স্থানীয় পত্রিকায় একাধিকবার লেখালেখির পর কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে অবশেষে পাবলিক লাইব্রেরী ও শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। তবে উক্ত নবনির্মিত পাবলিক লাইব্রেরী ও শহীদ মিনারের প্রবেশ ফটক থেকে ‘ঈদগাঁও’নাম মুছে ফেলার চক্রান্ত চলছে। এ নিয়ে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁও বাজারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উত্তর এবং খাদ্য গোদামের পশ্চিম পার্শ্বে প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়িত হচ্ছে। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ এ প্রকল্পের জন্য মোট ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করছে। পাবলিক লাইব্রেরীর ভবনটি তিনতলা বিশিষ্ট। ইতোমধ্যে প্রথম তলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যাতে রয়েছে দু’টি কক্ষ। প্রয়োজনীয় চেয়ার, টেবিল, আলমিরা ও অন্যান্য আসবাবপত্র আনা হয়েছে। বাথরুম ও নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।
অন্যদিকে তার সামনে বৃহদাকার ভাবে নির্মিত হচ্ছে শহীদ মিনার। এটি এখনো শেষ হয়নি, কাজ চলছে। কেবল নিচের ফ্লোরে ইটের গাঁথুনি এবং পিলার উঠানো হয়েছে।
এদিকে চলতি সালের প্রথম দিকে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রকল্পটি এখনো জেলা পরিষদকে হস্তান্তর করেনি। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে উক্ত প্রকল্পের জন্য প্রথম দফে ১৫ লাখ ও দ্বিতীয় দফে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অবশিষ্ট কাজের জন্য আরো ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রক্রিয়াধীন বলে জানা গেছে।
দেখা যায়, প্রকল্প এলাকার চর্তুরদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। উত্তর দিকে নির্মিত হয়েছে প্রধান ফটক। তবে ফটকের সাইন বোর্ডে ‘ঈদগাঁও’ শব্দটি কে বা কারা নীল কালি দিয়ে মুছে দিয়েছে। যে বা যারা ‘ঈদগাঁও’শব্দটি মুছে দিয়েছে তাদের দাবী, ঈদগাঁও শব্দের আগে ‘বৃহত্তর’শব্দ যোগ করা অথবা প্রকল্পটি যেহেতু বাজারের জালালাবাদ অংশে সেহেতু এরই নামকরণ জালালাবাদ পাবলিক লাইব্রেরী ও শহীদ মিনার করা। স্থানীয় সমাজ সেবক ও কৃষকলীগ নেতা আলহাজ্ব ছব্বির আহমদের মতে, সাইন বোর্ডের অংশ বিশেষ কালি দিয়ে মুছে দেয়া মোটেই উচিত্ হয়নি। আমাদের এলাকায় একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। কিন্তু সংকীর্ণ আঞ্চলিকতা, ঈর্শ্বাপরায়ণতা অথবা ব্যক্তি স্বার্থে যদি এ অপকর্ম করা হয় তবে তা মোটেই ক্ষমার যোগ্য নহে।
প্রকল্প সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলমের মতে, প্রাচীন জনপদ বৃহত্তর ঈদগাঁওতে দীর্ঘদিন যাবত্ কোন পাবলিক লাইব্রেরী ছিল না। যার কারণে জ্ঞানপিপাসু ও অনুসন্ধানী পাঠকরা বছরের পর বছর বঞ্চিত হয়ে আসছিলেন। তাদের সহ এলাকাবাসীর সুবিধার্থে জেলা পরিষদ উক্ত প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্প সেক্রেটারী মাষ্টার নুরুল আজিমের মতে, পাবলিক লাইব্রেরী ও শহীদ মিনারের কার্যক্রম সমাপ্ত হলে নানা দিবস উদযাপন সহ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদি পালন সহজতর হবে।
এদিকে ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরী ও শহীদ মিনারের মূল প্রবেশ ফটক থেকে ‘ঈদগাঁও’শব্দটি মুছে ফেলায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে ইসলামাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী নেতা সাইফুল ইসলাম এমইউপি- সাইনবোর্ড থেকে ‘ঈদগাঁও’নাম বাদ দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
অপরদিকে সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হক চৌধুরী রিকুর মতে, আদিকাল থেকে এটি ‘ঈদগাঁও’নামকরণ ছিল। হঠাত্ করে যারা এ নামটি সাইনবোর্ড থেকে মুছে ফেলে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা চালাচ্ছে তাতে আমি মর্মাহত, হতাশ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আবার সাধারণ লোকজনের মতে, এ ধরণের হীন কর্মকান্ড পরিহার করে সুন্দর পথে এগিয়ে আসার আহবান জানান সকলের প্রতি।
You must be logged in to post a comment.