প্রতিভা ও মেধার বিকাশে বিভিন্ন দেশে আয়োজন করা হয় প্রতিযোগিতা। অভিনয় বা সংগীত নিয়ে এই প্রতিযোগিতাগুলো বেশ জনপ্রিয়। আমেরিকান আইডল, ইন্ডিয়ান আইডল, ক্লোজআপ ওয়ান-এর নাম উল্লেখযোগ্য। আর সৌন্দর্যকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে মেধাকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়ে অনুষ্ঠিত হয় নানা রকম সুন্দরী প্রতিযোগিতা। যার মধ্যে অন্যতম বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতা, মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা। এ ছাড়াও দেশে আয়োজন করা হয় ক্যাম্পাসভিত্তিক, বিভাগভিত্তিক, অঞ্চলভিত্তিক সুন্দরী প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই এসব আয়োজনে।
দীর্ঘদিন ধরেই মিস বাংলাদেশ বাছাইয়ের আসর বসছে। যদিও জৌলুস হারিয়েছে এই প্ল্যাটফরম। জৌলুস হারিয়েছে লাক্স সুন্দরী, বিনোদন বিচিত্রা ফটোসুন্দরীর মতো আয়োজনগুলো। রঙিন ক্যারিয়ারের হাতছানিতে নারীদেরও আগ্রহ বেড়েছে এসব আয়োজনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে। ফলে সাম্প্রতিককালে সুন্দরী প্রতিযোগিতার হার বেড়েছে।
অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০১৯ সালটা ছিল সুন্দরী প্রতিযোগিতায় ভরপুর এক বছর। গেল বছর ৬টি প্রতিযোগিতা হয়েছে বড় পরিসরে। এগুলো হলো- মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ, মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ, মিসেস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ, মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ, মিস ঢাকা, মিসেস বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ইউনিভার্স। তবে এত সব প্রতিযোগিতার মধ্য থেকে দেশ বা জাতি কী পেল সেই প্রশ্ন এলে হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। যারা এসব আয়োজনে শীর্ষস্থান অর্জন করেছেন তারাও তেমন করে আলো ছড়াতে পারছেন না। শোবিজে গড়ে নিতে পারছেন না উল্লেখ করার মতো ক্যারিয়ার। তাদের আয়োজকদেরও এই বিষয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই! প্রতিযোগিতা বাড়লেও বাড়েনি মান ও অর্জন। ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, বিচারক বাছাইয়ে দুর্বলতা, প্রতিযোগীদের গ্রুমিংয়ের অভাবসহ নানা সংকট রয়েছে এখানে।
‘মিসেস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মুনজারিন অবনী। চ্যাম্পিয়ন হয়ে ‘মিসেস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ফল আশাব্যঞ্জক কিছু নয়। দেশে ফিরে সংসারের পাশাপাশি শোবিজে মনোযোগী হয়ে কতটা সফল হতে পারবেন তিনি সে প্রত্যাশাও প্রশ্নের মুখে। ‘মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’-এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন দন্ত্য চিকিৎসা বিষয়ে অধ্যয়নরত উর্বী ইসলাম। তিনি বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে চীনের গোয়াঞ্জ শহরে অনুষ্ঠিতব্য ৪২তম ‘মিসেস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন বলে জানা যায়। সেখানে তিনি কতদূর যেতে পারে সেটাই দেখার বিষয়। সাফল্য এখানে অংশগ্রহণ করাটাই, আপাতত বলা যায়। মাদার তেরেসা, বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল, বেগম ফয়জুন্নেসা- এই চার আইকনকে উপলক্ষ করে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় ‘মিস ঢাকা’ নামে একটি প্রতিযোগিতার। তবে উল্লেখ করার মতো কোনো সামাজিক কার্যকম চোখে পড়েনি এখনো। বর্তমানে চলমান ‘মিসেস বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতা। এর ফল কী সেটা দেখার অপেক্ষায় সবাই।
তবে এই চারটি প্রতিযোগিতা তেমন জনপ্রিয় না হলেও চলতি বছরে বেশ ভালোই আলোচনার জন্ম দিয়েছে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ ও ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’। বিশ্বজুড়ে সমাদৃত ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ ও ‘মিস ইউনিভার্স’-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণের প্ল্যাটফরম এটি। নানা রকম বিতর্কের জন্ম দিয়ে হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছিল প্ল্যাটফরমটি। চ্যাম্পিয়ন বাছাইয়ে লবিং হয়েছে এমন বিতর্কের পাশাপাশি যথাযোগ্য সুন্দরী বাছাইয়েও দুর্বলতা দেখা গেছে। এখানে বিজয়ী হয়ে লন্ডনে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’-এর মূল আসরে অংশ নিয়ে খালি হাতেই ফিরলেন রাফাহ নানজীবা তোরসা। একইভাবে হতাশ করেন ‘আমার আত্মবিশ্বাস, আমার সৌন্দর্য’ সেøাগানের ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ নির্বাচিত হওয়া শিরীন শিলা। ‘মিস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে খালি হাতে ফেরেন তিনিও। তোরসা এবং শিলা দুজনেই হয়তো চেষ্টা করবেন শোবিজে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে। তারা সেই চেষ্টায় কতটা সফল হবেন তা হয়তো সময় বলবে।
সূত্র: deshebideshe.com – ডেস্ক।
You must be logged in to post a comment.