সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / নির্বাচন সংক্রান্ত / হাইকোর্টে সেলিম-নৌকায় তারেক : কোন পথে কালারমারছড়ার ইউপি নির্বাচন?

হাইকোর্টে সেলিম-নৌকায় তারেক : কোন পথে কালারমারছড়ার ইউপি নির্বাচন?

Election - 8 (a)নিজস্ব প্রতিনিধি; মহেশখালী :

কক্সবাজা জেলার দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর আলোচিত কালারমারছড়া ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় অবশেষে আইনি প্রতিকার চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে আশ্রয় নিলেন সেলিম চৌধূরী। নির্বাচনের ওপর একমাসের স্থগিত আদেশ প্রদান করেন মহামান্য হাইকোর্ট। তবুও প্রার্থীরা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারনা। অনেক প্রশ্নের পরও এখনো নৌকার (প্রার্থী) মাঝি তারেক। তাই কোন পথে মোড় নিচ্ছে কালারমারছড়া ইউনিয়নের নির্বাচন তা নিয়ে নিরবে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই সাধারন ভোটারদের মধ্যে। ফলে থেমে থেমেই চলছে নির্বাচনী হাওয়া যেন হঠাৎ মেঘ হঠাৎ রোদ।

প্রথমে তপশীল ঘোষণার পূর্বে থেকেই কে হচ্ছেন দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন হিসাব নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ ছিল জেলা উপজেলা থেকে শুরু করে তৃণমূলের আওয়ামী নেতা কর্মীর মধ্যে। অবশেষে কালারমারছড়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতা সেলিম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন জেলা উপজেলার দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। সবকিছুর পর অবশেষে ১৯ ফেব্রুয়ারী সেলিম চৌধুরীকে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করলে শুরু হয় নির্বাচনী আলোচনা সমালোচনা।

কালারমারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের তৃণমূলের উল্লেখযোগ্য অংশ প্রকাশ্যে দলীয় প্রার্থী সেলিম চৌধুরীর পক্ষে সাধারন ভোটারদের জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে পাড়ায় মহল্লায় প্রচারণা শুরু করেন। আওয়ামী দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত কালারমারছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ওসমান গনি ওসমানের পুত্র তারেক বিন ওসমান শরীফ তখনো হাল ছাড়েননি।

একদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য শুরু করেন দৌড়ঝাপ। যেভাবেই হউক অবশেষে নৌকার মাঝি (প্রার্থী) পরিবর্তন হয়ে সেলিম চৌধুরীর স্থলে চলে আসেন তারেক বিন ওসমান শরীফ। হঠাৎ নৌকার মাঝি পরিবর্তন হওয়ায় দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েন এলাকা ভিত্তিক আওয়ামী কর্মী সমর্থক ও সাধারন ভোটার। ইতিপূর্বে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় সেলিম চৌধুরীর কালারমারছড়ায় আগম উপলক্ষ্যে তৃনমূলের আওয়ামী নেতা কর্মী ও সাধারন ভোটাররা বিশাল গাড়ী বহর নিয়ে শোডাউন করেন। চিহ্নিত হয়ে পড়েন সেলিম সমর্থিত আওয়ামীলীগের কর্মী ও সাধারন সমর্থকরা। এতেই সৃষ্টি হতে থাকে বিপত্তি।

