিজয় দাশ ১২ মে এবং ৭ আগস্ট নীলাদ্রি নীল হত্যার শিকার হন। এদের সবাইকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে একই কায়দায় হত্যা করা হয়।

শনিবার একই কায়দায় খুন করা হয় ব্লগার অভিজিত্ রায়ের বইয়ের প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে। এই সবগুলো ঘটনায় দায় কোনো না কোনোভাবে স্বীকার করেছে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা’টিম। তদন্তে এমন বিষয় উঠে এসেছে বলে বারবার দাবি করেছে পুলিশ। যদিও চলতি বছরের ২৫ মে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার।

২০০৭ সালে জন্ম নেয় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে ব্লগার রাজীব হায়দারকে হত্যার মধ্য দিয়ে। আনসারুল্লাহকে এ দেশে চতুর্থ প্রজন্মের জঙ্গী সংগঠন বলে মনে করা হয়। প্রথম প্রজন্মের জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামি বাংলাদেশের (হুজি-বি) জন্ম বিগত শতাব্দীর আশির দশকের শেষ দিকে। আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী যুদ্ধে অংশ নেওয়া এদেশীয় মুজাহিদরা এটি প্রতিষ্ঠা করে। এর এক দশক পর জন্ম হয় দ্বিতীয় প্রজন্মের জঙ্গী সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি)।

একুশ শতকে এসে এ দেশে কার্যক্রম শুরু করে আন্তর্জাতিক সংগঠন হিযবুত তাহরির। এটিকে এ দেশে তৃতীয় প্রজন্মের জঙ্গী সংগঠন বলে মনে করা হয়। হিযবুত তাহরিরকে জঙ্গী সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালের ১০ অক্টোবর নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপরও সংগঠনটির তত্পরতা বন্ধ হয়নি। প্রায় প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর কোনো না কোনো মসজিদের সামনে তারা ছোটখাটো সমাবেশ করে এবং তার সচিত্র সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠায়।

প্রিয়ডটকম,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/