মুকুল কান্তি দাশ; চকরিয়া :
ইংরেজী বর্ষ বিদায়-বরণ ও শীত মৌসুমকে ঘিরে কক্সবাজারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। সারা বছর জুড়ে এই পার্কে আনাগোনা করে পর্যটক। ঈদ-পূজোঁর বন্ধে বাড়ে দর্শনার্থী। অনুরুপ অবস্থা শীতেও। বাড়তি বর্ষ বিদায়-বরণ যোগ হওয়ায় দেশী-বিদেশী পর্যটকে ঠাসা ছিল শনিবার বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর ও নতুন বছরের ১লা জানুয়ারী।
বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত নগর কক্সবাজারে আসা যাওয়ার সময় একবার হলেও সাফারি পার্কে ডু-মারে পর্যটকরা। সচরাচরের পাশাপাশি বিলুপ্ত পশু-পাখি দেখে বাড়তি বিনোদন নেয় তারা। এতে জীব-জন্তু নিয়ে অজনা জ্ঞানও আহরণ করে দর্শনার্থীরা। পর্যটক বাড়ায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে সাফারি পার্কের পক্ষ থেকে।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সাফারি পার্কে পর্যটক ও স্থানীয় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ভ্রমণের জন্য পর্যটক ও দর্শনার্থীরা পার্কে ভিড় জমাচ্ছে। পার্কে দেখার মতো রয়েছে- বাঘ, সিংহ, উল্টো লেজী বানর, লাম চিতা, হনুমান, উল্লুক, কালো শিয়াল, জলহস্তী, ওয়াইল্ডবিষ্ট, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, প্যারা হরিণ, মিঠা পানির কুমির, মঁয়ূর, বনমোরগ, বন্য শুকর, বানরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণী। প্রতিটি পশু-পাখি ঘিরেই উৎসুক মানুষের ভীড়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা গাছ-গাছালি বৃষ্টিত পরিবেশ দেখেও মুগ্ধ তারা।
এসময় কথা হয় ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গাজীপুর থেকে বেড়াতে আসা গৃহিণী তহুরা খানমের সাথে। তিনি বলেন, আমার ব্যাংকার স্বামী বছর ক্লুজিং এর কারণে আমাদের সাথে আসতে পারেননি। পরীক্ষা শেষে ছেলে-মেয়েদের ইচ্ছে পুরণে সাফারি পার্ক ও সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা। সৈকতের চেয়েও ছেলে-মেয়েরা বেশি আনন্দ পেয়েছে দেশের প্রথম সাফারি পার্ক ঘুরে।
পার্কে আগত দর্শনার্থীরা মনের আনন্দে ঘুরে ঘুরে দেখছেন এসব বন্যপ্রাণীর বেষ্টনী। কর্তৃপক্ষ পার্কটিকে দর্শনার্র্থীদের কাছে আগের তুলনায় আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। দর্শনার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগ যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরীর আধিক্যই ছিল বেশি। তারা বন্যপ্রাণী দেখার পাশাপাশি সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মনের সুখে উপভোগ করছেন নান্দনিক বৃক্ষ রাজির ফাঁকে ফাঁকে উন্মুক্ত বিচরণ করা হরিণ, খরগুস। কেউ কেউ হাতিতে চড়ে মনের জিইয়ে রাখা শখ মিটিয়ে নিচ্ছে। বেশিরভাগ দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় ছিল বাঘ ও সিংহ এবং জলহস্তীর বেষ্টনী।
সাফারি পার্কের কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১লা জানুয়ারী পর্যন্ত পার্কে দর্শনার্থীদের ব্যাপক সমাগম হয়। ৩১ ডিসেম্বর ও ১লা জানুয়ারী অন্তত ১০ হাজার দর্শনার্থী এসেছে পার্কে। পার্কের প্রধান গেইটের বাইরে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বিশাল ম্যুরাল ও ভাস্কর্যটি ছিল দর্শনার্থীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুল আজম বলেন, শীত ও বর্ষ বিদায়-বরণকে ঘিরে পর্যটক বাড়ায় সাফারি পার্কে বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। সড়কে নিয়োজিত করা হয়েছে পুলিশের মোবাইল টিম। সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
You must be logged in to post a comment.