আওয়ামীলীগের একজন কর্মী জানান, দল থেকে প্রথমে সেলিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ায় দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সেলিম চৌধুরীর শোডাউনে অংশ নিয়েছিলাম। এখন প্রার্থী পরির্বতন হওয়ায় সেলিম চৌধুরীর কর্মী সমর্থকরা প্রতিহিংসার অনাকাংখিত আগুনে জ্বলতে পারেন এমনটি জানান অনেকেই। এছাড়া মনোনয়ন পত্র জমাদানের সময় ঘনিয়ে আসলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন তারেক বিন ওসমান শরীফ। অপর দিকে ২২ ফেব্রুয়ারী মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেন মোঃ সেলিম চৌধুরী। সন্ধার পর রাত ঘনিয়ে আসতেই প্রার্থী পরিবর্তনের খবরে কালারমারছড়ায় তারেক সমর্থকরা নৌকা মার্কার মিছিল বের করেন। মহুর্তেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে আলোচিত খবরটি। সেলিম সমর্থিত আওয়ামী নেতা কর্মী সাধারন ভোটাররা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না খবরের বাস্তবতা। কারন ২১ ফেব্রুয়ারী তারেক বিন ওসমান শরীফ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমাদান এবং এরই মধ্যে মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় রাত্রে পাওয়া খবর নিয়ে আইনি জটিলতার প্রশ্ন থেকে যায়। প্রার্থী পরিবর্তনের খবর নিয়ে দেখা দেয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটিয়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হতে চেষ্টা করেন। তবোও জানা যায়নি আসল রহস্য কিংবা বাস্তবতা। অবশেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ২৪ ফেব্রুয়ারী চুড়ান্তভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে তারেক বিন ওসমান শরীফের নাম ঘোষণা করলে দেশের প্রচলিত আইন ও নির্বাচন কমিশনের আইন নিয়ে চলতে থাকে আলোচনা। এভাবে প্রার্থী পরিবর্তন কিভাবে সম্ভব তা জানার আগ্রহের কমতি নেই সাধারন ভোটার থেকে শুরু করে শিক্ষিত-অশিক্ষিত সর্বত্রই।

যারা বুঝেনা তারাও বুঝার চেষ্টা করেছেন। যারা জানেনা তারা জানার চেষ্টা করেছেন। এরই মধ্যে ৪ মার্চ মহামান্য হাইকোর্ট কালারমারছড়া ইউপির নির্বাচন এক মাসের জন্য স্থগিত আদেশ প্রদান করেন। এতেই নতুনভাবে প্রশ্ন দেখা দেয় কে হতে যাচ্ছেন নৌকার আসল (প্রার্থী) মাঝি, কে প্রমাণিত হতে যাচ্ছেন নৌকার নকল মাঝি। তা দেখার অপেক্ষায় থাকলো মহেশখালীর কালারমারছড়াসহ পুরো জেলাবাসি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একজন দায়িত্বশীল আ,লীগ নেতা জানান, ২২ ফেব্রুয়ারী বিকেল (৫) টার মধ্যে মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় শেষ হওয়ার রাতে সেলিম চৌধুরীকে পরিবর্তন করে তারেক বিন ওসমান শরীফকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছিলেন না সেলিম চৌধুরীর সমর্থক ও সচেতন মহল। কারন ইতোমধ্যে ২১ ফেব্রুয়ারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তারেক বিন ওসমান মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় দেখা দেয় আইনি জটিলতা। দু’টানায় পড়ে যায় দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে যায় দলীয় প্রার্থী, অবশেষে বাদ পড়ে যায় দলীয় প্রার্থী সেলিম চৌধূরী। বিতর্কের অবসান ও দলীয় নেতা কর্মীদের শান্তনা দিতে অবশেষে দফায় দফায় নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সাথে আলোচনায় অংশ নেয় স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, উপজেলা সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার পাশা চৌধুরী। তবোও সমাধান হয়নি আ,লীগ মনোনীত প্রার্থী নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার। এক নৌকায় দুই মাঝি হওয়ায় আওয়ামীলীগ কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দেখা দেয় ক্ষোভ-অসন্তোষ্টি দেখা দেয় বিভক্তি। আতংকিত হয়ে পড়েন সাধারন ভোটার। সন্ত্রাসের কারনে আলোচিত সমালোচিত জনপথ কালারমারছড়ায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো যাতে গোষ্ঠিগত ও পারিবারিক কিংবা রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি না হয় এই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টকর্তপক্ষ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন এটাই শান্তিপ্রিয় কালারমারছড়াবাসির প্রত্যাশা।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ; কক্সভিউ ডট কম; https://coxview.com/water-distribution-lama-mayor-rafiq-30-4-24-1/

তীব্র গরমে লামা পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে জনসাধারণের মাঝে পানি বিতরণ

লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম এর পক্ষ থেকে লামা বাজারে জনসাধারণের মাঝে নিরাপদ পানি ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/