সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / ভ্রমণ ও পর্যটন / জাফলং এর মায়াবী ঝর্ণা

জাফলং এর মায়াবী ঝর্ণা

জাফলং এর কাছেই এই নতুন ঝর্ণাটির নাম মায়াবী ঝর্ণা। ছবি: আদার ব্যাপারী।

জাফলং সিলেটের একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। পর্যটক মাত্রই জাফলং যেতে চান। এই জাফলং এর সাথে যুক্ত হয়েছে আরও একটি আকর্ষণ। তার নাম সংগ্রাম-পুঞ্জি বা সেনগ্রাম-পুঞ্জি ঝর্ণা বা মায়াবী ঝর্ণা। বর্তমানে এটি মায়াবী ঝর্ণা নামেই বেশি পরিচিত। বর্ষায় ঝর্ণাটি দেখলে আপনি মানতে বাধ্য হবেন যে এটি আসলেই একটি মায়াবী ঝর্ণা। বর্ষা যেহেতু আসি আসি করছে, তাহলে আর দেরি কেন!

কোথায়: সিলেটের জাফলং এলাকা থেকে ১৫-২০ মিনিটের জাটা দূরত্বে আছে ঝর্ণাটি। ঝর্ণাটির অধিকাংশ জায়গা ভারতের ভেতরে হলেও সকাল থেকে বিকেল অবধি বিএসএফ এর প্রহরায় আপনি বিনা পাসপোর্টে ঘুরে আসতে পারবেন।

কীভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সিলেট এর উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায় গাবতলি এবং সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে। বাস গুলো সকাল থেকে রাত ১২.৪৫ পর্যন্ত একটু পরপর ছেড়ে যায়৷ ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকেও সিলেটের বাসগুলো ছাড়ে। এ পথে গ্রীন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া এস আলম পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন ও এনা পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার ১শ’ টাকা। এছাড়া শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস, এনা পরিবহনের পরিবহনের নন এসি বাস সিলেটে যায়। ভাড়া ৪শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা। এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে টঙ্গী ঘোড়াশাল হয়ে সিলেট যায়।

ট্রেনে করেও সিলেট যাওয়া যায় আর সেটা বরং বেশি আনন্দদায়ক। ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার বাদে সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ০৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। ভাড়া দেড়শ থেকে ১ হাজার ১৮ টাকা। ট্রেনে গেলে রাত ৯.৫০ এর উপবন এক্সপ্রেসে যাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো, কারণ আপনার যেতে যেতে সকাল হয়ে যাবে আর আপনি যদি রাতে ট্রেনে ঘুমিয়ে নিন তাহলে সকালে ট্রেন থেকে নেমেই আপনার ভ্রমণ শুরু করতে পারবেন। ট্রেনে যেতে সময় লাগবে ৭-৮ ঘণ্টা।

সিলেটে থেকে বাস, মাইক্রো-বাস, সিএনজি অটোরিকশা বা লেগুনায় যাওয়া যায় জাফলংয়ে। জাফলং যেতে জনপ্রতি বাস-ভাড়া পড়বে ৮০ টাকা। যাওয়া-আসার জন্য মাইক্রো-বাসের ভাড়া পড়বে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া পড়বে ১০০০-১২০০ টাকা। সিলেট শহরের যে কোনও অটোরিকশা বা মাইক্রো-বাস স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়া যাবে জাফলংয়ে। আর জাফলংমুখী বাস ছাড়ে নগরীর শিবগঞ্জ থেকে। প্রতি এক ঘণ্টা পরপর পাওয়া যাবে বাস।

জাফলং পৌঁছার পর খেয়া পার হয়ে হেঁটে যেতে পারবেন ঝর্ণায় সেক্ষেত্রে খেয়া পার হতে লাগবে জনপ্রতি ১০-২০ টাকা। আর যদি খাসিয়া পল্লীসহ ঘুরে আসতে চান তাহলে নৌকা রিজার্ভ নিতে পারেন সেক্ষেত্রে ভাড়া পরবে জন প্রতি ৮০০-১০০০ টাকা। ঝর্ণাটা ভারতে কিন্তু বাংলাদেশিদের বিকাল পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি আছে।

কী দেখবেন: ঝর্ণায় যাবার সেরা সময় হল বর্ষাকাল এবং এই বছরের বর্ষা আসি আসি করছে। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫-২০ মিনিট হাঁটলেই মায়াবী ঝর্ণা। কয়েক ধাপ বিশিষ্ট এই ঝর্ণাটিতে বর্ষাকালে প্রচুর পানি আসে। কখনও ঝোপ-ঝাড় বেয়ে, কখনও পাথরের পাশ ঘেঁষে প্রচণ্ড গর্জন করতে করতে নেমে আসবে পানি। ঝরনার পানি এসে জমা হয়ে গোড়ায় ছোট্ট পুকুরের মতো তৈরি হয়েছে, যার তিন দিকেই রয়েছে বড় বড় পাথরের চাই। আপনার যদি মনে চায়, সেই শীতল জলে ডুব দিতে পারেন অথবা চেষ্টা করতে পারেন চূড়ায় ওঠার। ঝর্ণার তৃতীয় ধাপ থেকে কিছু পানি নিচে গড়িয়ে পড়ে, আর কিছু চলে যায় বাম দিকের সুড়ঙ্গে। সুড়ঙ্গ-মুখের কিছুটা অংশ পর্যন্ত দেখা যায়, বাকিটা অন্ধকার। সুড়ঙ্গ পথের কোনও হদিস কারো জানা নেই।

ঝর্ণা বেয়ে উপরে উঠতে হলে আপনাকে অবশ্যই হতে হবে অনেক সতর্ক। বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের গা থাকবে পিচ্ছিল। অসাবধান হলে আপনাকে পড়তে হবে বিপদের মুখোমুখি। আগে থেকে কোন অভিজ্ঞতা না থাকলে উপরে চড়ার চেষ্টা না করাই ভাল। ঝর্ণাটি যেহেতু ভারতীয় এলাকায়, তাই যে কোন পরিস্থিতিতে বি এস এফ এর সদস্যদের সাথে কথা বলে নিয়ে অগ্রসর হওয়া ভাল। সীমান্ত এলাকা বলে বিশেষ সাবধান থাকা নিরাপদ অভ্যাস।

সম্পাদনা: ড. জিনিয়া রহমান/সূত্র:priyo.com,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

ঈদগাঁওতে উৎসবমুখর ভোটগ্রহণ : নারী ভোটারদের উপস্থিতি : অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি

  এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ, ইসলামপুর ও ঈদগাঁও ইউনিয়নে ব্যাপক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/