ঈদগাঁওতে বিএনপির একক প্রার্থী : আ’লীগ সিন্দান্তহীনতায় : প্রচারণা তুঙ্গে

এম আবু হেনা সাগর; ঈদগাঁও :

তপশীল ঘোষণার পূর্বেই থেকেই কক্সবাজার সদর উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁওর সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় তুঙ্গে। এ নিয়ে নির্বাচনী আমেজে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ। পর্যটন শহর কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার খ্যাত জেলা সদরের বহুল আলোচিত এলাকা বৃহত্তর ঈদগাঁওতে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এ নিয়ে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থী বৃহত্তর এলাকাকে নিজেদের অনুকূলে আনার লক্ষ্যে এখন থেকে মাঠ গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, চলতি বছরেই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের খবরে কিন্তু কক্সবাজার সদর উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ছয় ইউনিয়ন- ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, পোকখালী, চৌফলদন্ডী ও বহুল আলোচিত ঈদগাঁও ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা সম্প্রতি তাদের এলাকায় এখন থেকে নড়ে চড়ে বসছে। লক্ষ্য শুধু একটাই নির্বাচন আসার আগেই প্রচার প্রচারণা আর পরিচিতি লাভ করা।

এদিকে ইউপি নির্বাচনে নয়া কৌশল হিসাবে বেছে নিয়েছে প্রার্থীরা। বৃহত্তর এলাকার নানা স্থান ঘুরে গ্রামগঞ্জের সাধারণ লোকজনের সাথে কথা হলে এ চিত্র ফুটে উঠে। অনেকে নির্বাচনী কৌশল হিসাবে নিজেদের লোকজন নিয়ে তাদের ভেশ ভুষণ ইতোমধ্যে এলাকার সর্বপেশার লোকজনদের মাঝে জানান দেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে প্রার্থীরা তাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহবানও জানান। এমনকি বৃহত্তর এলাকার নানা স্থানে দোকান পাটে চায়ের কাপেও নির্বাচন নিয়ে ঝড় উঠছে। এভাবে চলছে এলাকায় ইউপি নির্বাচনী উত্তাপ। তবে শেষ কথা হচ্ছে কারা পাচ্ছেন দলীয় টিকেট, এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে গ্রামগঞ্জের ভোটারদের মাঝে।

এছাড়াও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নানা কৌশলে কিংবা অনুষ্ঠানসহ সভা-সমাবেশে গিয়ে তাদের পরিচিতি তুলে ধরতে দেখা যায়। অন্যদিকে প্রার্থীদের শুভাকাঙ্খী, আত্মীয়-স্বজন ও দলীয় কর্মীরা এলাকায় এলাকায় গিয়ে নির্বাচনী মাঠ নিজেদের অনুকূলে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ লক্ষ্যে অনেক প্রার্থী প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক প্রার্থী নিরব থাকলেও সময়ে মুখ খুলতে পারেন এমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বৃহত্তর এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়নে তরুণ প্রজন্মের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পক্ষে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ডিজিটাল ব্যানার ও পোস্টার গ্রামগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় শোভা পাচ্ছে। যেন এক নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত নবীন-প্রবীণ প্রার্থীদের মাঝে কারাই পাচ্ছে দলীয় মনোনয়ন সেটি এখন দেখার বিষয়। এছাড়াও লোকমুখে শোভা পাচ্ছে এমন বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ছয় ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে – বিএনপির একক প্রার্থীর ঘোষণা হলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ সিন্দান্তহীনতায় ভোগছে। তবে সব প্রার্থীরা যে যার যার অবস্থান থেকে প্রচারণা তুঙ্গে রেখেছে।

এদিকে ঈদগাঁওতে বিএনপির একক প্রার্থীর ফরিদুল আলম, জালালাবাদে আলমগীর তাজ জনি, ইসলামাবাদে মোজাম্মেল হক মেম্বার, ইসলামপুরে আবুল কালাম মেম্বার ও পোকখালীতে সেলিম উদ্দীন।

অপরদিকে আওয়ামীলীগে একাধিক প্রার্থীর মধ্যে- ঈদগাঁওতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, কক্সবাজার সদর উপজেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হক চৌধুরী রিকো, ঈদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার নুরুল আজিম, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি সোহেল জাহান চৌধুরী, হুমায়ুন তাহের চৌধুরী হিমু, ছৈয়দ আলম।

জালালাবাদে সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি ফরিদুল আলম, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি সেলিম মোর্শেদ ফরাজী, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি ছব্বির আহমদ এমএ। ইসলামাবাদে আওয়ামীলীগ সভাপতি নুর ছিদ্দিক, সদর আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক লুত্ফর রহমান আজাদ, ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হক।

চৌফলদন্ডীতে আওয়ামীলীগ নেতা মুজিবুর রহমান সহ আরো দু’জন। পোকখালীতে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সদর আওয়ামীলীগ নেতা মহিদুল­াহ মহিদ আরো দুয়েকজন।

ইসলামপুরে আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মনজুর আলম, সহ ২/৩ জনের নাম লোকমুখে শোভা যাচ্ছে। এদিকে দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধে আর নানামুখী প্রচার-প্রচারণায় প্রবীণদের ন্যায় তরুণাই এগিয়ে রয়েছে।

এ ব্যাপারে তৃণমূল পর্যায়ের ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মতে, দলীয় প্রার্থী বাছাইকালে তৃণমূলকে প্রাধান্য দেওয়ার আহবান জানান তারা।

অপরদিকে সাধারণ লোকজনের মতে, সত্, যোগ্য, উন্নয়নমুখী, ভালো চরিত্রের অধিকারীসহ সর্বোপরী বিবেচনা করে যোগ্য প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবী জানান তারাও।