Home / প্রচ্ছদ / সাম্প্রতিক... / পোকখালীর গোমাতলীবাসির একমাত্র দাবী… বাঁচার জন্য টেকঁসই বেড়িবাঁধ চাই

পোকখালীর গোমাতলীবাসির একমাত্র দাবী… বাঁচার জন্য টেকঁসই বেড়িবাঁধ চাই

Bangon - Sagor 21-6-16

এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :

বেড়িবাঁধ বিলীন হওয়ায় অরক্ষিত কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী। সর্বশেষ রোয়ানোর আঘাতে লন্ডভন্ড হওয়ায় বেড়িবাঁধের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া দায়। বসতবাড়ি আর বঙ্গোপসাগর একাকার হয়ে গেছে গোমাতলী। তাই এ মুহূর্তে গৃহহীন গোমাতলীবাসি তাদের আশ্রয়ের ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছেনা। এতোদিন বেড়িবাঁধ না থাকলেও প্রধান সড়কটি কোন রকমভাবে রক্ষা করেছিল কয়েক হাজার পরিবার। ৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে টেকঁসই বেড়িবাঁধ না হওয়ায় ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে গোমাতলীর আয়াতন। বিগত কয়েক বছর থেকে বর্ষাকালে প্রতি মুহূর্ত অজানা আতংকে ঝুঁকির মধ্যে দিনাতিপাত করে আসা বঞ্চিত গোমাতলীবাসি শেষ সম্বলটুকু কেড়ে নেয় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানো। গৃহহীন হয়ে পড়েন বৃহত্ জনগোষ্ঠি। সব হারানো এলাকার অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিলেও তারা মানবেতর জীবন যাপন করে যাচ্ছে একের পর এক। এখনো সহায় সম্বলহীন কিছু পরিবার জীবনের মায়া ছেড়ে গোমাতলীতে যাযাবরের মতো খাদ্য ও পানীয় সংকট প্রকট আকার ধারন করায় অনাহারে দিনাতিপাত করে যাচ্ছেন। রোয়ানোর আঘাতে প্রাণহানী না ঘটলেও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় গোমাতলীবাসির। জীবিকার প্রধান উত্স লবণ চাষ শেষ হলেও সংরক্ষণের আগমুহূর্তে রোয়ানোর তান্ডবে পানি হয়ে যায় উত্পাদিত লবণ। এছাড়া চিংড়ি চাষে কয়েক কোটি টাকার বিনিয়োগ ও ভেস্তে যায় রোয়ানোর তান্ডবে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অরক্ষিত গোমাতলীর দীর্ঘদিন জানমালের ঝুঁকিতে দিনাতিপাত করলেও টেকঁসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা। অবস্থা দেখলে মনে হয় যেন অভিভাবকহীন গোমাতলীবাসি।

উপকূলীয় অঞ্চলের অন্যতম ঝুকিপূর্ণ গোমাতলীর হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন থেকে ধুকে ধুকে মরছে একটি মানসম্মত বেড়িবাঁধের জন্য। টেকঁসই বেড়িবাঁধ না থাকায় ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল হানা দেয়া স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে মূহূর্তেই লন্ডভন্ড করে দেয় গোমাতলীবাসির সুন্দর সাজাঁনো সংসারকে। সেসময় কোটি কোটি টাকার সস্পদের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটে। এখনো টেকঁসই বেড়িবাঁধ নির্মিত না হওয়ায় চৌদ্দ পূরুষের বসত ভিটার মায়া ছেড়ে দিয়েছেন গোমাতলীবাসি। দুঃখ-কষ্ট ও অসহায়ত্বের কথা এলাকার মানুষকে বারংবার নাড়া দেয়। কিন্তু কে শুনে কার কথা, এদের শান্তনা দেবে কে? একের পর এক সরকার পরিবর্তন হয়। হয়নি উপকূলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। আশ্রয়হীন গোমাতলীবাসি কতটা ব্যাথিত। তাদের চেহেরায় ভর করে আছে সহায় সম্বল, ভিটে মাটি ও স্বজন হারানোর চিত্র। গোমাতলীর পশ্চিমাংশের নির্মিত বেড়িবাঁধের প্রায় ২ কিলোমিটার সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও দক্ষিন পূর্বাংশের বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ অরক্ষিত থাকায় বর্ষা মৌসুমে জনবসতি ও চিংড়িঘেরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। জীবিকার তাগিদে বর্তমানে অনেকটা ঝুকিতে লবণ চাষ শেষ হলেও বেড়িঁবাধ না হওয়ায় মারাত্মক ঝুকিতে কয়েক কোটি টাকার চিংড়ি চাষ।

এ ব্যাপারে পাউবো (কক্সবাজার)‘র নির্বাহী প্রকৌশলী প্রতিবারের মতো আশার বাণী শুনান। তিনি জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কোটি টাকার প্রাথমিক পরিকল্পনা পাঠানো গিয়েছে। গোমাতলীর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ চেয়ে কর্তৃপক্ষকে চাহিদা পত্র প্রেরণ করেছি। কিন্তু প্র্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাচ্ছিনা। যার কারণে অপ্রতুল বরাদ্দ নিয়ে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। অন্যদিকে এলাকার সচেতন মহলের মতে, বাঁচার জন্য টেকসই বেড়ীবাঁধ চাই। পোকখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, তারা বর্তমানে হাহাকার। উপকূল রক্ষার্থে যেকোন মূল্যে টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণের জোর দাবী জানান উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2018/10/Tharmameter.jpg

দেশে আরও ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

  অনলাইন ডেস্ক :দেশজুড়ে বইছে তাপপ্রবাহ। গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা। এ অবস্থায় দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ অব্যাহত ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/