অনলাইন ডেস্ক :
চমক জাগানিয়া এই ক্যারিয়ার ভারতের কন্নড় তারকা যশের। দক্ষিণী এই অভিনেতাকেও কঠোর পরিশ্রম করে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করতে হয়েছে। অদম্য চেষ্টা মানুষকে কতদূর নিয়ে যেতে পারে, তার অনন্য উদাহরণ তিনি। কঠোর পরিশ্রমের ফলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করতে, এই জায়গায় পৌঁছতে অনেকটা পথ পেরোতে হয়েছে তাঁকে।
একটা সময়ে মঞ্চের পিছনে কাজ করে প্রতিদিন পারিশ্রমিক পেয়েছেন ৫০ রুপি। এখন সেই অভিনেতাই একটি সিনেমার জন্য ২০ কোটি রুপির বেশি পারিশ্রমিক নেন। অসামান্য এই সাফল্যের পেছনে লম্বা, কণ্টকময় পথ পেরিয়ে এসেছেন যশ। যিনি ‘কেজিএফ’ তারকা হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। শুধু কন্নড় ইন্ডাস্ট্রি নয়, এখন অন্যান্য অঞ্চলের নির্মাতা-প্রযোজকরাও তাকে নিয়ে কাজ করতে মুখিয়ে থাকেন।
দক্ষিণী অভিনেতা যশ। যাকে এখন সবাই একনামে চিনেন। ১৯৮৬ সালের ৮ জানুয়ারি কর্নাটকে জন্ম যশের। আসল নাম নবীন কুমার গৌড়া। বাবা ছিলেন কর্নাটকের রাজ্য সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনে গাড়ি চালক। ছোটবেলা থেকেই মাথায় অভিনয়ের ভাবনা আসে। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারে ছেলের এমন ভাবনায় সায় দেননি বাবা-মা। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নন যশ।
মাত্র ১৬ বছর বয়সেই বেঙ্গালুরু চলে আসেন তিনি। কাজ শুরু করেন একটি ছবির সহকারি পরিচালক হিসেবে। কিন্তু কাজটি বন্ধ হয়ে যায় হঠাৎ। যশ তখন যোগ দেন একটি নাট্যদলে। সেখানে প্রথম দিকে তিনি মঞ্চের পেছনে সহকারি হিসেবে কাজ করতেন। এজন্য দৈনিক ৫০ রুপি করে পেতেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এক সংবাদপত্রে।
টেলিভিশনে যশের অভিষেক হয় ২০০৫ সালে, ‘উত্তরায়ণ’ নামের একটি টিভি শো দিয়ে। এরপর ‘নন্দ গোকুল’ ধারাবাহিকে কাজ করেন তিনি। সিনেমায় সুযোগটা আসে ২০০৭ সালে, ‘জামবাবা হুড়ুগি’ ছবিতে। তবে সেটা ছিল পার্শ্ব চরিত্রে। নায়ক হিসেবে যশের ক্যারিয়ার খাতা ওপেন হয় ২০০৮ সালের ‘রকি’ দিয়ে। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন তিনি। কন্নড় ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি লাভ করেন বেশ। এরপর আরও এক ডজনের বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন যশ।
তবে ২০১৮ সালে তার ক্যারিয়ার গ্রাফ এক লাফে অনেকদূর এগিয়ে যায়। প্রশান্ত নীল নির্মিত ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ওয়ান’ ছবিতে অভিনয় করে ভারতব্যাপী আলোড়ন তোলেন। এই ছবির দ্বিতীয় পর্ব মুক্তি পায় ২০২২ সালে। সেটা শুধু কন্নড় ইন্ডাস্ট্রি নয়, বরং গোটা ভারতেই ইতিহাস সৃষ্টি করে। ১ হাজার ২০০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে সিনেমাটি। শোনা যায়, ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু’র জন্য ৩০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক পেয়েছেন যশ।
‘নন্দা গোকুল’ সিরিয়ালে রাধিকার বিপরীতে অভিনয় করার সুযোগ পান যশ। ঠিক একইভাবে তারা দুজন আরেকটি ছবিতে একে অপরের বিপরীতে জুটি বেঁধেছিলেন। প্রথম সিরিয়াল করার সময় থেকেই বন্ধুত্ব হয়ে ভালোবাসার সম্পর্কে রূপ নেয়। দীর্ঘ ১০ বছর তারা প্রেম করেছেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে গোয়াতে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে সারে যশ ও রাধিকা জুটি। এরপর তাদের সংসারে আসে দুই সন্তান। এক মেয়ে আর্য ও এক ছেলে যথরভ। দুই সন্তানকে নিয়ে এক দিকে যেমন পারিবারিক জীবনে সুখী তিনি, তেমনই পেশার জায়গাতেও অব্যাহত রেখেছেন সাফল্যের জয়যাত্রা।
প্রসঙ্গত, ‘কেজিএফ’র পর এখনও নতুন কোনও ছবির ঘোষণা দেননি যশ। ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই বড় কোনও চমক নিয়ে হাজির হবেন তিনি।
You must be logged in to post a comment.