সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / কক্সবাজারের অসহায় মানুষের সহায় রাজশাহীর হায়দার

কক্সবাজারের অসহায় মানুষের সহায় রাজশাহীর হায়দার

দীপক শর্মা দীপু; কক্সভিউ :

কক্সবাজারে কোন মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে শারীরিকভাবে পঙ্গু হলে বা শারীরিক বিকৃতি হলে তার সম্পূর্ণ চিকিৎসার ভার নিতে এগিয়ে এসেছেন রাজশাহীর একজন মানবিক মানুষ এ.এস.এম হায়দার।

কক্সবাজারের যারা চিকিৎসার অভাবে জীবনের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন তারা বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়ে জীবনের আশা ফিরে পেয়েছেন। ইতোমধ্যে ১০৫ জনের জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন করে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা হয়েছে। যারা প্রত্যেকে ছিলেন অস্বচ্ছল, দরিদ্র। কক্সবাজারের অসহায় মানুষের সহায় রাজশাহীর হায়দার শুধু চিকিৎসা নয় অনেক দরিদ্র পরিবারকে সহায়তাও করছেন। তিনি জানান দিতে চান- ‘দেশপ্রেমিক ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে দেশের অসহায় মানুষের জন্য বিদেশীদের কাছে  হাত পাততে হবেনা। নিজেদের দেশের মানুষের বিপদে নিজেরা এগিয়ে আসলে পরম মানসিক শান্তি পাওয়া যায়।’

‘আগুনের পুড়ে যাওয়া অচল ডান হাত জীবনেও ভালো করতে পারবো না এই ভেবে জীবন চালিয়ে নিই। ডান হাত অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় দূর্বিসহ হয়ে উঠে জীবন। বাবা দিনমজুর কৃষক হওয়ায় টাকার অভাবে যেখানে দু’মুঠো ভাত জুটাতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে হাত ভালো করার জন্য চিকিৎসা করানো সেটা কল্পনাও করিনি। খবর পেলাম বিনা খরচে পুড়ে যাওয়া হাত ভালো করা হবে। সাথে সাথে হোপ হাসপাতালে যোগাযোগ করলে আমার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। দীর্ঘ ৫ ঘন্টা অপারেশন করে বাহুর সাথে লেগে থাকা হাত আলাদা করে এবং লেগে থাকা আঙ্গুল গুলোও আলাদা করে দেয় চিকিৎসকরা। ছেড়ে দেয়া জীবনের আশা বিনামূল্যে পূরণ হলো। এ জন্য আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই এবং যে মানুষটি আমার চিকিৎসা করে জীবনে নতুন করে বেঁচে থাকার আশা জাগিয়েছে সে মহৎ মানুষটির জন্য আল্লাহ যেন সহায় হন।’ এভাবে কথাগুলো বলেন কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালির কৃষক রুহুল আমিনের কন্যা ও কক্সবাজার ইসলামিয়া কামিল মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী নাছিমা আক্তার (১৮)।

পালংখালী আদর্শ উচচ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী জেসমিন আক্তার। তার বয়স যখন ৪ বছর তখন শীতকালে ঘরের সবার সাথে আগুনের তাপ নেয়ার সময় তার দুই পা পুড়ে যায়। পুড়ে যাওয়ার কারণে পায়ে আঙ্গুলগুলো কুঁকড়ে যায়। ফলে তার চলাচল অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ১৫ বছর এভাবে চলে তার জীবন। সে ভাবে হয়তো বাকি জীবনও এভাবে কাটাতে হবে। কিন্তু হোপ ফাউন্ডেশন তার ভাবনা পাল্টিয়ে দেয়। এগিয়ে আসেন তার দুই পা ভালো করতে হোপ ফাউন্ডেশন। আর তার চিকিৎসা ব্যয় ভারের দায়িত্ব নেন ইউরো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ.এস.এম হায়দার। তার প্লাস্টিক সার্জারি করে ৫ জন চিকিৎসক। কক্সবাজার মিঠাছড়ির হোপ হাসপাতালের শয্যায় চিকিৎসা সেবা নেয়ার সময় গত ৪ মে জেসমিন আক্তারের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে জানা যায়।

চকরিয়ার কুনাখালির পহরচান্দা ফাজিল মাদসার ৮ম শ্রেণির ছাত্রী রিপামণি জানান, দুই বছর বয়সে বাম হাত পুড়ে যাই। পিতা না থাকার কারনে দরিদ্র পরিবারের মা আমার চিকিৎসা করাতে পারেনি। তাই এভাবে আমি বড় হই। এখন হায়দার নামের এক মহান মানুষ হোপ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিনা খরচে প্ল্যাস্টিক সার্জারি করেছে। তা না হলে পঙ্গু হাত নিয়ে হয়তো সারা জীবন থাকতে হতো।

এভাবে শহরের কুতুবদিয়া পাড়ার হতদরিদ্র পরিবারের ৩ বছরের শিশু রুহুল কাদের, রামুর তুলাবাগানের আড়াই বছরের শিশু নুসরাত জাহান, গোয়ালিয়া পালং এর রিয়াজ উদ্দিনকে বিনা খরচে প্লাস্টিক সার্জারি করে হোপ ফাউন্ডেশন।

হোপ ফাউন্ডেশনের সিইও ফেরদৌসুজ্জামান বলেন- হোপ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ইউরো গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় হোপ হাসপাতালে তিন দফায় বিনামূল্যে অপারেশন কার্যক্রম চলছে। এ পর্যন্ত শতাধিক অসহায় মানুষের অপারেশন করা হযেছে। এতে দেশের বিশিষ্ট প্লাস্টিক সার্জন ডা: ইমরান চৌধুরীর নেতৃত্বে ডা: ওয়াহিদ মোরশেদ, ডা: শামিম হাসান, ডা: মুস্তফা আমিন ও ডা: সৈয়দ আতিকুর রহমান সার্জারি করছেন। কক্সবাজারের অসহায় মানুষের সহায়ক এই বন্ধু হায়দারকে হোপ ফাউন্ডেশন অভিষিক্ত করেন।

এই সময় অভিষিক্ত ইউরো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ.এস.এম হায়দার বলেন- ‘দেশের ধনী লোকরা এগিয়ে আসলে দেশের গরীব মানুষের চিকিৎসার জন্য বিদেশীদের কাছে হাত পাততে হবেনা। তাই তিনি সরকারের পাশাপাশি দেশের ধর্ণাঢ্য ব্যক্তির এগিয়ে আসার আহবান জানান।’

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ; কক্সভিউ ডট কম; https://coxview.com/water-distribution-lama-mayor-rafiq-30-4-24-1/

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ

লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম এর পক্ষ থেকে লামা বাজারে জনসাধারণের মাঝে নিরাপদ পানি ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/