সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / দেশের মানুষের আত্মমর্যাদা আছে : প্রধানমন্ত্রী

দেশের মানুষের আত্মমর্যাদা আছে : প্রধানমন্ত্রী

নিজ কার্যালয়ে কৃতী শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষ গরিব হতে পারে কিন্তু আত্মমর্যাদা আছে। পদ্মা সেতুর বিষয়ে কথা বলেতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু তৈরির বিষয়টি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এটা নিয়ে অনেক চক্রান্ত হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কারো কাছে হাত পেতে নয়, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করব। দেশের মানুষ এতে সাড়া দিয়েছে। আমাদের দেশের মানুষ গরিব হতে পারে, কিন্তু আত্মমর্যাদা আছে।’

বুধবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উদ্যোগে আয়োজিত কৃতী শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য দিল আফরোজা বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

শেখ হাসিনা কৃতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দরিদ্র কৃষক-শ্রমিকদের ঘামের টাকায় রাষ্ট্র চলে। খেটে খাওয়া মানুষের অর্থের বিনিময়ে দেশ চলছে। তৃণমূলের মানুষকে কতটুকু দিতে পারলাম- সেটাই মূল কথা।

অনুষ্ঠানে গবেষণার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গবেষণার কারণে উৎপাদন বেড়েছে, দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।’

ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বে অনেক দেশ আছে, যারা এখন যুদ্ধ করছে। কিন্তু আমরা ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে ছিটমহল বিনিময় করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ঘোষণা ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশ, আমরা সে পথে এগিয়ে যাচ্ছি। সারা দেশে এখন ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে গেছে। বইগুলো ডিজিটালাইজড ও সহজলভ্য করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যেতে পারবে।’

এ সময় তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে সরকারের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘মেধা বিকাশের সুযোগ পেলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিকভাবে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতি করতে পারে না। মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিতে পারলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

পদমর্যাদা ও বেতনভাতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের সম্মান সবসময়ই সবার ওপরে। তাদের কাছ থেকেই তো শিক্ষা পেয়েছি। আমি প্রধানমন্ত্রী হতে পারি, কিন্তু আমার শিক্ষকদের সম্মান অনেক ওপরে- আমি এটুকু বলতে পারি।

তুলনামূলকভাবে বেশি নারী শিক্ষার্থী পদক পাওয়ায় এবং মেধাবীদের হাতে পদক তুলে দিতে পেরে শেখ হাসিনা আনন্দ প্রকাশ করেন। শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার এবং বহুমুখী করার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক জেলায় একটি করে পাবলিক এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেভাবেই আমাদের সরকার কাজ করছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব যারা নিয়ে আসছে তাদের বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় করার এবং ঢাকার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় করার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর ধারাবাহিক দ্বিতীয় মেয়াদের এসময় পর্যন্ত ১১টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ৩৩টি নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়ে ৫২ থেকে ৮৫-তে উন্নীত করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার পরপরই নারী শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা। প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছিলেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের সরকার শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।’

১৯৯৬ সালে সরকারে এসে প্রথম ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন সরকারে থেকে ৬টি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলাম। এরপর যারা সরকারে আসে তারা এই প্রক্রিয়া বন্ধ রাখে। পরে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আবারও প্রক্রিয়া শুরু হয়। একে একে দেশে গড়ে উঠছে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। দেশে প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, একাধিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’

শিক্ষায় আমাদের লক্ষ্য বহুমুখী- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের সরকার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েই নতুন শিক্ষানীতি নেওয়া হয়েছে।’

কেবল রাজধানীভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা নয়, গ্রামকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এগুতে হবে, সমগ্র বাংলাদেশই আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্য- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে গ্রামের ও শহরের আয় বৈষম্য কমিয়ে আনতে পেরেছি।’

নারী শিক্ষায় অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারী শিক্ষার হার বাড়ছে। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার কমার পাশাপাশি শিক্ষার প্রতি আগ্রহও বেড়েছে। তা এবারের ইউজিসি স্বর্ণপদক অনুষ্ঠানেই প্রমাণ হয়। ইউজিসি ২০১১ সালে ৩৭.২১ নারী, ২০১২ সালে ৪০.২১ নারী শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দিচ্ছে। এভাবেই মেয়েরা প্রায় সমান সমান হয়ে উঠছে।’

সূত্র: রাইজিংবিডিডটকম,ডেস্ক।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/01/BGB-Rafiq-24-1-23.jpeg

বিপুল পরিমাণ পপিক্ষেত ধ্বংস করল বিজিবি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম; লামা-আলীকদম : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে থানচি উপজেলা গহীণ অরণ্যে মাদক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/