হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই নতুন মেরুকরণ পাচ্ছে দেশের নির্বাচনী রাজনীতি। বিএনপি বলছে আওয়ামীলীগ আবারও একটি একদলীয় নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। তাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও আইনের শাসন কায়েম করতে বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
অন্যদিকে সরকার দলীয় নেতারা বলছেন, আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খল বা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হলে কঠোর হাতে দমন করা হবে। সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি যখন আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার তখন হার্ডলাইন নিয়েছে। সরকার গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যতটুকু ধৈর্য দেখানো প্রয়োজন তা দেখাবে, আবার প্রয়োজনে হার্ডলাইনেও থাকবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব অভিঞ্জতা থেকে এবার যা যা করণীয় তাই করা হবে। বিএনপির আন্দোলন ও ষড়যন্ত্র পরাস্ত করবে সরকার। সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
বিএনপি নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলের নেতারা মনে করছেন, দ্রুতই মুক্তি পাবেন তিনি। তা না হলে খালেদা মুক্তি আন্দোলনে এক দফা দাবি নিয়ে রাজপথে নামবে বিএনপি। এতে হরতাল – অবরোধ গণজমায়েত, মানবপ্রাচীর, বিক্ষোভ সমাবেশ করবে তারা। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সোচ্ছার। নেতা-কর্মীরা দলীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ঐক্যমত পোষন করলেও সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।
উখিয়া-টেকনাফের সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা হলে তারা তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে বলেন, সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং সহিংসতামুক্ত নির্বাচন দেখতে চাই। উখিয়া-টেকনাফে এবার ক্ষমতাসীন দলের ডজন খানেক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় তাঁতী লীগের সভাপতি সাধনা দাস গুপ্তা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে চলছে, তাতে আরও বেগবান করতে হলে জনগণ আগামীতে আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আওয়ামী লীগের আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলমের ছোট ভাই হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকারই আবার দরকার। কারণ এই সরকারই দেশের বিদ্যুত সংকটের সমাধান করে আলোকিত বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নৌকা প্রার্থীর বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমান সরকার দলীয় সাংসদ আব্দুর রহমান বদি বলেছেন, স্বাধীনতার পর উখিয়া-টেকনাফসহ সারা দেশে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তা বিগত কোনো সরকারই করতে পারেনি। এখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে তা শেষ করতে হলে আবারও আওয়ামী লীগকেই ক্ষমতায় বসাতে হবে। আমি দুই দুইবার উখিয়া-টেকনাফ থেকে নৌকার পতাকা উড়িয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিয়েছি। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। পুনরায় নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে প্রত্যাশা করছি।
আওয়ামী লীগের একাধিক কর্মীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন তারা তার পক্ষে কাজ করবেন। উখিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার ভোটারদের সাথে কথা হলে তারা আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে এমপি বদিকেই দেখতে চান। কেন জানতে চাইলে উপস্থিত অধিকাংশ ভোটাররা বলেন, এমপি বদির ভক্ত সাধারণ গরিব মানুষ।বিগত ১০ বছরে তিনি সাধারণ খেটে-খাওয়া অসহায় মানুষের খোঁজ খবর নিয়েছেন। ঈদে-কোরবানসহ প্রায় সময় গরিব মানুষের বাসায় চাউলের বস্তা পাঠিয়ে দিয়েছেন। পরিধেয় বস্ত্র, অসুস্থ মানুষের পাশে থেকে যাবতীয় সেবা পেতে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন। তাই তার মত অন্য কাউকে মিলাতে পারছেন না। যদি বদিকে মনোনয়ন দেয়া না হলে কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা এক কথায় বলেন, এই ভাগ্যবান আসনটি আওয়ামী লীগ হারাবে।
উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোলতান মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী নয়। জনগণ আওয়ামীলীগকে ভোট দেবে না।
You must be logged in to post a comment.